শনিবার ● ১৯ মে ২০১৮
প্রথম পাতা » করোনা আপডেট » গণপূর্ত ও স্বাস্থ্য বিভাগের মধ্যে জটিলতায় বাগেরহাট সদর হাসপাতালের নতুন ভবনটি চালু হচ্ছেনা
গণপূর্ত ও স্বাস্থ্য বিভাগের মধ্যে জটিলতায় বাগেরহাট সদর হাসপাতালের নতুন ভবনটি চালু হচ্ছেনা
বাগেরহাট অফিস :: (৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩.০৭মি.)দুই বিভাগের পারস্পরিক অনাস্থার কারণে চালু হচ্ছে না বাগেরহাট সদর হাসপাতালের নবনির্মিত ১৫০ শয্যার ভবনটি। ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে গত জানুয়ারিতে। কিন্তু নতুন ও পুরনো ভবনকে যুক্তকারী একটি করিডোর নির্মাণ না হওয়ায় গণপূর্ত বিভাগের কাছ থেকে বুঝে নিতে রাজি হচ্ছে না স্বাস্থ্য বিভাগ। নতুন ভবনটি চালু হলে পুরনো ১০০ শয্যা হাসপাতালে শয্যা ও চিকিৎসক সংকটের কারণে যে ভোগান্তি, তা থেকে বাগেরহাটবাসী রেহাই পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাগেরহাট জেলার প্রায় ১৭ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার কেন্দ্রস্থল সদর হাসপাতাল। ১৯৯৭ সালে হাসপাতালটি ৫০ থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত হয়। ২০১৩ সালে এটিকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করতে ১৫০ শয্যাবিশিষ্ট ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা রাখার কথা রয়েছে। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ২৬ কোটি টাকা। গত বছর ছয়তলা ভবনটির মূল কাজ শেষ হলেও ভেতরের আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হয়েছে গত জানুয়ারিতে। এ ভবনে থাকবে আইসিইউ বিভাগ, সিটিস্ক্যান, বহির্বিভাগ, নিজস্ব বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থাসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। এছাড়া একটি লিফটের ব্যবস্থাও রয়েছে।
কিন্তু গণপূর্ত বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের মধ্যে আস্থাহীনতার জটিলতায় ভবনটি হস্তান্তর হচ্ছে না। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সতীনাথ বসাক বলেন, প্রকল্পের কাজ আমরা শেষ করেছি। এটি ব্যবহারের জন্য এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। গত ফেব্রুয়ারিতেই আমরা স্বাস্থ্য বিভাগকে বুঝে নিতে পত্র দিয়েছি। কিন্তু তারা বুঝে নিতে চাচ্ছে না।
ভবন বুঝে না নেয়ার কারণ জানতে চাইলে বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডা. অরুণ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, পুরনো ভবনের সঙ্গে নতুন ভবনের লিংক করিডোর না থাকার কারণে আমরা বুঝে নিচ্ছি না। দ্রুত এ কাজ শেষ করার জন্য নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তবে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সতীনাথ বসাকের দাবি, করিডোরটি নির্মাণের জন্য দুবার দরপত্র আহ্বান করেও কোনো ঠিকাদার পাওয়া যায়নি। করিডোরটি না থাকলেও আসলে স্বাস্থ্যসেবা দিতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। হাসপাতাল কর্তৃপ অযৌক্তিকভাবে ভবনটি বুঝে নিচ্ছে না। এভাবে পড়ে থাকলে সরকারি সম্পদ নষ্ট হতে পারে।
অবশ্য নতুন ভবনটি চালু করার গুরুত্বের কথা স্বীকার করেছেন সিভিল সার্জন। তিনি বলেন, নতুন ভবন নির্মাণ শেষ হলে জনবল কয়েক গুণ বাড়বে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ অন্যান্য চিকিৎসকের সংখ্যাও বাড়বে। নতুন ভবনে কার্ডিওলজি বিভাগও থাকতে পারে। সব মিলিয়ে মানুষ ২৪ ঘণ্টা সেবা পাবে। সেবার মানও বাড়বে।
হাসপাতালের বর্তমান সংকট সম্পর্কে আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মোশারফ হোসেন বলেন, এখানে চিকিৎসকের ২৪টি পদের বিপরীতে আছেন মাত্র ১৩ জন। এর মধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংকটই বেশি। এছাড়া টেকনিশিয়ানের অভাবে অনেক যন্ত্রপাতিও চালানো যায় না। অথচ ১০০ শয্যার বিপরীতে দৈনিক গড়ে ১৫০ জন রোগী ভর্তি থাকে। অতিরিক্ত ভর্তি রোগীদের আমরা খাবারও দিতে পারি না।