রবিবার ● ২০ মে ২০১৮
প্রথম পাতা » অপরাধ » ঝালকাঠিতে গৃহবধূ সীমার হত্যার নাটের গুরু সবুজ গ্রেফতার
ঝালকাঠিতে গৃহবধূ সীমার হত্যার নাটের গুরু সবুজ গ্রেফতার
ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: (৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১০.৫৭মি.) অবশেষে ঝালকাঠির রাজাপুরে চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ সীমা হত্যা মামলার পলাতক আসামি মো. সবুজ খন্দকার (৪৯) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলার এক বছর পরে এজাহারের দুই নম্বর আসামি সবুজ খন্দকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার ১৯ মে বিকেলে রাজাপুর থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাগেরহাট সদর থানা পুলিশের সহায়তায় নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সবুজ খন্দকারকে শনিবার রাতেই তাকে রাজাপুর থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
রাজাপুর থানার ওসি মো. শামসুল আরেফিন জানান, আসামিকে বাগেরহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সবুজসহ আসামিরা ওই গৃহবধূর লাশ ৫ টুকরে করে জাঙ্গালিয়া নদীতে ফেলে ঘুমের কথা পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। তাকে ৭দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে হাজির করলে আদালতে লাশ ঘুমের জন্য টুকরো করে নদীতে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বলে তিনি জানান।
গৃহবধূ সীমা হত্যার পরেই এ মামলার প্রধান আসামি সীমার স্বামী মিজান খন্দকারকে বিদেশে যাওয়ার পথে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত মিজান খন্দকার ও সবুজ খন্দকার আপন ভাই। তাদের বাড়ি উপজেলার বাঘড়ি বাঁশতলা এলাকায়। তারা ওই এলাকার কাশেম খন্দকারের ছেলে।
জানা গেছে, মোবাইল ফোনে প্রেমের মাধ্যমে ৩ বছর পূর্বে উপজেলার বাশতলা গ্রামের কাসেম খন্দকারের ছেলে প্রবাসী মিজান খন্দকারের সাথে পিরোজপুরের খামকাটা গ্রামের মৃত আমজেদ হোসেনের মেয়ে সীমা আক্তারের বিয়ে হয়। সীমা মিজানের দ্বিতীয় স্ত্রী। ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ রাজাপুরে আলাদা বাসা ভাড়া করা হয়েছে বলে সিমাকে তার বাবার বাড়ি পিরোজপুর থেকে রাজাপুরে নিয়ে আসে মিজানের বন্ধু সাউথপুর গ্রামের এনায়েত গোমস্তার বাড়িতে সীমাকে নিয়ে ওঠেন স্বামি মিজান।
গত ৩০ মার্চ সীমা মুঠোফোনে তার ছোট ভাই বাদশাকে জানায়, সে বিপদের মধ্যে রয়েছে। এরপর সীমার আর কোন খবর পায়নি সীমার পরিবার। পরে ওই রাতেই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর অসুস্থ্য বলে প্রবাসী মিজান তার ভগ্নীপতি মিজানের অটোরিক্সায় করে মিজানের গ্রামের বাড়ি বাসতলায় লাশ নিয়ে এসে লাশ বাড়িতে রেখে মিজান বিদেশে যাওয়ার জন্য ঢাকা চলে যায় এবং মিজানের ভাই সবুজ খন্দকারসহ আসামিরা সীমার লাশ একদিন রান্না ঘরে রেখে ওইদিন রাতে লাশ টুকরো টুকরো করে বস্তায় ভর্তি করে নদীতে ফেলে দেয়। পরদিন এনায়েত গোমস্তা রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে তাদের না পেয়ে খোজ নিয়ে জানেন মিজান তার স্ত্রী সীমাকে খুন করে পালিয়ে বিদেশ যাচ্ছেন, সে অনুযায়ী এনায়েত ঢাকায় গিয়ে ০১ এপ্রিল মিজানকে ধরে মতিঝিল থানায় সোপর্দ করে এবং ঢাকার মতিঝিল থানা পুলিশের কাছে মিজান সীমাকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে। পরে নিহত সীমার বড় ভাই মাজেদুর ইসলাম বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামি করে ২ এপ্রিল রাজাপুর থানায় হত্যা মামলা (নং-১) দায়ের করেন। মামলায় স্বামী মিজান খন্দকার, তার ভাই সবুজ খন্দকার, বোন শাহনাজ বেগম ও তার ভগ্নীপতি মিজান হাওলাদারকে আসামি করা হলেও এনায়েতকে আসামি করা হয়নি।