সোমবার ● ২৩ এপ্রিল ২০১৮
প্রথম পাতা » ঝালকাঠি » শিল্পমন্ত্রীর নামে ছাত্রদল নেতা ও পুলিশসহ ২ লাখ টাকা চাঁদাদাবি
শিল্পমন্ত্রীর নামে ছাত্রদল নেতা ও পুলিশসহ ২ লাখ টাকা চাঁদাদাবি
ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: (১০ বৈশাখ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.১৯মি.) ঝালকাঠিতে শিল্পমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে পুলিশ কর্মকর্তার সহযোগিতায় শহরের ইয়াসিন ভূঁইয়া নামে এক ছাত্রদল নেতা মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিঃ এর জেলা ডিপো ব্যবস্থাপকের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় টাউন পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. বশির উদ্দিনকে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।
জানাযায়, শহরের ডাক্তারপট্টি এলাকার বাসিন্দা সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. ইয়াসিন ভূঁইয়া মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিঃ এর জেলা ডিপো ব্যবস্থাপক মো. মাহবুবুর রহমানের কাছে গত রবিবার সাড়ে ১২টার দিকে মোবাইল ফোনে কল দেয়। ডিপো ব্যবস্থাপক কল গ্রহণ করলে অপরপ্রান্ত থেকে শিল্পমন্ত্রীর লোক পরিচয় দিয়ে তাঁর অবস্থান জানতে চান ইয়াসিন। ডিপো ব্যবস্থাপক বাইরে আছেন জানালে ইয়াসিন রবিবার দুপুরে তাঁর কার্যালয়ে আসার কথা বলেন। রবিবার দুপুরে ১২টায় ইয়াসিন শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মো. বশির উদ্দিন ও এক পুলিশ সদস্যকে নিয়ে একটি ব্লু রঙের একটি প্রাইভেট কারে মেঘনা ডিপোর গেইটের মধ্যে যায়। ডিপো ব্যবস্থাপকের কক্ষে ঢুকে বসেন তিনজন। ডিপো ব্যবস্থাপককে একটি শপিংব্যাগে উপহার সামগ্রী তুলে দেন ইয়াসিন। এই উপহার শিল্পমন্ত্রী তাঁর জন্য পাঠিয়েছেন বলে জানানো হয়। এসময় মুঠোফোনে ইয়াসিন একজনের কাছে কল দিয়ে ডিপো ব্যবস্থাপককে শিল্পমন্ত্রী কথা বলবেন বলে ধরিয়ে দেন। ফোনে অপরপ্রান্ত থেকে বলে, ও.. যেটা বলে সেটা দিয়েদেন। এর পর ফোন কেটে দিলে ইয়াসিন শিল্পমন্ত্রীর কথা বলে ডিপো ব্যবস্থাপকের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন।
এ ব্যাপারে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মো. বশির উদ্দিন বলেন, আমাকে ভুল বুঝিয়ে ডিপোতে নিয়ে যায় ইয়াসিন ভূঁইয়া। আমি শুধু ডিপো ব্যবস্থাপকের কক্ষে ঢুকে বসেছিলাম, কোন কথা বলিনি। দুপুরের পর বিষয়টি ঝালকাঠি শহরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে ইয়াসিন ভূঁইয়া গাঢাকা দিয়েছেন। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মো. জোবায়েদুর রহমান বলেন, এঘটনায় মামলা হয়েছে মামলা নম্বর ১৬ তারিখ ২২ এপ্রিল ইয়াসিন ভূঁইয়াসহ অজ্ঞাত নামা একজনকে আসামি করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যহত আছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আপাতত পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্ব থেকে এস আই বশিরকে অব্যহতি করা হয়েছে।
ডিপো ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মো. মাহবুবর রহমান বলেন, আমাকে ইয়াসিন ভূঁইয়া প্রথম দিন ফোন করে জানতে চাইছে আপনি ডিপোতে আছেন,আমি বাহিরে বলার পর ফোন টেকে দেয়। এরপর ঘটনার দিন ফোন করে বলে আপনি আছে অফিসে, আমি বলছি হ্যা আছি, সে বলে আসচ্ছা আসতেছি। কিছুক্ষন পর আমার ডিপোতে একটি নেভিব্লু কারে করে ভিতরে ডুকতেছে তা আমি সিসি ক্যামেরায় দেখতেছি। প্রথমে ইয়াসিন হাতে একটি ব্যাগ তারপর পুলিশ দুইজন। আমার কক্ষে আসেন দুইজন সামনে চেয়ারে বসেন একজন পুলিশ আর ইয়াসিন। সে একটি ব্যাগ থেকে ২টি পারফিউম,দুইটি বডি স্প্রে, টুথ পেস্ট,ব্রাশ আমাকে শিল্পমন্ত্রী পাঠিয়েছেন বলার পরে আমার একটু সন্দেহ হয়। তারপর ইয়াসিন আমাকে অফিসের বাইরে ব্যালকুনিতে ইশারা করে, আমাকে বাহিরের রুমে নিয়ে বলে, দুইলাখ টাকা দিতে হবে। আমি তার কথায় শুনে সদর ওসি সাহেবকে ফোন করি। সাথে সাথে এএসআই মিঠুনকে পাঠায়। মিঠুন এসে দেখে এখানে পুলিশ আছে। পুলিশকে খবর দিলে ইয়াসিন সটকে পড়ে। তবে ঐ দুই পুলিশ সদস্য এ ঘটনার সাথে জরিত।