শিরোনাম:
●   রাবিপ্রবিতে শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৫ শুরু ●   ৬ ফেব্রুয়ারী কবি শাওনের ৫৮ তম জন্মদিন ●   জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন জরুরি ●   রাউজানে বসতঘর ও মন্দিরে দুর্ধর্ষ চুরি ●   পাঁচখাইন শীলপাড়া একতা সংঘের ১০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ●   কাউখালীতে তৃতীয় লিঙ্গের শীলার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার ●   বাংলাদেশ সাংবাদিক সংস্থা রাজশাহী জেলা শাখার নিবার্চনে নির্বাচিতদের শুভেচ্ছা ●   ফটিকছড়িতে জনপ্রতিধিকে গ্রেফতার ●   হযরত মতিউর রহমান শাহ (রহঃ) এর বার্ষিক ওরশ শরীফ ●   ঝাউদিয়া থানা বাস্তবায়নের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ ●   কোথায় গেলো সেই দিনগুলি : মুহাম্মদ মাসুদ রানা ●   উল্টাছড়ি বাজার চালু করার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা ●   চাঁদাবাজির প্রতিবাদে ঈশ্বরগঞ্জে বিক্ষোভ ●   নবীগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি সালামের বিরোদ্ধে সাটিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগ ●   রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ●   উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নিরাপদ খাদ্য অপরিহার্য ●   পার্বতীপুর জামায়াত যুব বিভাগের উদ্যোগে ফুটবল টুর্নামেন্ট ●   ফটিকছড়িতে ডাকাতি যুবককে কুঁপিয়ে জখম ●   রাজস্থলীতে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত ●   সাব্বির সেন্টু’র উপন্যাস গ্রন্থ ‘স্বপ্নভরা দুটি চোখ’র মোড়ক উম্মোচন ●   মহালছড়িতে ভাইয়ের বিরুদ্ধে সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগ ●   কুষ্টিয়ার আলাউদ্দিন নগরে পিঠা উৎসব ও কৃষি মেলা ●   ঈশ্বরগঞ্জে ভেকু দিয়ে ঘর ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ সাবেক সচিবের বিরুদ্ধে ●   এপিবিএন স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ●   রংধনু ক্লাবের সম্মাননা পেলো সাংবাদিক জনি ●   পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান অনুপ কুমার চাকমা’র যোগদান ●   ফটিকছড়িতে যুবককে পিটিয়ে হত্যা ●   গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনাকে দেশে এনে ফাঁসিতে ঝুলাতে হবে : জামাল ●   নতুন বাংলাদেশে আওয়ামীলীগের ঠাঁই নাই : হুম্মাম কাদের চৌধুরী ●   রাউজানে বিএনপির নেতার পিতার মৃত্যু
রাঙামাটি, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
সোমবার ● ২১ ডিসেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » প্রকৃতি ও পরিবেশ » পলিথিনের উত্‍পাদন ও ব্যবহার বন্ধ করতে হবে
প্রথম পাতা » প্রকৃতি ও পরিবেশ » পলিথিনের উত্‍পাদন ও ব্যবহার বন্ধ করতে হবে
সোমবার ● ২১ ডিসেম্বর ২০১৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পলিথিনের উত্‍পাদন ও ব্যবহার বন্ধ করতে হবে

---

