রবিবার ● ২২ এপ্রিল ২০১৮
প্রথম পাতা » গাজিপুর » হলফনামায় তথ্য গোপন করলে প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : নির্বাচন কমিশনার
হলফনামায় তথ্য গোপন করলে প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা : নির্বাচন কমিশনার
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: (১০ বৈশাখ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.৪০মি.) নির্বাচন কমিশন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচনে কোন প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন ও হলফনামায় তথ্য গোপন করলে এবং সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে কোন প্রার্থীর হলফনামায় তথ্য গোপনের কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রিটার্নিং অফিসারের কাছে নেই বলেন তিনি।
আজ ২২ এপ্রিল রবিবার দুপুরে তিনি গাজীপুর জেলা প্রশাসকের ভাওয়াল সম্মেলন কক্ষে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সমন্বয় কমিটির বিশেষ আইন-শৃংখলা প্রধান অতিথি হিসেবে সভায় যোগদান শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে ওইসব কথা বলেন।
এর আগে তিনি ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কে এম আলী আজমের সভাপতিত্বে ওই সমন্বয় সভায় প্রধান অথিতির বক্তব্য রাখেন। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ডঃ দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরের সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, রিটার্নিং অফিসার রকিব উদ্দিন মন্ডল, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সচিব (দায়িত্বপ্রাপ্ত) খ. ম কবিরুল ইসলাম, গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জীব কুমার দেবনাথ, র্যাব-১-এর স্পেশালাইজড কোম্পনির কমান্ডার আব্দুস সালাম প্রমূখ।
নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, আমরা চেষ্টা করছি দেশের প্রতিটি নির্বাচন, সেটা ছোট হোক, বড় হোক, যেন আইনানুগভাবে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।
তিনি বলেন, বিগত দিনে কুমিল্লা সিটি নির্বাচন হয়েছে আমাদের শপথ গ্রহণ করার পরেই। সিটি কর্পোরেশনগুলোর মধ্যে সর্বশেষ রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনও নূন্যতম রংপুর সিটি নির্বাচনের চাইতে যদি ভাল না-ও হয়, এটলিস্ট তার চেয়ে খারাপ হবেনা। এটা আমরা দৃঢ়ভাবে নিশ্চিত করে বলতে পারছি। আমাদের সকলেরই সমন্বিতভাবে প্রচেষ্টা থাকবে যেন আসন্ন গাজীপুর সিটি নির্বাচন আইনানুগ এবং সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠ হয়। যার জন্য এই গাজীপুরবাসী তাকিয়ে আছে।
তিনি জানান, নির্বাচনে ইভিএম মেশিনের ব্যবহার সম্পর্কে এখনো চুড়ান্ত করা হয়নি। খুব সম্ভবত আমরা একটা বা দুইটা ওয়ার্ডে ইভিএম ব্যবহার করার চেষ্টা করবো। আর সীমিত সংখ্যক কেন্দ্রকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার ইচ্ছে আছে। নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রকেই গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ তারিফুজ্জামান জানান, আগামি ১৫ মে গাজীপুর সিটি নির্বাচন, ২৪ এপ্রিল প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ। গাজীপুর সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১লাখ ৩৭হাজার ৭৩৬। এতে পুরুষ ৫লাখ ৬৯হাজার ৯৩৫ এবং ৫লাখ ৬৭হাজার ৮০১। আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৯ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৮৭ এবং সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৮৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গাজীপুর সিটি নির্বাচন : বিএনপিকে সমর্থন জামায়াত প্রার্থীর
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে গিয়ে বিএনপি প্রার্থীকে সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছেন।
মেয়র পদে গাজীপুর মহানগর উন্নয়ন পরিষদের ব্যানারে হওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজীপুর মহানগর জামায়াতের আমির এস এম সানাউল্লাহ ২২ এপ্রিল রবিবার সকালে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন।
পরে বিএনপি প্রার্থীর বাড়ি গিয়ে তাকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানান।
গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ তারিফুজ্জামান বলেন, ২৩ এপ্রিল প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন।
একদিন আগে রবিবার সকালে এস এম সানাউল্লাহ তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এখন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী রয়েছেন আটজন।
জামায়াতে ইসলামীর গাজীপুর মহানগর কমিটির সেক্রেটারি মোঃ খায়রুল হাসান জানান, সকালে সানাউল্লাহ তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
পরে সকাল ১১টায় তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের বাসভবনে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে সমর্থন জানান।
এ সময় তিনি হাসান উদ্দিন সরকারের হাতে একগুচ্ছ ধানের শীষ তুলে দেন।
এ সময় সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা যাতে নির্বাচনে যেতে না পারি সেজন্য আদালতের মাধ্যমে জামায়াতের নিবন্ধনকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ফলে আমরা বাধ্য হয়ে গাজীপুর মহানগর উন্নয়ন পরিষদের নামে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।”
পরে দলের হাই কমান্ডের নির্দেশে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন বলে জানান তিনি।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন গাজীপুর মহানগর জাসায়াতের সেক্রেটারি মো. খায়রুল আনাম, নায়েবে আমির মো. জামাল উদ্দিন, সাংগঠনিক সেক্রেটারি মো. আফজাল হোসাই, মহানগর ইসলামী ছাত্র শিবিরের সভাপতি মিজানুর রহমান, সেক্রেটারি ফখরুল আলম সিফাতসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিট কমিটির নেতারা। এ ব্যাপারে হাসান উদ্দিন সরকার জানান, জামায়াতের সমর্থনে ২০ দলীয় জোটের ঐক্য আরও সুদৃঢ় হলো। ভোটারদের বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনে বিএনপি বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আগামী ১৫ মে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৩ এপ্রিল সোমবার। এরপর শুরু হবে আনুষ্ঠানিক প্রচার।