মঙ্গলবার ● ২২ মে ২০১৮
প্রথম পাতা » ঝালকাঠি » ঝালকাঠিতে ১০৬ মাদক ব্যবসায়ীর নাম তালিকাভূক্ত : ক্রসফায়ার আতংকে এলাকাছাড়া
ঝালকাঠিতে ১০৬ মাদক ব্যবসায়ীর নাম তালিকাভূক্ত : ক্রসফায়ার আতংকে এলাকাছাড়া
ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: (৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৪৯মি.) গত কয়েকদিনের অভিযানে ঝালকাঠির তালিকাভুক্ত বেশকয়েকজন মাদক ব্যবসায়িকে আটকের খবর পাওয়া গেছে। অবশ্য তালিকা অনুযায়ী বাকিদের গ্রেফতারেও তৎপরতার কমতি নেই। চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের বাসাবাড়িতে সকাল বিকেল কিংবা রাতে তাদের হানা দিচ্ছে পুলিশ। বিশেষ করে শতাধিক মাদক ব্যবসায়িকে টার্গেট করে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু গত কয়েকদিনে সারা দেশে প্রায় ২৫ মাদক ব্যবসায়ী নিহতের খবরে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে মাদক ব্যবসায়ী মহলে।
ঝালকাঠি জেলায় একটি গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে ১০৬ মাদক ব্যবসায়ীর নাম তালিকাভূক্ত হয়েছে। এ তালিকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা। মহা পুলিশ পরিদর্শকসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পেয়ে মাদক প্রতিরোধে হার্ডলাইনে রয়েছে ঝালকাঠি জেলা পুলিশ। প্রতিটি থানার আওতাধীন মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা হাতে নিয়ে গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে বলে পুলিশের একটি সূত্রে নিশ্চিত করেছে।
এদিকে ক্রসফায়ারের ঘটনার পর অনেক মাদক ব্যবসায়ী লাপাত্তা হয়েছেন। এমনকি ঝালকাঠি মাদকের জোন হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলো মাদকের রমরমা বাণিজ্য থেমে গেছে। তবে থেমে নেই মাদক ব্যবসা। ওই সকল মাদক ব্যবসায়ীরা এখন নয়া কৌশলে খোলস পালটে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠেছে ঝালকাঠির চিহিৃত কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীর সাথে কতিপয় অসাধু পুলিশ সদস্যের রফাদফা ও আটক মেসেজগুলো পূর্বেই জানিয়ে দেওয়ায় ঐ সকল মাদক ব্যবসায়ীরা দাপটের সাথেই গোপেগাপে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসা। আর এতে যুবসমাজ ধ্বংস হলেও ঐ অসাধু পুলিশ কর্তাদের পকেট ভারী হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে চিহিৃত মাদক সম্রাট অনেককেই এখন আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। পুলিশের সার্বক্ষণিক নজরদারি চলছে চিহ্নিত আস্তানাগুলোতে । একই পরিবেশ বিরাজমান শহরের প্রতিটি এলাকায়। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কড়াকড়ি আরোপে গোটা ঝালকাঠি অনেকটা মাদক ব্যবসায়ীদের আনাগোনামুক্ত রয়েছে।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, পুলিশ মাদক বিক্রেতার একটি তালিকা সাম্প্রতিকালে প্রণয়ন করে ঢাকা হেডকোয়াটার্সে পাঠায়। ওই তালিকা থেকে সেবীদের বাদ দিয়ে অর্ধ-শত মাদক ব্যবসায়ীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই চিহ্নতদের গ্রেফতারে নির্দেশ দেয় হেডকোয়ার্টাস। তবে অন্য একটি গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় রয়েছে ১০৬ মাদক ব্যবসায়ী। ঐ তালিকাটি প্রধান মন্ত্রী সহ বেশ কয়েকটি দপ্তরে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
পুলিশের এই ধরপাকড় ও বন্দুকযুদ্ধ আতঙ্ক মাদক বিক্রেতাদের প্রাণবিয়োগের বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে। যে কারণে গত শনিবার সারাদেশে বন্দুকযুদ্ধে বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হওয়ার পরপরই তারা আত্মগোপনে চলে গেছেন।
এক্ষেত্রে কেউ কেউ বলছেন- পুলিশের এই ঘোষণা দিয়ে ধরপাকড়ে বিষয়টি আগেই আঁচ করতে পেড়েছে চিহ্নিতরা। ফলে বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীরা আগে ভাগেই কেটে পড়েছেন। এখন যাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে তারা খুঁচরো ব্যবসায়ী।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ জিরোটলারেন্স এ রয়েছে। মাদকের সাথে যেই জড়িত থাকুক না কেন পুলিশ কাউকে ছাড় দিবেন না। মাদকের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষনা করেছে পুলিশ। তারই ধারাবাহিকতায় মাদক ব্যবসায়ী কঠোর হস্তে দমনে কাজ করছে পুলিশ বলে এ সূত্রটি দাবি করেন।