সোমবার ● ২১ মে ২০১৮
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে অবরোধের ৯ দিন: ১৩ দফা দাবীতে কঠোর কর্মসূচি
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে অবরোধের ৯ দিন: ১৩ দফা দাবীতে কঠোর কর্মসূচি
পার্বতীপুর প্রতিনিধি :: (৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.৩৩মি.) টানা ৯ দিন কর্মবিরতি পালনের পরও খনি কর্তৃপক্ষ তাদের ১৩ দাবী মেনে নেয়ার কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির আন্দোলনরত শ্রমিক-কর্মচারীরা কাল মঙ্গলবার ২২ মে সকাল থেকে খনি অবরোধের কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম আজ ২১ মে সোমবার বেলা ১টায় খনি গেটে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে এ অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আজ সোমবার রাত ৮টার মধ্যে আমাদের ন্যায়সঙ্গত ১৩ দফা দাবীর ব্যাপারে খনি কর্তৃপক্ষ যদি কোন ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণ না করেন তাহলে মঙ্গলবার সকাল থেকে গোটা খনি এলাকা অবরোধ করা হবে। কর্মসূচি চলাকালে কোন কর্মকর্তাকে খনির বাইরে থেকে ভেতরে এবং ভেতর থেকে বাইরে যেতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, শুরু থেকে আমরা আমাদের ১৩ দফা দাবী নিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছিলাম। এসব দাবীর অধিকাংশ ২০১৭ সালে আগষ্ট মাসে সম্পাদিত ত্রীপক্ষীয় চুক্তির অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৫ মে মঙ্গলবার সকাল পোনে ৯টায় খনির আবাসিক গেটের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে খনি কর্মকর্তারা পরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের ওপর হামলা করে। হামলায় ৮ শ্রমিক মারাত্মকভাবে আহত হন। এদের অনেকে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দিনের আলোয় প্রত্যক্ষদর্শী লোকজনের সামনে শ্রমিকদের ওপর হামলা চালানোর পরে সমস্ত দায়ভার শ্রমিকদের ওপর চাপানোর জন্য কর্মকর্তারা গত ১৭ মে এক সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। সেখানে এঘটনার জন্য শ্রমিকদের দায়ী করা হয়। এর প্রতিবাদে গত ১৯ মে সংবাদ সম্মেলন ডেকে আমরা কর্মকর্তাদের মিথ্যাচারের সাক্ষ্য প্রমাণ তুলে ধরি। শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি আরো বলেন, আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। স্থানীয় এমপি ও সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমানের উপস্থিতি ছাড়া শ্রমিকরা কোন সমঝোতা বৈঠকে অংশ নেবে না বলে তিনি ঘোষণা দেন। এছাড়া সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক আবু সুফিয়ান, সাবেক সভাপতি ওয়াজেদ আলী, ক্ষতিগ্রস্ত ২০ গ্রাম সমন্বয় কমিটির আহবায়ক মিজানুর রহমান মিজান ও সাবেক আহবায়ক মশিউর রহমান বুলবুল, এহসানুল হক সোহাগ প্রমুখ। এর আগে সকাল ১১টায় খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম ও ক্ষতিগ্রস্ত ২০ গ্রাম সমন্বয় কমিটির আহবায়ক মিজানুর রহমান মিজানের নেতৃত্বে এক বিক্ষোভ মিছিল খনির চারপাশের সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে খনির শ্রমিক-কর্মচারী ও কয়েক হাজার গ্রামবাসী যোগ দেন।
শ্রমিকদের দাবীর ব্যপারে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী হাবিব উদ্দীন আহাম্মদ বলেন, এনিয়ে গত রবিবার সচিবালয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রনালয়ের সচিব ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। এর আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে টেলিফোনে মতবিনিময় করা হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়েছে আগে শ্রমিকরা কাজে যোগদান করবে। তারপর জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন প্রতিনিধি দল বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি পরিদর্শনে গিয়ে শ্রমিকদের দাবী-দাওয়া নিয়ে সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। ইতিমধ্যে বিষয়টি শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, তাদের উপদেষ্টা ও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে জানানো হয়েছে বলে তিনি উলেখ করেন।