পলিথিন এক ধরণের প্লাস্টিক৷ ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবছর ৩ জুলাই আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক মুক্ত দিবস পালন করা হয়, তবুও প্লাস্টিকের ব্যবহার দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে৷ বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার যোগ্য পলিথিন প্রথম ১৯৩৩ সালে আবিস্কৃত হলেও এর ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা পায় ১৯৫৮ সাল থেকে৷ পরিবেশ অধিদফতরের সূত্রমতে, ১৯৮২ সাল থেকে আমাদের দেশে পলিথিন বাজারজাত ও ব্যবহার শুরু হয়৷ পলিথিন রাসয়নিকভাবে পলিমার জাতীয় পদার্থ থেকে তৈরী৷ ইথিন গ্যাসকে এটিএম চাপ (১০০০-১২০০) প্রয়োগ করে তরলে পরিণত করে সামান্য অক্সিজেন এর উপস্থিতিতে ২০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে ইথিনের অণু যুক্ত হয়ে পলিথিন গঠন করে৷ এককথায় পলিথিন হচ্ছে সাদা, অস্বচ্ছ ও নমনীয় হলেও এক ধরণের শক্ত প্লাস্টিক ৷ এসিড, ক্ষার ও অন্যান্য দ্রাবক দ্বারা আক্রান্ত হয় না৷
‘ম্যান্ডেটরি প্যাকেজিং অ্যাক্ট ২০১০’ আইন অনুযায়ী পাটের বস্তা ব্যবহার না করার অভিযোগে গত ৩০ নভেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর রাত ১০টা পর্যন্ত সাত দিনে সারাদেশের ৬৪ জেলায় পরিচালিত ১৬০টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক হাজার ৬৯৪ মামলা করে ৭১ লাখ ৯১ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে ৷ (শীর্ষ নিউজ, ৬ ডিসেম্বর,’১৫)৷ ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি- এই ৬টি পণ্য মোড়কীকরণে পাটের বসত্মা ব্যবহার বাধ্যতামূলক আইনে বলা হয়েছে, এ আইন অমান্য করলে এক বছরের কারাদন্ড বা ৫০ হাজার টাকা অর্থদ- বা উভয়দন্ডে দন্ডিত করার বিধান রয়েছে৷ একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে দন্ড হয়ে যাবে দ্বিগুণ৷ মূলত শুধু ৬ ধরণের বস্তা বা প্যাকেট নয়, সব ধরণের পলিথিন নিষিদ্ধ আইন হওয়া উচিত৷ সম্প্রতি যেভাবে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধে প্রশাসনের তোড়জোর চলছে তা নিয়মিত অব্যহত থাকবে কিনা তা নিয়েও সংশয় রয়েছে৷ কেননা, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন ২০০২ সালের ১ জানুয়ারি সর্বপ্রথম ঢাকায় পলিথিন নিষিদ্ধ করে৷ একই বছরেরর ১ মার্চ সারা দেশে পলিথিনের উত্‍পাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে৷ আইন অমান্য করে ২০ মাইক্রোনের চেয়ে পাতলা পলিথিন ব্যাগ উত্‍পাদন করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা হিসেবে ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান পাস করে৷ বাজারজাত করলে ৬ মাসের জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান করেন৷ ক্ষমতা পরিবর্তনের আগেই সেই আইন শিথিল হয়ে গিয়েছিল৷ এবারও তেমন হবে কিনা বলা যায় না৷

