রবিবার ● ২২ জুলাই ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত বুলবুলের
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত বুলবুলের
রাজশাহী প্রতিনিধি :: (৭ শ্রাবণ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১.৪০মি.) রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার কোন আলামত দেখছেন বলে উল্লেখ্য করে শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকবেন কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। তবে বুলবুলের এই বক্তব্যকে আবেগ ও ক্ষোভের বর্হিপ্রকাশ বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, একটি সুষ্ঠু ও নিরোপেক্ষ নির্বাচন চান তিনি।
শুক্রবার দুপুরে রাজশাহী চেম্বর ভবন মিলনায়তনে প্রথম আলোর আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তারা বক্তব্য রাখেন। ‘কেমন নির্বাচন চাই’ শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠকে চারজন মেয়র প্রার্থীসহ রাজশাহীর সূশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। প্রথম আলোর যুগ্ম বার্তা সম্পাদক সোহরাব হাসানের উপস্থাপনায় গোলটেবিল বৈঠকে লিটন ও বুলবুল ছাড়াও মেয়র প্রার্থী হাবিবুর রহমান ও মুরাদ মোর্শেদ বক্তব্য রাখেন।
মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল অভিযোগ করেন, ‘রাজশাহীতে এখন পর্যন্ত অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোন আলমত নেয়। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা সরকারি দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। ভোটাররা নির্বিগ্নে কেন্দ্রে দিয়ে ভোট দিতে পারবেন কি না তার পরিবেশ এখনো তৈরী হয়নি।
তিনি বলেন, ‘একজন মেয়র প্রার্থী নগরের সব জায়গা দখল করে পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানার টাঙ্গিয়ে দিয়েছে। অন্য কোন প্রার্থী এগুলো টাঙ্গানোর কোন জায়গা রাখেনি। তার পরও ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। আমাদের কোন অভিযোগ আমলেও নেয়া হচ্ছে না।’
কর্মীদের গ্রেপ্তার ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেয়ার অভিযোগ তুলে বুলবুল বলেন, ‘আমার ১৪০০ পুলিং এজেন্টকে নিজ বাড়ি থেকে ভোট কেন্দ্র যাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। এজেন্টরা যদি ভোট কেন্দ্রে যেতে না পারে তা হলে নির্বাচন করে আমাদের কোন লাভ নেই। ফলে ভোটের মাঠে শেষ পর্যন্ত থাকবেন কিনা সেটি নিয়ে এখন সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এ ধরণের যদি কোন ঘটনা ঘটে তবে এর দায় নির্বাচন সচিব, রাজশাহীল পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে নিতে হবে।’
খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল আবেগ ও ক্ষোভ থেকে অনেক কিছু বলছেন। কখনো বলছেন, এ নির্বাচন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের নির্বাচন; কখনো বলছেন, সরকারের চেহারা উন্মোচনের নির্বাচন। আবার এটাও বলছেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না।’
বিএনপির আমলের ১৫ ফেব্রুয়ারি ও মাগুড়ার নির্বাচন স্বরণ করিয়ে লিটন বলেন, এখন সে রকম নির্বাচন হয় না। খুলনা ও গাজীপুর নির্বাচন বিএনপি দেখেছেন। সেখানে অনিয়ম হয়েছে এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তারা দিতে পারেনি। সে দুইটিতে অনিয়ম হলে তারা এ সিটি নির্বাচনে অংশ নিতেন না।’
‘আমি জোর দিয়ে বলছি, আমাদের পক্ষ থেকে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হোক বা কোন অনিয়ম হোক; এমন কোন কাজ আমরা করতে দেব না। আমাদের কর্মীদেরকে ইতোমধ্যেই কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে, অতি উৎসাহী হয়ে কারও কিছু করার দরকার নেই; যাতে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হয়। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সামনে আমার ছোট ভাই মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সঙ্গে কথা বলে নিয়েছি। অতি উৎসাহী কর্মীরা যে দলেরই হোক আমারা যেন তাদের নির্বিত্ত করি।
লিটন আরও বলেন, আটকের বিষয়ে আমার কোন করনিয় নেয়। নির্বাচনের সময় পুলিশ সন্দেহভাজনদের তালিকা তৈরি করে তাদের আটক করে থাকে; এটি পুলিশের বিষয়। কেউ যদি পায়ে পাড়া দিয়ে আমাদের সঙ্গে তর্কে আসে, যুদ্ধে আসে বা ভোটের পরিবেশ নষ্ট করতে আসে তা হলে তার অভিযোগ আমরা দিবই। এ ছাড়া কোন কাজ আমরা করিনি। অন্যায় ভাবে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগও দিইনি।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ১৫/১৬টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তিনি রিটানিং অফিসারের কাছে দিয়েছেন। কিন্তু তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। কাউকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ বা কাউকে নির্লিপ্ত করার নোটিশ দেয়া এমন ঘটনা আমি শুনিনি। কেন তারা এতো গা ছাড়া ভাব দেখাচ্ছেন; এটিই কি নিরোপক্ষতা বলে এমনও প্রশ্ন তুলেছেন লিটন।