শুক্রবার ● ৬ জুলাই ২০১৮
প্রথম পাতা » অপরাধ » বাসরঘর থেকে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার
বাসরঘর থেকে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার
ময়মনসিংহ অফিস :: (২১ আষাঢ় ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ রাত ১১.৫৮মি.)ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার দওগ্রাম থেকে বিয়ের কয়েক ঘন্টা পর রাতে বাসরঘর থেকে হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামি মনির হোসেন (২৭)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত মনির রাজধানী ঢাকা’র কদমতলী থানায় ১৯-৮/০৯ নম্বর হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি এবং ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের বৈরাটি খলিল নগর গ্রামের আব্দুল গফুর তালুকদারের ছেলে ।
আজ বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) দুপুরে গ্রেফতারকৃত মনিরকে পুলিশ ময়মনসিংহের আদালতে প্রেরণ করেছে। তার আগে বুধবার (৪ জুলাই) বিকেলে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার দওগ্রামের ইসমত আলীর মেয়ের সাথে মনিরের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক ঘন্টা পর রাতে বাসরঘর থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।পরে বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) দুপুরে গ্রেফতারকৃত মনিরকে পুলিশ ময়মনসিংহের আদালতে সোপর্দ করা হয়।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৩ আগস্ট রাতে রাজধানীর গুলিস্তান সিদ্দিক বাজার জুতার ফ্যাক্টরির কর্মচারী আলমগীর হোসেন কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তখন একদল ছিনতাইকারী তার গতিরোধ করে। আলমগীরের সব কিছু ছিনিয়ে নেওয়ার সময় বাধা দিতে গেলে তাকে গলাকেটে হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ২০০৯ সালের ১৯ আগস্ট কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ২২ নভেম্বর মোঃ জনি (২৬), মোঃ হাসান (২০) ও মনির হোসেনের (৩০) বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
পরে আদালত মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক ২০১৭ সালের ২৭ জুলাই,আসামি জনি, হাসান ও মনিরকে ফাঁসির রায় দেন।
অপরদিকে ওই হত্যাকান্ডের কিছুদিনের মাথায় কদমতলী থানা পুলিশ ওই মামলার আসামি মনিরকে গ্রেফতার করে। দীর্ঘ ৮ বছর জেলে কাটানোর পর ২০১৭ সালে জামিনে মুক্তি পান তিনি। এর মধ্যে মামলার রায় শেষে ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর আদালত মনিরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
স্থানীয় এলাকাবাসি জানান, পলাতক অবস্থায় কিছু দিন আগে মনির এলাকায় আসেন। এরপর মাইজবাগ ইউনিয়নের দত্তগ্রামের ইসমত আলীর মেয়ে নাজমা বেগমের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়। গত বুধবার তাদের বিয়ে শেষে শ্বশুরবাড়িতে বাসরের আয়োজন করা হয়। কিন্তু বাসর ঘর থেকে বুধবার রাত ৩টার দিকে মনিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ফাঁসির আসামি মনিরের স্ত্রীর বড় বোন হোসনা বেগম জানান, হত্যা মামলা ও ফাঁসির রায়ের বিষয় তাদের কাছে গোপন করা হয়েছে। ৪০ হাজার টাকা যৌতুক দিয়ে বোনের বিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু বিয়ের রাতেই পুলিশ ধরে নিয়ে এসেছে। এখন কী হবে কিছুই বুঝতে পারছি না।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার এসআই মো. সাফায়েত হোসেন জানান, ঢাকা’র কদমতলী থানার একটি হত্যা মামলায় মনিরসহ ৩ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। আদালত থেকে জারি হওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা অনুযায়ী মনিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আজ বৃহস্পতিবার তাকে ময়মনসিংহ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।