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, নগরীর মোট বর্জ্যের ৭০-৭৫ শতাংশ হচ্ছে পলিথিন ৷ পলিথিন কিংবা প্লাস্টিকের ব্যাগ পচে মাটির সাথে মিশতে সময় লাগে কমপক্ষে ৪০০ বছর৷ এমনকি মেশার পরও তা মাটির উর্বরতা নষ্ট করে৷ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পলিথিনের ক্ষয় বা বিনাশ নেই৷ এটা পোড়ালে প্রাথমিকভাবে ধ্বংস হয় বটে, কিন্তু এতে কার্বনডাই অক্সাইড, কার্বন মনো অক্সাইড সৃষ্টি হয়ে পরিবেশ দূষণ হয়৷ একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, একটি পরিবার দিনে গড়ে ৫টি পলিথিন ব্যবহার করার পর তার ৪টি পলিথিন কিছু সময়ের ব্যবধানে ফেলে দেন৷ যার ঠাই হয় নর্দমা, ড্রেন, ময়লার ভাগার থেকে নদী পর্যন্ত ৷ দুর্ভোগের নগরী ঢাকায় পানিবদ্ধতা, পানিদূষণ, নদীগর্ভের ইকোসিস্টেম ধ্বংস হচ্ছে পলিথিনের কারণে৷ ‘বুড়িগঙ্গা নদীতে দেখা গেছে ৮ ফুট শুধুই পলিথিনের আস্তরণ৷’৷ বুড়িগঙ্গা-শীতলক্ষায় ২০ কোটিরও বেশি পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যাগ জমা হয়েছে ৷ এতে নাব্য হ্রাস পেয়েছে৷ সাগর ও মহাসাগরের তলদেশেও সঞ্চিত হচ্ছে পলিথিন৷ পরিবেশ আন্দোলনের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতি মাসে সারা দেশে গড়ে ২৫-৩০ কোটি পলিথিন ব্যাগ ব্যবহৃত হচ্ছে ৷ এই সংখ্যাটি প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে৷ বাংলাদেশে প্রতিদিন ১ কোটি ২২ লাখ পলিথিন ব্যবহার হচ্ছে ৷ এক হিসেবে দেখা যায়, প্রতিদিন শুধু ঢাকা শহরেই গড়ে এক কোটি পলিথিন ব্যবহার হয়৷ যার মধ্যে ৯০ লক্ষ ব্যাগই নিক্ষিপ্ত হয় প্রতিদিন৷ ঢাকা শহরের শতকরা আশিভাগ ড্রেন বন্ধের কারণ হচ্ছে পলিব্যাগ৷ জানা যায়, ‘বর্তমানে বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ৬০ মিলিয়ন টন পলিথিন সামগ্রী উত্‍পাদিত হয়৷’ বুড়িগঙ্গাসহ আসে-পাশেরর নদীর তলদেশ থেকে বর্জ্য উত্তোলনের জন্য ইতোমধ্যেই ২০৬ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে ৷ শাসকশ্রেণি যদি পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধে কঠোর ভুমিকা পালন করে আর নাগরিকরা সচেতন হয় তাহলে হয়তো অর্থনৈতিকভাবে দেশ সাশ্রয়ী হবে৷

পলিথিন যেখানে-সেখানে জমে পরিবেশ বিনষ্ট করে৷ পলিথিনের ভিতর দিয়ে আলো-বাতাস বা পানি ঢুকতে পারে না৷ পানি, মাটি ও বাতাস মারাত্মকভাবে দূষিত হয়৷ মাটির উর্বরা শক্তিকেও কমিয়ে দেয়৷ এর ভিতর কোন পঁচনশীল জিনিস রাখলে তা দ্রুত বিষাক্ত হয়ে পড়ে৷ পলিথিন থেকে সৃষ্ট ব্যাকটেরিয়া ত্বকে বিভিন্ন রোগের জন্ম দেয়৷ পলিথিনে মোড়ানো গরম খাবার গ্রহণ করলে ক্যান্সার ও চর্মরোগের সংক্রামণ ঘটতে পারে৷ ৷ পুরাতন পলিথিন পুড়িয়ে মন্ড তৈরী করে এর দ্বারা জর্দ্দার কৌটা ও অন্যান্য প্যাকেজ উপজাত তৈরী করা হচ্ছে৷ এর ফলে পলিথিন পোড়ানো বিষাক্ত ধোঁয়া আমাদের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যকে বিপন্ন করে তুলছে৷ বিষাক্ত ধোঁয়ায় নানা ধরণের চর্মরোগ, শ্বাস কষ্ট, যক্ষা ও হাঁফানীর মতো মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে দেশের মানুষ৷ এমনকি এ ব্যাকটেরিয়া থেকে ডায়রিয়া ও আমাশয় রোগও ছড়াতে পারে৷ মাটির বিভিন্ন স্তরে জমা হযে পানির প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করে৷ অন্যদিকে, উজ্জল রঙের পলিথিনে