শুক্রবার ● ১৮ মে ২০১৮
প্রথম পাতা » অপরাধ » ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হত্যা করা হয়েছে প্রবাসীর স্ত্রী ও মাকে আদালতে জবানবন্দি
ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হত্যা করা হয়েছে প্রবাসীর স্ত্রী ও মাকে আদালতে জবানবন্দি
নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :: (৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বেলা ১২.১৭মি.) ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে হত্যা করা হয়েছে এক যুক্তরাজ্য প্রবাসীর স্ত্রী ও মাকে। এ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া দু’জন বৃহস্পতিবার আদালতে জবানবন্দিতে এমনটি জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ মে) দুপুর ১২টার দিকে হবিগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শম্পা জাহানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামি শুভ রহমান ও আবু তালেব। আদালত পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) ওহিদুর রহমান জানান, আসামি শুভ রহমান ও আবু তালেবকে দুপুরে আদালতে হাজির করা হলে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। তারা আদালতকে জানায়, দীর্ঘদিন ধরে তারা লন্ডনপ্রবাসী আখলাক চৌধুরী গুলজারের স্ত্রী রুমী বেগমের ওপর নজর রাখছিল। প্রায়ই তারা রুমী বেগমের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে তাকে উত্ত্যক্ত করতো। গত ১৩ মে দিনগত রাত ১২টার দিকে তারা রুমী বেগমের শোবার ঘরে প্রবেশ করে। এসময় রুমিকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় তারা। বিষয়টি টের পেয়ে রুমী বেগম চিৎকার শুরু করলে তার শাশুড়ি মালা বেগম ছুটে আসেন। এসময় ক্ষিপ্ত হয়ে তারা (শুভ রহমান ও আবু তালেব) রুমী বেগম ও মালা বেগমকে কুপিয়ে হত্যা করে। বিকাল ৫টায় প্রেস ব্রিফিং করে একই তথ্য জানান পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা। পুলিশ জানায়, ঘটনার পর দিন সন্দেহভাজন হিসেবে পাঁচ জনকে আটক করে পুলিশ। তারা হলো : নবীগঞ্জ উপজেলার সাদুল্লাপুর গ্রামের ক্বারী আব্দুস সালাম, তার ছেলে সাহিদুর রহমান, একই গ্রামের শুভ রহমান, আবু তালেব ও রিপন সূত্রধর। এর মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আব্দুস সালাম, সাহিদুর রহমান ও রিপন সূত্রধরকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। আর শুভ রহমান ও আবু তালেবকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে রাখে। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাদের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি শেষে আদালতের নির্দেশে আবার কারাগারে পাঠানো হয়। গত ১৩ মে দিনগত রাতে নবীগঞ্জের কুর্শি ইউনিয়নের সাদলাপুর গ্রাম থেকে রুমী বেগম ও মালা বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর ১৫ মে এ ঘটনায় রুমি বেগমের ভাই বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এদিকে, মা ও স্ত্রী খুনের খবর পেয়ে লন্ডন থেকে দেশে ছুটে এসেছেন আখলাক চৌধুরী গুলজার। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে আমার মা ও স্ত্রীকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
স্থানীয়রা জানান, সাদলাপুর গ্রামের মৃত রাজা মিয়ার ছেলে আখলাক মিয়া গুলজার দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে বসবাস করছেন। দুই বছর আগে তিনি দেশে এসে নিজ গ্রামের কুয়েতপ্রবাসী সুজন চৌধুরীর মেয়ে রুমি বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর গুলজার ফের লন্ডন ফিরে গেলে তার বাড়িতে মা ও স্ত্রী থাকতেন।