শুক্রবার ● ১৫ জুন ২০১৮
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » মেধাবী ছাত্র সুমন এর জীবন রক্ষার্থে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিন
মেধাবী ছাত্র সুমন এর জীবন রক্ষার্থে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিন
মাইনউদ্দিন,খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: (১ আষাঢ় ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ রাত ৮.৫১মি.) ২২ বছর বয়সী টগবগে তরুণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ৩য় বর্ষের মেধাবী ছাত্র সুমন চাকমা ফুসফুসে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত । তার জীবন রক্ষার্থে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিন। সুমন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাইসছড়ি উপজেলার আগলাশিং পাড়ার কৃষক সুপেন চাকমার ছেলে। প্রত্যন্ত ও দুর্গম এই গ্রামটি খাগড়াছড়ি শহর থেকে দূরত্ব আনুমানিক ১৫ কিলোমিটার।
ছোটবেলা থেকে নানান কষ্টের মধ্যে পড়াশোনা করতে হয়েছে সুমনের। প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি হয়েছে নিজ গ্রামে। সেখান থেকে প্রাথমিকের পাঠ চুকিয়ে ভর্তি হন ঠাকুরছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। চরম আর্থিক টানাপোড়নের মধ্যে ঠাকুরছড়াতে এক আত্মীয়ের বাসায় থেকে পড়াশোনা করেন। সেখান থেকে ২০১৩ সালে জিপিএ ৪.০০ পেয়ে সফলতার সাথে এসএসসি পাশ করেন। এরপর খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজে ভর্তি হন। সেখানেও শুরু হয় আরেক যুদ্ধ। বাবার পক্ষে কলেজে পড়ালেখার খরচ যোগানোটা সম্ভব ছিল না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিউশনিতে নেমে পড়লেন তিনি। এভাবে বহু কষ্টে টিউশনি করে যে অর্থ পেতেন তা দিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যান। এত প্রতিকূলতা ও চরম আর্থিক সংকট তার শিক্ষা জীবনকে ব্যাহত করতে পারেনি।
অবশেষে ২০১৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৪২ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি যুদ্ধে নেমে পড়লেন। আবারো আর্থিক সংকট সামনে এসে দাঁড়ালো। তার বহু সহপাঠি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং করলেও তিনি পারেননি। ছেলেকে কোচিং করানোর মতো আর্থিক সামর্থ্য তার বাবার ছিল না। তবুও দমে গেলেন না সুমন। নিজ প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতি নিতে লাগলেন। এবার ইচ্ছাশক্তি, কঠোর পরিশ্রম ও মেধার সংমিশ্রণ ঘটলে যে সফল হওয়া সম্ভব সেটা দেখিয়ে দিলেন তিনি। লক্ষাধিক ভর্তি যোদ্ধার সাথে লড়াই করে স্থান করে নিতে সমর্থ হলেন সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
কিন্তু ভর্তি হওয়ার পরও অনেক কষ্ট-সংগ্রাম করে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন অভাবী এই হার না মানা যোদ্ধাটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন’র সামান্য শিক্ষাবৃত্তি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পার্ট টাইম চাকুরি ও বাবা-মার সামান্য যোগানই হচ্ছে তার উচ্চশিক্ষা চালিয়ে নেওয়ার একমাত্র সম্বল। এতো কষ্ট করে পড়াশোনা করার পরও সমাজের প্রতি দায়বোধ থেকে তিনি নানা সামাজিক সচেতনতামূলক কাজেও স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
সুমন চাকমা একবুক স্বপ্ন ও আশা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আকাশ ছোঁয়া স্বপ্নও ছিল বাবা-মা’র। স্বল্পভাষী, অমায়িক কিন্তু সর্বদা হাসিখুশি মানুষটি আজ কঠিন এক দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। বর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবসন্নভাবে শুয়ে আছেন হাসপাতালের বিছানায়। সম্প্রতি মেডিক্যাল পরীক্ষায় ক্যান্সার ধরা পড়েছে।
রিপোর্টে উল্লেখ আছে Lwo Grade Lymphoma বাসা বেঁধেছে ফুসফুসে। রোগটি অত্যন্ত জটিল। ডাক্তাররা তাকে তাড়াতাড়ি ভারতে নিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। সময়মতো উন্নত চিকিৎসা করা গেলে একটি সম্ভবনাময় তরুণের জীবন ও স্বপ্নকে বাঁচানো যাবে। কিন্তু তাতে বহু লক্ষ টাকার প্রয়োজন। এত টাকা তার দরিদ্র কৃষক বাবার পক্ষে যোগাড় করা অসম্ভব। তাই তিনি তার একমাত্র ছেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবান ও সহৃদয় ব্যক্তি সকলের কাছে আর্থিক সাহায্য ও সহযোগিতার আবেদন জানিয়েছেন।
দূরারোগ্য ব্যাধির কাছে এমন এক উজ্জ্বল এবং সম্ভাবনাময় তরুণের অসহায় আত্মসমর্পন কোন হৃদয়বান ও মানবতাবাদী মানুষ মেনে নিতে পারেন না। সকলের আশীর্বাদ ও সহযোগিতায় সুমন চাকমা পেতে পারেন নতুন জীবন। আপনাদের সামান্য আর্থিক সহায়তা বিন্দু বিন্দু জলে কলসি পূরণের মতো একসময় তা বৃহদাকার ধারণ করবে এবং একটি জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে। আসুন আমরা সুমন চাকমার জীবন রক্ষার্থে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিই।
আর্থিক সাহায্য পাঠানোর ঠিকানাঃ বিকাশ নাম্বার : ০১৫১৬-১৯৫০৮৬