রয়েছে সীসা ও ক্যাডমিয়াম, যার সংস্পর্শে শিশুদের দৈহিক বৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্থ ও চর্মপ্রদাহের সৃষ্টি হয়৷ পলিথিন উত্‍পাদনকারী ব্যবসায়ীদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট বিভিন্ন সময়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই ব্যবসা করছেন বলে জানা গেছে ৷ লবন, চিনিসহ ২৩ প্রকার প্যাকেজিং পলিথিন উত্‍পাদনের অনুমোদন নিয়ে তারা নিষিদ্ধ পলিথিন উত্‍পাদন করছেন৷ ঢাকার ‘ইসলামবাগ, কামালবাগ, লালবাগ, সোয়ারিঘাট এলাকায় পলিথিন উত্‍পাদনকারী পাঁচ শতাধিক কারখানা রয়েছে৷ এসব কারখানা এলাকায় অপরিচিত কোন লোক প্রবেশ করলেই তাকে নজরদারীতে রেখে ব্যবস্থা নেয়া হয়৷ ১০/১২, ১৯/১১, ২২/১২সহ বিভিন্ন আকারের পলিথিন তৈরীর জন্য শুধু কামালবাগেই আড়াইহাজারেরও বেশি মেশিন আছে ৷’ ৷ অপর তথ্য মতে, ‘শুধু পূরাণ ঢাকায় তিনশতাধিক কারখানায় উত্‍পাদিত হচ্ছে পলিথিন ব্যাগ ও নাইলনের নেটব্যাগ৷’ ৷ বিশেষ করে, রহমতগঞ্জ, হোসেন উদ্দীন দ্বিতীয় লেন, আমলিগোলা, শহীদনগর, দেবীদাসঘাট, খাজেদেওয়ান, কেল্লারমোড়, বেগমবাজার, চকবাজার, বড় কাটরা, ছোট কাটরা, ফরিদাবাদ, মিটফোডর্, কামরাঙ্গীরচরসহ এছাড়া টঙ্গী, গাজীপুর, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, দোহার এলাকায় পলিথিন তৈরী হচ্ছে৷ কারখানাগুলোতে দিনে বৈধ কারবার আর রাতে অবৈধ ব্যবসার কাজ চলছে৷ জাল টাকার নোটের মতো বিভিন্ন সাইজের পলিথিনের ভিন্ন-ভিন্ন রূপক নাম ব্যবহার করে দরদাম নির্ধারণ করার পর সুযোগ বুঝে তা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের মাধ্যমে জরুরি রপ্তানি কাজে নিয়োজিত স্টিকার লাগিয়ে সারাদেশে সরবরাহ করা হয়৷ স্থানীয় প্রভাবশালী ও দলীয় ব্যক্তিদেরকে ম্যানেজ করেই তারা ব্যবসা পরিচালনা করছেন বলে জানা গেছে৷ পলিথিন নিষিদ্ধ হওয়ার আগে ছিল হাতল ওয়ালা পলিথিন আর এখন হাতা ছাড়া পলিথিন৷ আইন হওয়ার সময় বাংলাদেশে যত পলিথিন কারখানা ছিল তার চেয়ে ১০ গুণেরও বেশি কারখানা এখন চালু রয়েছে৷ আমরা কি এগুতে পারলাম? নিশ্চয়ই নয়৷
পলিথিন শপিং ব্যাগ হিসেবে ব্যবহার ক্রেতা ও বিক্রেতা সবার জন্য সহজ মাধ্যম হওয়ায় উভয়ে খুশি থাকেন৷ তাছাড়া, বাজারে ব্যাগ না নিয়ে যাওয়া ক্রেতাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে যে৷ কোন পণ্য ক্রয় করলে তা যদি পলিথিন ব্যাগে না দেয়া হয় তাহলে সে ওই দোকান থেকে কোন কিছু ক্রয় করেন না৷ যে কারণে দোকানি বাধ্য হয়ে পলিথিন ব্যাগ সরবরাহ করেন৷ আরেকটি বিষয় হলো পলিথিনের ব্যাগ অতি হালকা হওয়ায় কোন দ্রব্য মাপ দেয়ার সময় তার ওজন খুব সামান্যই হয়৷ ক্রেতার তেমন ক্ষতি হয়না৷ কিন্তু যখন সে পণ্যটি কাগজের ব্যাগে করে দেয়া হবে তখন ওজন বেড়ে যাবে৷ ক্রেতা পণ্যটি ওজনে কম পাবেন বলে তারা পলিথিনেই আগ্রহী থাকেন৷

