বৃহস্পতিবার ● ৭ জুন ২০১৮
প্রথম পাতা » জনদুর্ভোগ » সিলেট নগরীতে রাস্তা দখল করে গড়ে উঠা ষ্ট্যান্ডগুলো কি বৈধ ?
সিলেট নগরীতে রাস্তা দখল করে গড়ে উঠা ষ্ট্যান্ডগুলো কি বৈধ ?
সিলেট প্রতিনিধি :: (২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ রাত ৮.২৬মি.) রাস্তায় এলোপাথাড়ি রাখা যানবাহন। দেখলে মনে হবে কোন বৈধ টার্মিনাল। অবাধে চলছে এগুলা দেখার যেন কেউ নেই। সিলেট নগরীর ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে এমন দৃশ্য নিত্যদিনের। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন মেয়র আরিফের চোখে কি ষ্ট্যান্ডগুলো কি বৈধ আর হকাররা অবৈধ?
এ পরিস্থিতি সৃষ্টির নেপথ্যে রাস্তা দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ পরিবহন স্ট্যান্ড। অদৃশ্য শক্তির হাতে জিম্মি হয়ে রয়েছে সিলেটের প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশন। গণমাধ্যম সহ সাধারণ মানুষের কাছে তাদের বক্তব্য একই সুরে গাথা।
প্রশ্ন করলে উত্তর মেলে কৌশলী, হবে, হচ্ছে ব্যবস্থা নিচ্ছি এর বাহিরে গত কয়েক বছর থেকে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দেখেনি নগরবাসী।
নগরীতে যানজট সৃষ্টির জন্য এভাবে গড়ে ওঠা প্রায় অর্ধশত মাইক্রোবাস, হিউম্যান হলার, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ট্রাক স্ট্যান্ডকে দায়ী করছে সাধারণ মানুষ।
সিটি কর্পোরেশন বা পুলিশ প্রশাসন কেউই এই অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। যদিও নগর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নগরীতে বৈধ কোনো স্ট্যান্ড নেই। তারা ইতিমধ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য দফায় দফায় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, স্ট্যান্ড উচ্ছেদে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নগরের ভেতরে এসব পরিবহন স্ট্যান্ডের প্রকৃত মালিক সিটি কর্পোরেশন। সরকারের পালাবদলের সঙ্গে এসব স্ট্যান্ডের কর্তৃত্ব হাত বদল হয়। সব স্ট্যান্ড থেকে আয় করা অর্থ নেতাদের পাশাপাশি পুলিশসহ বিভিন্ন মহলের পকেটস্থ হয়।
সিলেট নগরীর চৌহাট্টা স্ট্যান্ড শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করেন। তবে অন্য স্ট্যান্ডগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ন্ত্রণে। যানবাহন ভেদে বিভিন্ন হারে দৈনিক চাঁদা তুলেন নেতাদের প্রতিনিধিরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে জানায়, সময়মতো চাঁদা না দিলে গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। অতীতে এমন ঘটনার নজির রয়েছে। এ দৃশ্য শুধু এখানেই নয়, পুরো নগরজুড়ে।
আগে অল্পকিছু কয়েকটি পরিবহণ স্ট্যান্ড থাকলেও এখন ব্যস্ততম নগরী সিলেটের সড়কের পাশে অবৈধ স্ট্যান্ডের সংখ্যা প্রায় অর্ধশত।
সিলেট নগর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নগরীর ব্যস্ততম কোর্ট পয়েন্ট, সোবহানীঘাট, আম্বরখানা ও বিমানবন্দর সড়কে যাত্রী পরিবহনের সুবিধার্থে ১০টি করে অটোরিকশা দাঁড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয়। এ নিয়ম উপেক্ষা করে সড়কের অর্ধেকটা দখলে নিয়ে করা হয়েছে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও হিউম্যান হলার স্ট্যান্ড।
এমনকি নগর ভবনের সামনের সড়কও এখন অটোরিকশা স্ট্যান্ড।
এছাড়া নগরীর মেন্দিবাগ, জেল রোড, চৌহাট্টা, নাইওরপুল-মিরাবাজার সড়ক, আম্বরখানা পয়েন্ট ও এয়ারপোর্ট সড়ক, দাড়িয়াপাড়া গলির মুখ, শাহী ঈদগাহ, টিলাগড়, ভার্তখলা ভূঁইয়ার পাম্পের সামনে, বাবনা পয়েন্ট, রেলগেট, কদমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সামনের সড়ক, মুক্তিযোদ্ধা চত্বর, হুমায়ূন রশিদ চত্বর, সুবিদবাজার, মদিনা মার্কেট, ওসমানী মেডিকেলের সামনের সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে রাস্তা জুড়ে বসানো হয়েছে মাইক্রোবাস, হিউম্যান হলার ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড।
এনিয়ে কথা হয় সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সাথে।
তিনি জানান, ‘আমরা অবৈধ স্ট্যান্ডগুলো উচ্ছেদ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছি। তাদের সহযোগিতা নিয়ে অভিযানে শীঘ্রই নামবো।’