মঙ্গলবার ● ৩ জুলাই ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বদলে যাচ্ছে রায়গঞ্জ-তাড়াশ
বদলে যাচ্ছে রায়গঞ্জ-তাড়াশ
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :: (২০ আষাঢ় ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.৫১মি.) চলনবিল অধ্যুষিত রায়গঞ্জ-তাড়াশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরকারের উন্নয়নের ছোয়া লাগায় রায়গঞ্জ-তাড়াশের গ্রামীণ জনপদ পাল্টে যেতে শুরু করেছে। রাস্তাঘাট-ব্রীজ-কালভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌছে যাওয়ায় জনপদের মানুষের জীবনমানও পাল্টে যাচ্ছে। গ্রামীণ রাস্তাগুলো পাকা হওয়ায় সহজেই উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করায় লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। চলনবিলের সরকারী পুকুরগুলো স্বল্পমুল্যে ইজারা নিয়ে মাছচাষ করে ভাগ্য বদলে যাচ্ছে সুফলভোগী মৎস্যচাষীদের। মহাজোট সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে স্থানীয় সংসদ সদস্য ম.ম আমজাদ হোসেনর হাত ধরেই এসব উন্নয়ণ কর্মকান্ড বাস্তবায়ন হয়েছে বলছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, ২০১৪ সালে উপ-নির্বাচনে বীরমুক্তিযোদ্ধা ম.ম.আমজাদ হোসেন মিলন বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় রায়গঞ্জ-তাড়াশের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর থেকেই দলীয় ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যদিয়ে রায়গঞ্জ-তাড়াশ-সলঙ্গার উন্নয়নে মনোযোগ দেন। তার প্রচেষ্টায় দুই উপজেলায় প্রায় হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন গ্রাম-বাজার সংযোগ প্রায় ৫ শত কিলোমিটার রাস্তা দেড় শতাধিক ছোট-বড় ব্রীজ-কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। যে কারণে শস্য-মৎস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত রায়গঞ্জ-তাড়াশের কৃষকরা সহজেই তাদের পণ্য বাজারজাত করতে পারছে। তিনটি থানার মধ্যে তাড়াশে শতভাগ ও রায়গঞ্জ ৯৫ ভাগ বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হয়েছে। অর্ধশত নতুন বিদ্যালয় ভবন নির্মাণসহ ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সংস্কার কাজ করেছেন। প্রতিটি বিদ্যালয়ে সোলারপ্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন। এছাড়াও চলনবিলের প্রায় ৮শতাধিক পুকুর সরকারের পক্ষ থেকে নতুন করে ৬ বছরের জন্য মৎস্যজীবীদের মধ্য ইজারা বন্দোবস্ত করে দিয়েছেন। এতে এ অঞ্চলের ১৫ হাজার মৎস্য পরিবারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। এছাড়াও আধুনিক তাড়াশ থানা ভবন, ফায়ার সার্ভিস, হাসপাতাল, বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের নতুন ভবন, বন্যায় আশ্রয় কেন্দ্র, আদিবাসীদের প্রশিক্ষন কেন্দ্র, কলেজ ভবন, মসজিদ-মাদ্রাসা- মন্দির সংস্কার ও নির্মান করেছেন। বিশেষ করে পলাশডাঙ্গা যুবশিবিরের স্মৃতি ধরে রাখতে নওগাঁয় মুক্তিযোদ্ধা স্তম্ব, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণ করছেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবহেলিত তাড়াশকে নতুন পৌরসভায় রূপান্তরিত করেছেন।
স্থানীয় মাগুড়াবিনোদ গ্রামের কৃষক আব্দুল হাকিম জানান, আগে মাগুড়াবিনোদ থেকে তাড়াশ সদরে আসতে বহু বেগ পেতে হতো। কাঁদামাটিতে পায়ে হেটে আর বর্ষার সময় নৌকায় চলাচল করতে হতো। কিন্তু নতুন রাস্তা হওয়ায় এ গ্রামের মানুষের ভাগ্য খুলে গেছে। সহজেই পণ্য, তাড়াশ বাজারে ও হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাতায়াত করা সম্ভব হচ্ছে।
মৎস্যজীবী আব্দুস সালাম জানান, সংসদ সদস্যের প্রচেষ্টায় ৬ বছরের জন্য পুকুরগুলো সরকারের পক্ষ থেকে মৎস্য জীবিদের মধ্যে বরাদ্দ দেয়ায় মৎস্যজীবিরা নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে। পুকুরগুলো বিভিন্ন প্রজাতির মাছ উৎপাদন হচ্ছে যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যাচ্ছে।
তাড়াশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি ফেরদৌস রহমান জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্যের সদিচ্ছার কারণে প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সোলার প্যানেল দেয়ায় রাতেও শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলেল স্কুলে সোলার প্যানেলের বিদ্যুতে কম্পিউটার শিক্ষাও চালু ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
রায়গঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি বাবুল সরকার জানান, উন্নয়নের বিষয়ে সংসদ সদস্য কঠোর। তার প্রচেষ্টায় পৌরসভায় শতভাগ বিদ্যুত-রাস্তাঘাট নির্মাণ হয়েছে।
রায়গঞ্জ পৌর মেয়র আব্দুল্লাহ আল পাঠান জানান, রায়গঞ্জে পৌরসভা হলেও কোন ভবন ছিল না। বর্তমান সরকারের আমলে বহুতল বিশিষ্ট পৌরভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও পৌরসভার সকল রাস্তা-ড্রেনেজ, স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ চলছে। অচিরেই রায়গঞ্জ পৌরসভা মডেল পৌরসভায় উন্নীত হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য গাজী ম.ম. আমজাদন হোসেন মিলন জানান, তার সময়ে যে উন্নয়ন হয়েছে স্বাধীনতার পর এতো উন্নয়ন হয়নি। প্রতিটি গ্রামে আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়নের ছোয়া রয়েছে। শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুত-শ্লোগানের প্রায় শতভাগ সফল হয়েছে। তিনি আরো জানান জানান, সিরাজগঞ্জ থেকে রায়গঞ্জ সড়কটি টুলেনে উন্নয়নে পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে যাতায়াতের নতুন একধাপ উন্নয়ন হবে। এছাড়াও বিদ্যালয়গুলোকে মোবাইলিং নেটওয়ার্কিংয়ের আওতায় আনা হচ্ছে। আগামীতে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় গেলে রায়গঞ্জ-তাড়াশ ও সলঙ্গাকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধি করতে সব প্রকার প্রচেষ্টা করা হবে বলে তিনি জানান। আর দলকে সুসংগঠিত করে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যন্ত আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলোকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। এতে আগের চেয়ে আসনে আওয়ামীলীগের ভোটের সংখ্যা বেড়েছে। উন্নয়ন আর দলীয় কর্মকান্ড চাঙ্গা থাকায় আগামী নির্বাচনে আসনটিতে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত বলে তিনি মনে করছেন।