শনিবার ● ১৬ জুন ২০১৮
প্রথম পাতা » কৃষি » রাউজানের অফিস আঙ্গীনার গাছে ঝুলছে থোকা থোকা আম আর লিচু
রাউজানের অফিস আঙ্গীনার গাছে ঝুলছে থোকা থোকা আম আর লিচু
রাউজান প্রতিনিধি :: (২ আষাঢ় ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ রাত ১১.০১মি.) রাউজান উপজেলার প্রায় প্রতিটি সড়ক কিনারায় সারি সারি আম গাছে ঝুলছে সবুজ আম। এই দৃশ্য দেখা গেছে উপজেলার সরকারি বিভিন্ন অফিস আদালতের বাইরে খোলা জায়গা রোপন করা আম গাছেও। কোনো জায়গায় আমের সাথে দেখা গেছে লিচুর গাছেরও ফলন। সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায় রাউজান পৌরসদরের সুলতানপুর তহশিল অফিসের সীমানা প্রাচীর অভ্যন্তরে বিশাল জায়গা জুড়ে রোপন করা বহু আম গাছে ঝুলছে বিভিন্ন প্রজাতির আম। ফাঁকে ফাঁকে লাগানো লিচু গাছেও শোভা পাচ্ছে ঝুলন্ত লিচু।
তসশিল অফিসের কর্মকর্তা জহির উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে পরিত্যাক্ত হয়ে থাকা তহশিল অফিসের এই জায়গায় ঝোপ ঝাড় পরিষ্কার করে চারা লাগানোর নিদ্দেশ ছিল স্থানীয় এমপি ফজলে করিম চৌধুরীর। তার নিদ্দেশনা মেনে রোপন করা আম গাছ থেকে ফলন পাওয়া যাচ্ছে। এসব আম উন্নত ও সুসাধু জাতের।
জানা যায়, তহশিল অফিস অভ্যন্তরের থাকা গাছের আম লিচুতে কারো হাত দেয়া নিষেধ। সাংসদের নিদ্দেশনা রয়েছে পাকা আম ঝড়ে পড়লেই শুধু এগুলো কুড়িয়ে নেয়া যাবে। ফল খোকো পশু পাখি গাছ থেকে তাড়ানো যাবে না।
ছোট ছোট গাছে থোকা থোকা আম দেখা গেছে বিনাজুরী ও রাউজান ইউনিয়ন পরিষদ অভ্যন্তরে খোলা জায়গায় রোপা আমের কলম গাছে। সেখানেও ঝুলে আম,লিচু। দুটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএম জসিম উদ্দিন হিরু ও সুকুমার বড়ুয়া বলেন, রাউজানের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের আঙ্গীনায় বহু ফলজ গাছে চারা লাগানো হয়েছে। যারা সঠিক পরিচর্যা করতে পেরেছে তাদের চারা গাছ বড় হয়েছে এবার ফলন দিচ্ছে।
পরিদর্শন কালে দেখা যায় উপজেলার ডাবুয়া ইউনিয়ন হয়ে শহীদ জাফর সড়ক চলে গেছে হলদিয়া ইউনিয়নের পাহাড় টিলার দুর্গম পথ ধরে ফটিকছড়ির দিকে। এই সড়কটির সংযোগ হয়ে আরেকটি সড়কের গন্তব্য পূর্বমুখি পার্ব্বত্য উপজেলা কাউখালীর দিকে। এই সড়কটির নাম হলদিয়া ভ্যালেজ রোড। আনুমানিক পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ ভ্যালেজ রোডের দুপাশে সারি সারি আম্রপালির চারা। ফাঁকে ফাঁকে রোপন করা হয়েছে লিচু, আমড়া, পেয়ারা, কাঠাঁল চারাও।
স্থানীয় চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় সাংসদ এর নিদ্দেশে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে এসব চারা লাগানো হয়েছে। এবার ফলন না হলেও আগামী মৌসুমে সব গাছে ফলন পাওয়া যাবে। একই দৃশ্য উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের প্রধান প্রধান সড়ক পথেও। নোয়াপাড়া-রমজান আলী হাট সড়কের দুই পাশে কয়েক হাজার গাছ এখন মাথা উঁচু করে ঢাল পালা বিস্তার করে পথিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
উপজেলার পশ্চিম ও পূর্বগুজরার দুই চেয়ারম্যান লায়ন সাহাবুদ্দিন আরিফ ও মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস উদ্দিন বলেন, স্ব-স্ব ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চারা গুলো প্রতিনিয়ত পরিচর্যা করা হচ্ছে। যাওয়া আসা পথে চারার সঠিক পরিচর্যা হচ্ছে কিনা তা দেখছেন সাংসদ। নোয়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ক্যাম্পাস অভ্যন্তরে আমের ফলন হয়েছে প্রচুর। অধ্যক্ষ কফিল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ফলন প্রচুর হলেও কোনো শিক্ষার্থী গাছ থেকে ফল ছিঁড়ে খাওয়া নিষেধ।
রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এহেছানুল হায়দর চৌধুরী বলেন, রাউজানে এক ঘন্টায় চার লাখ ৮৭ হাজার গাছের চারা রোপনের কর্মসূচি নিয়ে রাউজানকে সবুজ উপজেলায় পরিণত করেছেন স্থানীয় সাংসদ। সেই কর্মসূচিতে লাগানো সব ফলজ গাছ উন্নত জাতের। দেশের বিভিন্ন স্থা থেকে সংগ্রহ করা কলম গাছে এখন ফলন দিচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে সাংসদ ফজলে করিম চৌধুরী সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিকে বলেন রাউজানের মানুষ এখন বাইরের আম কিনে খেতে হয়না। প্রতিটি গ্রামের মানুষ তাদের রোপন করা গাছ থেকে বিষমুক্ত পাকা ফল খেতে পাড়ে। তিনি জানান আগামীতে রাউজানের মানুষের চাহিদা পুরণ করে পাকা ফল বিক্রিও করতে পারবে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন কেউ কাঁচা ফল গাছ থেকে ছিঁড়তে পারবে না। পাকা আম ঝড়ে পড়লেই তবে কুড়িয়ে নিতে পারবে। তিনি মনে করেন গাছের পাকা ফলের উপর হক রয়েছে পশু পাখিও। যেসব পশু পাখি ফল খেয়ে বেঁচে থাকে তারা পরিবেশ রক্ষা করে। তাদের কারণে আমাদের জন্য এই প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষা হয়।