সোমবার ● ৭ মে ২০১৮
প্রথম পাতা » কৃষি » চাটমোহরের চাষীরা বোরো ধান ঘরে তোলা নিয়ে শংকায়
চাটমোহরের চাষীরা বোরো ধান ঘরে তোলা নিয়ে শংকায়
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি :: (২৪ বৈশাখ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.২০মি.) পাবনার চাটমোহরের চাষীরা বোরো ধান ঘরে তোলা নিয়ে শংকায় দিন কাটাচ্ছেন। বেশ কিছু দিন যাবত প্রায়ই ঝড় বৃষ্টি হওয়ায় তাদের এ শংকা। ফলন বিপর্যয়ের আশংকা থাকলেও ইতোমধ্যে অপেক্ষাকৃত নিচু জমির আধাপাকা ধান কাটা শুরু করেছেন কৃষক। সরেজমিন চাটমোহরের বোয়াইলমারী এলাকার খলিশাগাড়ি বিলে চোখে পরে এমন দৃশ্য। এসময় কৃষকেরা তাদের শংকার কথা জানান।
উপজেলার ধানকুনিয়া গ্রামের বোরো ধান চাষী রেজাউল করিম জানান, ৬ বিঘা নিচু জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন তিনি। বৃষ্টিতে জমির মধ্যে প্রায় এক ফুট পানি জমে গেছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে ধান ডুবে যেতে পারে এ আশংকায় আধা পাকা ধান কেটে ফেলছেন তিনি। একই গ্রামের লিটন মন্ডল জানান, চলতি মৌসুমে দশ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন তিনি। এবছর চারার দাম বেশি থাকায় প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় চার হাজার টাকার চারা লেগেছে। জমি চাষ মই বাবদ খরচ হয়েছে এক হাজার টাকা। রোপনে শ্রমিক খরচ হয়েছে ১ হাজার ৭শ টাকা। টিএসপি পটাশ ইউরিয়া সার বাবদ খরচ হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৪’শ টাকা। আগাছা পরিষ্কারে প্রায় ১ হাজার ৫শ টাকা খরচ হয়েছে। বালাই নাশক বাবদ প্রায় ৩শ টাকা এবং ধান কাটতে বিঘা প্রতি শ্রমিককে দিতে হচ্ছে প্রায় ৩ হাজার ১শ টাকা। বাড়িতে ধান নিয়ে যেতে ৬’শ টাকার মত পরিবহন খরচ হচ্ছে। সব মিলিয়ে বিঘা প্রতি খরচ পরছে প্রায় ১৩ হাজার ৬শ টাকার মত। মাড়াই বাবদ মন প্রতি ২ কেজি করে ধান দিতে হচ্ছে। প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ২০ মন হারে ধান হচ্ছে। জমিতে পানি প্রয়োগ বাবদ ইঞ্জিন মালিককে চার ভাগের এক ভাগ ধান দিয়ে আসতে হচ্ছে জমি থেকেই। এক বিঘা জমি আবাদ করে কৃষক ১৪ মনের মত ধান পাচ্ছেন যার বর্তমান বাজার মূল্য ১২ হাজার টাকার মতো। প্রতি বিঘা জমিতে দেড় থেকে দুই হাজার টাকার খড় পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বোরো আবাদ করে কৃষকের কোন লাভ থাকছে না। উপরন্ত যারা প্রতি বিঘা জমি ৬ থেকে ৭ হাজার টাকায় লীজ নিয়ে বোরো আবাদ করেছেন তাদের বিঘা প্রতি লোকসান যাচ্ছে এ ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। এ ছাড়া মোতালেব হোসেনসহ আরো কয়েকজন কৃষকেরর সাথে কথা বলে জানা গেছে চারার দাম বেশি ও ধান ফোলার সময় শিলা বৃষ্টি হওয়ায় বোরো আবাদ করে এ বছর তারা লাভ করতে পারছেন না।
চাটমোহরের সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, চলতি মৌসুমে চাটমোহরে প্রায় ৯ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্য মাত্রা ছিল ৮ হাজার ৪শ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮শ হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত বোরো আবাদ হয়েছে। ধানের ফলন ও ভাল হচ্ছে। প্রাকৃতিক দূযোগ না হলে কৃষক লাভবান হবে আশা করছি।