শুক্রবার ● ১৮ মে ২০১৮
প্রথম পাতা » অপরাধ » আদম ব্যবসায়ী সিজিল আহমদ সাহানকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ
আদম ব্যবসায়ী সিজিল আহমদ সাহানকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: (৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.০৪মি.) সুনামগঞ্জের আদালতের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী সিলেটের বিশ্বনাথের আদম ব্যবসায়ী সিজিল আহমদ সাহানকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। সে সিলেট জেলার বিশ্বনাথ থানার,দশঘর ইউনিয়নের ,চান্দভরাং গ্রামের আনজব আলীর ছেলে ও যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামান সেবুলের ছোট ভাই সিজিল আহমেদ (সাহান) একজন প্রতারক আদম ব্যবসায়ী ও দালাল চক্রের সদস্য বলে জানান, স্টুডেন্ট ভিসায় বিদেশগামী প্রতারিত ছাত্ররা।
জানা যায়, যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামান সেবুলের ছোট ভাই পরিচয়ে সিজিল আহমেদ (সাহান) সিলেটের কানিজ প্লাজা শপিংয়ের চতুর্থ তলায় এক্টেপ গ্লোবাল টাচ্ নামে ট্রাভেলস খুলে বিভিন্ন মাধ্যমে জাল ভিসা দিয়ে মানুষের কাছ থেকে প্রায় চল্লিশ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামান সেবুল টাকা দেওয়ার কথা বলে এখনও প্রতারিত লোকজনের টাকা ফেরত দেয়নি। ওয়ারেনটভূক্ত আসামী সাহান সম্প্রতি সুনামগঞ্জের এক যুবকের সাথে প্রতারনা করে চরমভাবে ফেঁসে যায়। অবাক করার বিষয় হলো ও কেউ জানে না সিজিল আহমেদ (সাহান) কোন সিম ব্যবহার করে।
আরও জানা যায়, পলাতক ঐ আসামি নাকি কোরিয়াতে চলে গেছে আবার কেউ বলেন ভারতে কিংবা ঢাকায় আত্মগোপন করে আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, একজন এডিশনাল এসপি’র কাছ থেকে জানা যায়, এই প্রতারক খুব চতুর। তবে একদিন না একদিন আইনের হাতে আজ না হয় কাল তাকে ধরা পরতেই হবে। পলাতক আসামী সিজিল আহমেদ (সাহান) সিলেট রোটারি ক্লাবের সদস্য। বিশেষ করে ছান্দভরাং গ্রামের ছোট বড় সবাইর কাছে বিনীত অনুরুধ গ্রামের সম্মান রক্ষার স্বার্থে এই প্রতারককে দেখা মাত্র যেন তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এমন আহবান জানিয়েছেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই জন ছাত্রী। তবে ছাত্র ছাত্রীদেরকে স্টুডেন্ট ভিসা দিয়ে বিদেশে পাঠানোর নামে অনেকের সাথে প্রতারনা করে তাদেরকে পথে বসিয়ে দিয়েছে ঐ প্রতারক সাহান ।
গত ৫/১২/২০১৬ইং সুনামগঞ্জের আমলগ্রহনকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিগোসিয়েল ইন্সট্রুমেন্ট এ্যাক্টের ১৩৮ ধারা মতে ঐ প্রতারকের বিরুদ্ধে সিআর ১৬৯/২০১৬ ও সিআর ১৭০/২০১৬ নং মামলা দায়ের করেছেন জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের জয়সিদ্ধি গ্রামের মো. আব্দুল কাহারের পুত্র মো. আবু সুফিয়ান।
মামলার বিবরণে প্রকাশ,প্রতারক সিজিল আহমেদ (সাহান) বাদী আবু সুফিয়ানকে ইউক্রেন রাষ্ট্রে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোট ৯ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা গ্রহন করে। পরবর্তীতে বাদীকে বিদেশ পাঠাতে ব্যর্থ হয় ঐ প্রতারক।
পরে একপর্যায়ে বাদীর বাড়ীতে উপস্থিত হয়ে তাকে ব্র্যাক ব্যাংক এর এক্টেপ গ্লোবাল টাচ্ নামীয় ৬৩০৩২০২৩২৯১১৩০০১ নং হিসাব এর বিপরীতে চেক নং সিপিএ-৪৩৬৪২৬ এর মাধ্যমে ৪,৪৬,৫০০ টাকার একটি চেক,৩৬৫০০ টাকার একটি এবং ৪,৮৫,০০০ টাকার আরেকটি চেক বাদীর নামে প্রদান করে। বাদী চেক ৩টির টাকা নগদায়নের জন্য ডাচবাংলা ব্যাংক সুনামগঞ্জ শাখায় গত ১৬/১০/২০১৬ইং তারিখে জমা দিলে গত ১৮/১০/২০১৬ইং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আসামীর একাউন্টে অপর্যাপ্ত তহবিল উল্লেখ করত: আসামীর প্রদানকৃত চেক ২টি ডিজঅনার করেন।
বাদীপক্ষে আদালতে মামলা ২টি পরিচালনা করেন এডভোকেট মতিউর রহমান পীর। মামলা দুটির রায়ে বিজ্ঞ আদালত,পলাতক আসামী সিজিল আহমেদ (সাহান) কে ৬ মাস করে এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। দন্ডাদেশ এর সাজা পরোয়ানা সংশ্লিষ্ট সিলেট ও বিশ্বনাথ থানায় প্রেরণ করা হয়েছে। এরপরও ঐ প্রতারক কে গ্রেফতার করতে পারছেনা পুলিশ।
তবে বিশ্বনাথ থানার ওসি মো. সামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী যেই হউক না কেন আমরা তাকে গ্রেফতার করবই।