শুক্রবার ● ২২ জুন ২০১৮
প্রথম পাতা » গাজিপুর » গাজীপুরের শিশু সুমাইয়া বাঁচতে চায় : প্রয়োজন সহযোগীতা
গাজীপুরের শিশু সুমাইয়া বাঁচতে চায় : প্রয়োজন সহযোগীতা
মুহাম্মদ আতিকুর রহমান (আতিক), গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: (৮ আষাঢ় ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ বিকাল ৫.২৫মি.) জীবন যে কত কষ্টের, তা মাত্র সাত বছরেই হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছে শিশু সুমাইয়া। সহপাঠীরা যেখানে সারাদিন খেলাধুলায় ব্যস্ত, সেখানে তার দিনগুলো কাটছে বিছানায়। একের পর এক অসুখে তার জীবনের স্বপ্নগুলো আজ অভিশপ্ত হয়ে উঠেছে। আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো না থাকায় ইতোমধ্যে তার চিকিৎসা ব্যয়ে সর্বশান্ত হয়েছে তার পরিবার। এখন বিনা চিকিৎসায় সৃষ্টিকর্তার দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া যেন আর কোন পথই যেন নেই তাদের।
গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের সিমলাপাড়া গ্রামের কাঠমিস্ত্রি স্বপন মিয়া ও সানজিদা খাতুনের মেয়ে সুমাইয়া (৭)। দিন আনে দিন খায় এই পরিবারটি। সরকারি খাস জমিতে তাদের বসবাস।
সুমাইয়া সিমলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। অসুস্থতার জন্য গত ছয়মাস ধরে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ রয়েছে।
তার পরিবারের সদস্যরা জানান, নয় মাস আগে সুমাইয়ার পেটে ব্যথা হয়। প্রথমে তাকে মাওনা চৌরাস্তার হাসপাতালে চিকিৎসা করালে পেটে টিউমার ধরা পড়ে। পরে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিলে ময়মনসিংহের একটি হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। সেখানে টিউমারসহ একটি কিডনি অপসারণ করে তারা।
অস্ত্রোপচারের কাটা ঘা-গুলো যখন শুকিয়ে আসছিল, সুমাইয়া ও তার পরিবারের চোখে মুখে ছিল আনন্দের অশ্রু। ঠিক তখনই আবার পেটে ব্যথা শুরু হয়। আবার ধারদেনা করে শরণাপন্ন হতে হলো চিকিৎসকের। আবার শুরু হলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা, এবার যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার উপক্রম। এবার সুমাইয়া লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত। চিকিৎসকের পরামর্শ মতে, দ্রুত শুরু করতে হবে চিকিৎসা, অন্যথায় নিয়তিকেই বরণ করার ডাক। অর্থের যোগান অসম্ভব, বিধায় আশাহত হয়ে পরিবারটি আশ্রয় নেয় নিজ বাড়িতে। গত তিন মাস ধরে বিনা চিকিৎসায় শেষ পরিণতির দিকে অগ্রগামী সুমাইয়া।
সুমাইয়ার মা সানজিদা আক্তার জানান, মেয়ের যন্ত্রণায় কাতর হয়ে কান্নায় মাঝে মধ্যে নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারি না। মা মেয়ে দুজন একসাথে কান্না করি। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না, তাই নিজের জীবনের বিনিময়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে মেয়ের জীবন চেয়েছি।
সুমাইয়ার বাবা স্বপন মিয়া জানান, সামান্য বেতনে অন্যের দোকানে কাঠমিস্ত্রির কাজ করে কোন মতে সংসার চালাই। মেয়ের প্রথমবার চিকিৎসায় সর্বশান্ত হয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। পূর্বের চিকিৎসার ঋণেই শোধ দিতে পারিনি নতুনভাবে চিকিৎসা ব্যয়ের যোগান দেয়ার কোন ব্যবস্থা নেই। চিকিৎসকরা জানান, দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে না পারলে মৃত্যুকেই মেনে নিতে হবে। চোখের সামনে তরতাজা সাত বছরের একটি প্রাণ হেরে যাবে এটাও নিজের মনকে মানাতে পারছি না। এখন সৃষ্টিকর্তার দিকে চেয়ে কান্নাকাটি করা ছাড়া আর কোন উপায় যে নেই।
শিমলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম জানান, সুমাইয়া আমাদের বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। অসুস্থ হওয়ার পর আমরা বিভিন্ন সময় তার পরিবারটির খোঁজখবর নিয়েছি, হতদরিদ্র বিধায় এখন বিনা চিকিৎসায় দিন কাটছে সাত বছর বয়সী এই মেয়েটির। সকলের সহযোগিতায় মেয়েটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলে হয়তো সুস্থ হয়ে আবার ফিরে আসতে পারবে বিদ্যালয়ের আঙিনায়।
সাহায্য পাঠানো বা যোগাযোগের ঠিকানা সুমাইয়া আক্তার ,পিতা- স্বপন মিস্ত্রী, মাতা- সানজিদা খাতুন, গ্র্রাম- সিমলা পাড়া, পোঃ- মাওনা বাজার, থানা- শ্রীপুর, জেলা- গাজীপুর । ফোন ও স্বপন মিস্ত্রীর বিকাশ পার্সনাল নাম্বার:-০১৬৮২-৪০৫৬১৩।