শুক্রবার ● ৬ জুলাই ২০১৮
প্রথম পাতা » অপরাধ » ঝালকাঠিতে এবার কারাগারে মধ্যে মিলছে মাদক
ঝালকাঠিতে এবার কারাগারে মধ্যে মিলছে মাদক
ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: (২৩ আষাঢ় ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৫০মি.) ঝালকাঠি কারাগারের এক কারারক্ষী ইয়াবাসহ গ্রেফতারের পর এবার আর এক কারারক্ষী সুমন মৃধার বিরুদ্ধে মাদকাসক্ত আসামীদের কাছে গোপনে মাদকাদ্রব্য সরবারহের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় কারারক্ষী সুমনকে অফিস ডিউটি থেকে সরিয়ে আরপি এবং স্যান্ট্রি ডিউটিতে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন কারাধ্যক্ষ মো. তরিকুল ইসলাম।
অভিযোগে প্রকাশ, ঝালকাঠি কারাগারে দীর্ঘদিন যাবত মাদকাসক্ত আসামীদের কাছে মাদকদ্রব্য বিশেষ করে গাঁজা, ইয়াবা সরবারহ করে আসছিল কারারক্ষী জাহিদ হোসেন এবং সুমন মৃধা। জাহিদ হোসেন এক পর্যায় ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে যায়। জাহিদ হোসেন ৪০ পিচ ইয়াবাসহ প্রথমে গ্রেফতার হয় বরিশাল ডিবি পুলিশের হাতে ২০১৭ সালের ৬ জুলাই । সে মামলায় কয়েকমাস জামিন লাভ করে আবার সে ইয়াবা ব্যবসা শুরু করে। জাহিদের ইয়াবা ব্যবসায় সহযোগীতা করতো কারারক্ষী সুমন মৃধা। সর্বশেষ ঝালকাঠি ডিবি পুলিশের হাতে ১০ পিচ ইয়াবাসহ গত ১৯ মে গ্রেফতার হয় জাহিদ। বর্তমানে জাহিদ ঝালকাঠি কারাগারে আটক আছে। কারাকর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। জাহিদের প্রধান সহযোগী সুমন মৃধা ঝালকাঠি কারাগারের অফিসে ডিউটি করার সুযোগে অপর কারারক্ষীদের উপর ছড়ি ঘুরিয়ে কারাগারে আটক চিহ্নিত মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। কারাগারের বাইরে মাদকাসক্তদের বন্ধু-বান্ধবদের সাথে যোগাযোগ করে সুমন অর্থের বিনিময় কারাগারে মাদক সরবারহ শুরু করে। এ ছাড়া সুমন মৃধার বিরুদ্ধে কারাগারে আটক আসামীদের সাথে দেখা করতে আসা আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে নানাভাবে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। আসামীদের ওকালত নামায় স্বাক্ষর নিতে জনপ্রতি একশ টাকা এবং প্রতিদিন জামিনপ্রাপ্ত আসামীদের কাছ থেকে ৫০০- ১০০০ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি কারাগারে আটক ঝলকাঠির একজন সাংবাদিকের স্ত্রী স্বামীর সাথে দেখা করতে গেলে সুমন মৃধা তার কাছ থেকে স্পেশাল দেখার নামে পাঁচশত টাকা এবং ওই সাংবাদিক জামিনে বের হওয়ার দিন এক হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। পরে ওই সাংবাদিক জেল সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন।
জাহিদ হোসেন ইয়াবাসহ একাধিকবার গ্রেফতার হলেও সুমন মৃধা সবসময় ধরা ছোয়ার বাইরে রয়ে গেছে। কারারক্ষী হিসেবে সুমনের মাসিক মূলবেতন ১৪ হাজার টাকা হলেও সে শহরে সাত হাজার টাকা ভাড়ায় ফ্লাটে থাকেন। তার রয়েছে একটি পালসার মোটরসাইকেল। সম্প্রতি ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে কারাগারে আটক ১৫ জন মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের দেখা সাক্ষাতের ওপর কড়াকরি আরোপের নির্দেশনা দেওয়া হলেও কারারক্ষী সুমন অর্থের বিনিময় ওই ১৫ জনকে বিশেষ সুবিধা দিত বলে অভিযোগ রয়েছে। কারাগারের একাধিক কারারক্ষী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, একজন দুইজন লোভী কারারক্ষীর কারনে ঝালকাঠির ৫০ জন কারারক্ষীর সুনাম নস্ট হচ্ছে। অবিলম্বে কারারক্ষী সুমন মৃধার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে কারাগারের শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়বে।