বৃহস্পতিবার ● ২৮ জুন ২০১৮
প্রথম পাতা » অপরাধ » শিশু নূর হত্যা মামলার প্রধান অসামী সোহেল বিশ্বাসের ফাঁসির আদেশ
শিশু নূর হত্যা মামলার প্রধান অসামী সোহেল বিশ্বাসের ফাঁসির আদেশ
চাটমোহর প্রতিনিধি :: (১৪ আষাঢ় ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ রাত ৯.৪০মি.) আজ বৃহস্পতিবার পাবনার চাটমোহর উপজেলার চাঞ্চল্যকর শিশু আব্দুল্লাহ্ আল নূর (৪) হত্যাকান্ডের রায় ঘোষণা হয়েছে। দীর্ঘ ৪ বছর বিচারিক কাজ চলার পর এ রায় ঘোষণা হলো। প্রধান আসামী সোহেল বিশ্বাস (৩৮) কে ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এই মামলার অপর আসামী শিশু নূরের ফুফা আব্দুস সামাদ (৪০) কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদেশ দেওয়া হয়।
এ মামলায় অপর অভিযুক্ত আব্দুস সামাদের ছেলে কবির হোসেন, নূরের সৎ দাদী আয়শা বেওয়া ও সোহেলের স্ত্রী আজিজা আক্তার রূপাকে বেকসুর খালাসের রায় দিয়েছে আদালত। রাজশাহীস্থ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শিরীন কবিতা আখতার বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২ টায় আদালতে উপস্থিত হয়ে রায়ের সারাংশ পাঠ করেন এবং দুপুর দেড়টার দিকে চূড়ান্তরায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় মামলার সকল আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের রায়কে কেন্দ্র করে আদালত চত্ত্বরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। আদেশ শুনে ফাঁসির দন্ডাদেশপ্রাপ্ত সোহেল বিশ্বাসকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখা যায়। পুলিশ দন্ডপ্রাপ্ত দু’জনকে দ্রুত আদালত চত্ত্বর থেকে কারাগারে নিয়ে যায়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু এবং আসামী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আবু বক্কার, অ্যাডভোকেট একরামূল হক ও অ্যাডভোকেট হামিদুল হক।
উল্লেখ্য, চাটমোহর পৌরসদরের হারান মোড় মহল্লার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো: আবুল হোসেনের ৪ বছরের শিশু সন্তান আব্দুল্লাহ্ আল নুর ২০১৪ সালের ২৫ জুন বুধবার সকাল ১১টার দিকে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুজি করেও নুরের সন্ধান না পেয়ে স্বজনরা পুলিশ সহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেন। এ ঘটনায় শিশুটির পিতা আবুল হোসেন বাদী হয়ে একইদিন রাতে তার বাড়ির ভাড়াটিয়া সোহেল বিশ্বাসকে প্রধান অভিযুক্ত করে সোহেল বিশ্বাসের স্ত্রীসহ অন্তত: ৬ জনকে বিবাদী করে চাটমোহর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
নিখোঁজের দু’দিন পর একই বছরের ২৭ জুন শুক্রবার বিকেলে উপজেলার ভাদড়া খেলার মাঠের দক্ষিণ পাশে জলমগ্ন কচু ক্ষেত থেকে মাথা, হাত, নাড়িভূড়ি বিহীন ক্ষত-বিক্ষত পঁচা দূর্গন্ধযুক্ত বিকৃত একটি শিশুর মৃতদেহ পলিথিন ব্যাগে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। একই স্থান থেকে অপর একটি পলিথিন ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় শিশুটির শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা দু’টি হাত। খবর পেয়ে শিশুর পিতা আবুল হোসেন মৃতদেহটি তার সন্তান আব্দুল্লাহ্ আল নুরের মর্মে সনাক্ত করেন। এসময় সবাই শোকে স্তব্ধ হয়ে যান। পুলিশ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে আবুল হোসেনের বাড়ির নীচতলার ভাড়াটিয়া সোহেল বিশ্বাস (৩৮) কে আটক করে।
এ ঘটনার পরেরদিন ২৮ জুন শনিবার বিকেলে আবুল হোসেনের বাড়ির অদুরে হারান মোড় ব্রীজের পাশ থেকে উদ্ধার হয় শিশুটির বিচ্ছিন্ন মাথা। এদিন পুলিশ কর্মকর্তারা সোহেলের ঘর ও ঘরের আশপাশে তল্লাশী চালিয়ে হত্যাকান্ডের সাথে সম্পর্কিত বেশকিছু আলামত ও উদ্ধার করেন।