শুক্রবার ● ১৮ মে ২০১৮
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » বাগেরহাটে রমজানের শুরুতেই দ্রব্য মূল্যের উর্দ্ধগতি: দিশেহারা সাধারন মানুষ
বাগেরহাটে রমজানের শুরুতেই দ্রব্য মূল্যের উর্দ্ধগতি: দিশেহারা সাধারন মানুষ
বাগেরহাট অফিস:: (৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৪৮ মি.) বাগেরহাটে পবিত্র রমজান মাসের শুরুতেই নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যে উর্দ্ধগতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সাধারন মানুষ। রমজানের আগমনী বার্তাতেই মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে হু হু করে বেড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার দর। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পেয়াজ, রসুন, বেগুন, চিনিসহ প্রায় সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে জেলার খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ। যদিও বাজার নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসন ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা বলছেন সরকারের বেধে দেয়া মূল্য তালিকার বাইরে গিয়ে অধিক মুনাফার চেষ্টা করলে নেয়া হবে আইনি ব্যবস্থা। তবে বাজার নিয়স্ত্রনে প্রশাসনের আইনের প্রয়োগ কতটা বাস্তবায়ন হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
আজ ১৮ মে শুক্রবার সরেজমিনে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বাজারে ঘুড়ে দেখা গেছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যের লাগামছাড়া বৃদ্ধিতে হতাশ ক্রেতারা। মূলত প্রতিবছর রমজান মাস আসলেই কিছু মুনাফাখোর অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্য মজুদ করে অধিক মুনাফার আশায় দ্রব্য মূল্যের দাম বাড়ায়। এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা সরকারের বেধে দেয়া বাজার মূল্যের কোন তোয়াক্কা করে না। এবারও পবিত্র রমজানের শুরুতেই এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য, সবজি, মাছ মাংসসহ চিড়া মুড়ির দাম বাড়িয়েছে।
বাগেরহাট মোরেলগঞ্জে বাজার ঘুড়ে দেখা যায় গত সপ্তাহে আগে যে পেয়াজের দাম ছিল কেজি প্রতি ৩২ টাকা তা এখন বেড়ে দাড়িয়েছে ৪৮ টাকায়, রসুন প্রতি কেজি ছিল ৫৪ টাকা এখন ৭০ টাকা, বেগুন ছিল ৪০টাকা তা এখন প্রতি কেজি ৬০ টাকা, শসা ছিল ৪০ টাকা তা এখন ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ছিল ৪০ টাকা তা এখন প্রতি কেজি ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহে যে চিনির দাম ছিল ৪৮ টাকা তা এখন কেজি প্রতি ১০ কাটা বেড়ে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে মুড়ির দামও ৮০ টাকার মুড়ি এখন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকা দরে। বেড়েছে মাংসের দামও সরকারের বেধে দেয়া ৪৪০ টাকার গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা দরে। এছাড়া দাম বেড়েছে মাছের বাজারেও বিভিন্ন প্রজাতির মাছে দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা। এর প্রভাব জেলার উপজেলার বাজার গুলোতে ও পড়েছে।
বাজার করতে আসা ক্রেতা সুমন খান বলেন, রমজানের শুরুতেই নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ায় আমরা সাধারন মানুষ বিপাকে আছি। বাজারে আসলাম দেখি মাছের বাজার গরম, পাইকারি ব্যাবসায়ীরা মজুদ শুরু করেছে আমরা বিপদে আছি।
চাকুরীজীবী মো. সহিদুল ইসলাম সহিদ বলেন, প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেশী, আমরা যারা সীমিত বেতনে চাকরি করি তাদের মাস চালানো কষ্ট হবে এবার। পেয়াজ ও রসুন দাম বেশী, মাংসের অগ্নি মূল্যে বাজারের মূল্য অস্বাভাবিক।
সবজি বিক্রেতা আব্দুল আজিজ বলেন, ক্ষেতে মাল কম তাই প্রায় সব সবজিতেই কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। মাংস বিক্রেতা মো. বাচ্চু শেখ বলেন, বাজারে গরুর যে চাহিদা সে অনুযায়ী গরু পাওয়া যাচ্ছে না। আবার ইন্ডিয়ান গরুও আসে না। তাই কেজি প্রতি দাম একটু বেড়েছে।
জেলা বাজার কর্মকর্তা মো: সুজাত হোসেন খান বলেন, বাজারে দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশী দামে বিক্রি করলে কোন রকম ছাড় দেয়া হবেনা। মূল্য তালিকার বাইরে বিক্রি করলে বাজার নিয়ন্ত্রন আইনে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্টির সভাপতি মোঃ লিয়াকত হোসেন লিটন বলেন, আমরা বাজার তদারকি শুরু করেছি। নির্ধারিত মূল্যের বেশী বিক্রি না করার ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের সর্তক করেছি। এর বাইরে কেউ বিক্রি করলে তার দায় ভার তাকেই নিতে হবে।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, বাজার মূল্য তদারকি করা হচ্ছে। বাজার দরের থেকে বেশী দামে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য যাতে বিক্রি না হয় তা নিশ্চিত করা হবে। কোন ব্যবসায়ী যতি বেশী দামে পণ্য বিক্রি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।