শুক্রবার ● ২২ জুন ২০১৮
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » প্রেমিককের হাত ধরে উধাও হলেন প্রেমিকা পূজা বিশ্বাস
প্রেমিককের হাত ধরে উধাও হলেন প্রেমিকা পূজা বিশ্বাস
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (৮ আষাঢ় ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সন্ধ্যা ৭.১১মি.) ঝিনাইদহের উপশহরপাড়ায় কথিত প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়া স্কুলছাত্রী পূজা বিশ্বাসকে কুপিয়ে আহত করা সেই প্রেমিককের সাথে পূজা বিশ্বাস এবার অজানার উদ্দ্যেশে গতকাল উধাও হয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। সেদিন ২৫ অক্টোবর ২০১৬ তারিখ সোমবার সন্ধ্যায় লিটু নামের প্রেমিক যুবক স্কুলছাত্রী পূজা বিশ্বাসকে (১৬) কুপিয়ে আহত করেছিল মর্মে ব্যাপকভাবে সংবাদটি গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় লিটুর পায়ে গুলি লাগা অবস্থায় পুলিশ লিটুকে আটক করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা শেষে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছিল। পরবর্তিতে লিটু গংরা ঝিনাইদহ জর্জ কোর্ট মারফত জামিনে আছে বলে জানা যায়। পরবর্তিতে প্রায় ৬মাস পরে পূজা বিশ্বাসের পিতা বিপুল মজুমদার মেয়েকে মহা ধুমধাম করে পাশের জেলা মাগুরায় বিবাহ দেয়।
জানা গেছে, বিয়ের প্রায় দেড় বছর পরে ঘটনার দিন ২১ জুন ২০১৮ বৃহস্পতিবারে আনুমানিক আড়াইটার দিকে উপশহরপাড়ার পুজার পিতার বাসা হতে নিজ স্বামীর বাড়ি মাগুরার উদ্দ্যেশে স্বামীর সহিত মটরসাইকেল যোগে পাড়ি দেয় পুজা (১৮)। পথিমধ্যে পুর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক পুজা তার স্বামীকে ঝিনাইদহ টার্মিনালে মোটরবাইক থামিয়ে ফলের জুস ও কিছু ফল কেনার জন্য পাঠায়। বেচারা স্বামী ফল ও জুস নিয়ে ফিলে আসলে ততক্ষণে কথিত প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়া স্কুলছাত্রী পূজা বিশ্বাসকে কুপিয়ে আহত করা সেই প্রেমিক লিটুর (২৪) সাথে অজানার উদ্দ্যেশে উধাও হয় পূজা বিশ্বাস।
সেসময় পূজা বিশ্বাস যথেষ্ট পরিমান সোনার অলঙ্কারাদি ও টাকা পয়সা সাথে নিয়ে পুর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক সেই প্রেমিক লিটুকে নিয়ে পাড়ি দিয়েছেন মর্মে ঝিনাইদহ শহর জুড়ে ঝড় উঠেছে।
এদিকে পূজা বিশ্বাসের পিতা বিপুল মজুমদার সংবাদের আংশিক অস্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, ২১ জুন ২০১৮ গতকাল বৃহস্পতিবারে আনুমানিক আড়াইটার দিকে উপশহরপাড়ার পুজার আমার নিজ বাসা হতে পুজার স্বামীর বাড়ি মাগুরার উদ্দ্যেশে তার স্বামীর সহিত মটরসাইকেল যোগে পাড়ি দেয় পুজা। স্বামীর বাড়িতে পৌছানোর পর একই দিনে রাত আনুমানিক রাত সাড়ে নয়টার দিকে আমার জামায় আমাকে ফোন করে বলে পুজাকে পাওয়া যাচ্ছে না। আমার সন্দেহ হলে আমি ও আমার জামায় মিলে পুজাকে খুঁজে না পেয়ে মাগুরা থানায় একটি জিডি করি। আজ ২২ জুন রাত পর্যন্ত পুজা ও লিটুর কোন প্রকার খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি জানান, ঝিনাইদহ সদর থানায় কেউ কোন অভিযোগ করিনি, করলে আইন অনুযায়ী যথা যথ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। এঘটনার পর থেকেই লিটুর ভগ্নিপতি উপশহরপাড়ার এলাকার ভাড়াটে ফল ব্যাবসায়ী বাবু ও তার স্ত্রী সহ লিটুর গোটা আমিতয় স্বজন পরিবার পরিজন আতঙ্কে উধাও হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানায়। সেই প্রেমিক লিটুর সাথে পুজা যদি উধাও হতে পারে তাহলে দুই বছর পুর্বে কিভাবে এই প্রেমিক লিটু প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়া নাটকে স্কুলছাত্রী পূজা বিশ্বাসকে কুপিয়েছিল ? গণমাধ্যম ও প্রশাসনের কাছে এ প্রশ্নে উত্তর শহরবাসীরা জানতে চায়। উপশহরপাড়ায় কথিত জখম করা সেই প্রেমিককের সাথে পূজা বিশ্বাস এবার অজানার উদ্দ্যেশে গতকাল উধাও হয়েছে ঘটনায় ঝিনাইদহ শহর জুড়ে ব্যাপক তোলপাড় দেখা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ঝিনাইদহের উপশহর পাড়ায় নিজ বাসার ছাদে কথিত প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় ২৫ অক্টোবর ২০১৬ তারিখ সোমবার সন্ধ্যায় লিটু নামের এক যুবক স্কুলছাত্রী পূজা বিশ্বাসকে (১৫) কুপিয়ে আহত করেছিল মর্মে ব্যাপকভাবে সংবাদটি গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় পূজাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাসুদুজ্জামান জানিয়েছিলেন, পূজার বাঁ চোয়ালে ও ডান হাতে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। ক্ষত স্থানে সেলাই দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসাধিন অবস্থায় সে আশঙ্কামুক্ত ছিল। পূজার বাবা ঝিনাইদহ শহরের উপশহর পাড়ার বাসিন্দা বিপুল মজুমদার জানান, তাঁর মেয়ে স্থানীয় জমিলা খাতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ে। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, উপশহরপাড়ার একই এলাকার ভাড়াটে বাবু নামের ফল ব্যাবসায়ী এক ব্যক্তির শ্যালক লিটু (পুর্বের বয়স-২২) প্রায়ই তাঁর মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতেন। স্কুলে যাওয়ার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিতেন। এই প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় পূজাকে কুপিয়েছেন লিটু। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পূজা বলেছিলো, ২৫ অক্টোবর ২০১৬ তারিখ সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় নিজেদের বাড়ির ছাদে ছিল পুজা। সে সময় প্রাচীর টপকে বখাটে লিটু ছাদে চলে আসেন। লিটু তার হাত ধরে নিচে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বাধা দিলে হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র গলায় ধরে হত্যার হুমকি দেন লিটু। একপর্যায়ে লিটুর হাতে থাকা ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার চোয়াল ও হাত জখম হয়।
এ বিষয়ে সে সময়ের ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হরেন্দ্রনাথ সরকার জানিয়ে ছিলেন, জড়িত যুবক লিটুর পায়ে গুলি লাগা অবস্থায় আটক করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা শেষে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছিল।