মঙ্গলবার ● ২৬ জুন ২০১৮
প্রথম পাতা » বিদ্যুৎ -জ্বালানি » ৩০ আসনের রেস্টুরেন্টের বিদ্যুৎ বিল পৌনে ২লাখ
৩০ আসনের রেস্টুরেন্টের বিদ্যুৎ বিল পৌনে ২লাখ
রাজশাহী প্রতিনিধি :: (১২ আষাঢ় ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ রাত ১১.৪৯মি.) বিদ্যুৎ বিভাগের খামখেয়ালিপনায় চরম বিপদের মুখে পড়েছে রাজশাহীর দুই তরুণ উদ্যোক্তা। এক বছরেরও বেশি সময় আগে চালু করা তাদের একটি ফাস্ট ফুডের দোকান এখন বন্ধ হবার উপক্রম। হঠাৎ করে অস্বাভাবিক বিল আসায় রাজশাহী নগরীর রানীবাজার এলাকার ক্রিম এন্ড স্পাইস ফাস্টাফুডের দোকানটি যেকোন সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই প্রতিষ্ঠানে অন্যান্য সময় গড়ে ১০-১২ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল আসলেও এমাসে তার বিল এসেছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ১৫৫ টাকা। অস্বাভাবিক বিল নিয়ে বেকায়দায় পড়া গ্রাহক এ নিয়ে তিনটি আবেদন করেছেন বিদ্যুৎ বিভাগে। কিন্তু উদাসীন বিদ্যুৎ বিভাগের কোন কর্মকর্তার সময় হচ্ছেনা মিটারটি দেখে আসার।
রাজশাহী নগরীর রানীবাজার এলাকায় আসাদুজ্জামান হৃদয় ও বন্ধু মিজানুর রহমান মিলে ক্রিম এন্ড স্পাইস রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করেন। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তারা এটি চালিয়ে আসছেন। এই রেস্টুরেন্ট এর বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে মোকাদ্দার হোসেন নামে। গত বছরের নভেম্বর মাসে এই প্রতিষ্ঠানের বিল আসে ১২ হাজার ৭৭৪ টাকা, ডিসেম্বর মাসের বিল আসে ৫ হাজার ৮৮০ টাকা। চলতি বছরের জানুয়ারির বিল ছিলো ৮ হাজার ৪৩ টাকা আর ফেবব্রুয়ারির বিল আসে ২২ হাজার ৪৮৬ টাকা। কিন্তু মাথায় বাজ পড়া বিল আসে মার্চ মাসে। ঐ মাসের বিল আসে ১ লাখ ১৪ হাজার ৬৫২ টাকা। এই বিল দেখে বেকায়দায় পড়ে যান ক্রিম এন্ড স্পাইস ফাস্টাফুডের মালিকরা।
এই প্রতিষ্ঠানের অংশিদার আসাদুজ্জামান হৃদয় জানান, অস্বাভাবিক বিল দেখার পরই তারা বিদ্যুৎ অফিসে যান। সেখান থেকে পরামর্শ দেয়া হয় কিছু টাকা পরিশোধ করেন সামনে মাসে স্বাভাবিক বিল আসবে। এই কথা শোনর পর তিনি ৩০ হাজার টাকা বিল পরিশোধ করেন। কিন্তু পরের মাসে বিল আসে ১লাখ ৪২ হাজার ৭৮ টাকা। আবারো তারা ছুটে যান বিদ্যুৎ বিভাগে (নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী লি.)। আবারো পরামর্শ দেয়া হয় এবারে আরো কিছু টাকা শোধ করেন সামনের মাসে ঠিক হয়ে যাবে। এই পরামর্শ পেয়ে এপ্রিল মাসে আবারো পরিশোধ করা হয় ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। মে মাসের বিল এসেছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ১৫৫ টাকা।
আসাদুজ্জামান হৃদয় জানান, রেস্টুরেন্টে তিনটি ফ্রিজ, দুটি ২ টনের এসি, একটি ওভেন এবং কয়েকটা লাইট জ্বলে। সেই অনুযায়ি ২০ হাজার বিল আসলেও মেনে নেয়া যায়। কিন্তু এক লাখের উপরে বিল আসায় তারা এখন চরম বেকায়দায় রয়েছেন। প্রতিমাসেই বিল বাড়ছেই। আর যে বিল এসেছে এটা আমাদের পক্ষে শোধ করা কোনভাবেই সম্ভব হবেনা। এ অবস্থায় রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেয়ার কোন বিকল্প নাই।
তিনি আরো জানান, বিল বেশি আসার পর থেকে তিনটি আবেদন করা হয়েছে। সহকারী প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ শাহীনের সাথে বারবার যোগাযোগ করেছি কিন্তু কোন সমাধান জুটেনি। এমনকি কেউ একবার মিটারটি দেখার সময়টুকু পায়নি। এদিকে, আমরা এতদিন সেভাবে না দেখলেও এখন মিটার রিডিং মেলাতে গিয়ে দেখতে পাচ্ছি যে পরিমান রিডিং উঠে আছে তার থেকে বেশি ইউনিটের বিল দেয়া হয়ে গেছে।
এদিকে, নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী লি. এর সহকারী প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম জানান, গতকাল একটি অভিযোগ তিনি পেয়েছেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে ঐ গ্রাহকের সাথে কথা হয়েছে বলে জানান সহকারী প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম।