রবিবার ● ৬ মে ২০১৮
প্রথম পাতা » অপরাধ » রাঙ্গুনিয়ায় যুবলীগ নেতা খুন : আটক-১
রাঙ্গুনিয়ায় যুবলীগ নেতা খুন : আটক-১
রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি :: (২৩ বৈশাখ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.০৬মি.) পরকীয়ার জেরে খুন হয় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি আবুল হাশেম ওরফে বাচা (৪৫)। জুসের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে পরে গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা করা হয় । হত্যার দায়ে জিফু বেগম (৪০) নামে এক নারীকে গত ৫ মে শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। রবিবার ৬ মে বিকেলে তাঁকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীর জন্য আদালতে নেয়া হয়। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠান। হত্যাকান্ডের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে দায় স্বীকার করে তিন সন্তানের জননী জিফু রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ইছাখালী জাকিরাবাদ এলাকার আইয়ুব আলীর স্ত্রী। জিফু আবুল হাশেম বাচার দূর সম্পর্কীয় আত্মীয় হন। জানা যায়, গত কয়েক বছর আগে তাদের সাথে সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে দুইজনের সাথে শারিরীক সম্পর্ক গড়ায়। জিফুকে আবুল হাশেম বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে দেয়ার জন্য সহায়তা করেন। এই সুযোগে কৌশলে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও বেসরকারি ব্যাংকের খালি চেক নেন আবুল হাশেম । ইতিমধ্যে জিফুর সাথে একাধিকবার শারিরীক সম্পর্কের অন্তরঙ্গ ছবি মোবাইলে ধারণ করে নেন আবুল হাশেম। জিফুর সাথে আবুল কাশেম বার বার শারিরীক মেলামেশার জন্য চাপ দিলে জিফু পরবর্তীতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তাঁকে খালি স্ট্যাম্প ও চেকের কথা মনে করিয়ে দিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং করে অনৈতিক সম্পর্কে করতে বিরক্ত করে। অতিষ্ঠ হয়ে জিফু মনে মনে ফন্দি আঁটে কিভাবে আবুল হাশেমকে মেরে ফেলা যায়। বৃহষ্পতিবার (৩ মে) বিকাল ৪ টার দিকে জিফু আবুল হাশেমের সাথে দেখা করতে ফোন করেন। আবুল হাশেম জানান তাঁর বাড়িতে কেউ নেই। জিফুকে তাঁর বাড়িতে যেতে বলে। সন্ধ্যার দিকে জিফু বাড়িতে গেলে কথাবার্তার এক পর্যায়ে হাশেমকে পানি আনতে বলে, এই ফাঁকে জিফু ঘুমের ওষুধের গুড়ো ম্যাংগো জুসে মিশিয়ে নেন। পরে গ্লাসে জুস ঢেলে দিয়ে হাশেমকে খাওয়ান। দুজনে কথা বলতে বলতে হাশেম বিছানায় অচেতন হয়ে পড়েন। পরে জিফু কক্ষের কাপড় হাশেমের শরীরে রেখে আগুন ধরিয়ে দেন। পাশের কক্ষ থেকে গ্যাস সিলিন্ডার এনে ক্যাপ খুলে দিয়ে গ্যাস ছেড়ে দেন। তড়িঘড়ি রাত ৮ টার বাড়ির শোবার কক্ষে ছিটকিনি ও ফটকের তালা ঝুলিয়ে চলে যান। আসার সময় ঘরে পাওয়া ৪ টি মুঠোফোন নিয়ে আসেন। পরদিন দুপুরে পোমরা ইউনিয়নের শান্তির হাট খাঁ মসজিদে কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইতে মসজিদে গেলে মসজিদের পুকুরে মুঠোফোনগুলো ফেলে দিয়ে চলে আসেন। উপজেলা যুবলীগ সভাপতি শামসুদ্দোহা সিকদার বলেন, “ বাচা দলের ত্যাগী নেতা ছিলেন। তার অপরাধের জন্য আইনের মাধ্যমে তার শাস্তি হওয়া উচিত ছিল। তাঁকে নৃশংসভাবে খুন করা উচিত হয়নি।রাঙ্গুনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইমতিয়াজ মো. আহসানুল কাদের ভূঞা বলেন, “মোবাইল ট্র্যাকিং করে অভিযুক্ত নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পোমরা খাঁ মসজিদের পুকুর থেকে মোবাইল উদ্ধার করা হয়। জিফু বেগম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যাকান্ডের আদ্যপান্ত বর্ণনা দেন।”শুক্রবার (৪ মে) সকালে উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আবুল হাশেম ওরফে বাচার শোবার কক্ষ থেকে পোড়া দেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর থেকে পুলিশ ও সিআইডি ঘটনার তদন্তে মাঠে নামে।