পলিথিনের বিকল্প সহজলভ্য কোন পাটের ব্যাগ বাজারে সরবরাহ না থাকায় পলিথিনকেই সহজলভ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে৷ পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে প্রত্যেক ব্যক্তি সচেতন হলে ব্যক্তির পাশাপাশি দেশীয় সম্পদ রক্ষা হবে৷ বিশেষ করে পাট শিল্প এগিয়ে যাবে৷ বিগত দিনে পাটের নেতিবাচক ব্যবহারের ফলে পাটের উত্‍পাদন ও রপ্তানি কমে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে ৪৫ টি পাটকল৷ পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ হলে অতিরিক্ত প্রায় ৮০ কোটি পাটের বস্তা লাগবে৷ তথ্যানুযায়ী, দেশের পাটের উত্‍পাদন হয়, ৭০ থেকে ৮০ লক্ষ বেল (২শ কেজি) পাট৷ এর মধ্যে ৪০ লক্ষ বেল পাট দেশের বিভিন্ন পাটকলে সূতা ও চট তৈরীতে ব্যবহার করা হয়৷ ১৫-২০ লৰ বেল কাঁচাপাট মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়৷ পাটের ব্যবহার বাড়লে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি পাট চাষি উপকৃত হবে৷ তাছাড়া সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার কাজের সুযোগ সৃষ্টিসহ দেশীয় পাটকলগুলো সচল থাকবে৷ ৫০ কেজি চালের একটি চটের বস্তার দাম ৬০ টাকা৷ আর এমন ধরণের একটি প্লাস্টিকের বস্তার দাম পড়ে মাত্র ১৫ টাকা৷ কীভাবে চটের ব্যাগের কমিয়ে সহজলভ্য করা যায় সে বিষয়ে কতৃপক্ষের ভেবে দেখা দরকার৷ যদিও ইতোমধ্যে দেশের ২৬ টি মিলে পাটের ব্যাগের দাম বস্তা প্রতি ১০ টাকা কমানো হয়েছে, তবুও তা যথেষ্ট নয়৷ পাটের ব্যাগের দাম আরো কমানো উচিত৷

পলিথিন ও প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে কাপড়ের ব্যাগ, পাটের ব্যাগের ব্যবহারে জনসাধরণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে সুনির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী৷ যেসব মালিকদের পলিথিন উত্‍পাদনের কারখানা রয়েছে তাদেরকে পাটের ব্যাগ তৈরীর মেশিন ক্রয়ে ঋণের ব্যবস্থা করা হলে তারা আগ্রহী হবে৷ উত্‍পাদনের সাথে জড়িত শ্রমিকদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে পাটের ব্যাগ তৈরীর জন্য প্রস্তুত করা না হলে তারা জীবাকার তাগিদে যে কোন মূল্যে পলিথিন উত্‍পাদন করবে৷ এজন্য যত বিকল্প পথ আছে তারা সেটা করবে৷ কিন্তু কারখানা বন্ধ করতে হবে৷ নতুন করে কোন পলিথিন শপিং ব্যাগ উত্‍পাদনের জন্য অনুমতি দেয়া চলবে না৷ দেশের সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পলিথিন আসতে না পারে সেটিও নজরদারিতে রাখতে হবে৷ কাগজের ব্যাগ ও ঠোঙ্গা সহজলভ্য করার জন্য উদ্যোগ নেয়াসহ মনিটরিং টিম বাড়াতে হবে এবং অভিযান অব্যহত রাখতে হবে৷ পলিথিন যেভাবে ভিন্ন ভিন সাইজ ও ডিজাইনের হয়ে থাকে তেমনি পাট ও কাগজের দ্বারা ছোট, মাঝারি, বড় সব রকমের ব্যাগ তৈরী করতে হবে৷ কাগজ ও পাটের ব্যাগের দাম সাধারণত পলিথিনের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে৷ তাই প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে হলেও মানসম্মত ব্যাগ তৈরী করতে হবে৷ ফলে সাধারণ মানুষ পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারে নিরুত্‍সাহী হবে৷ পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে সারাদেশে ক্যাম্পেইন, মাইকিং, পোস্টার, লিফলেট বিতরণ করতে হবে৷ প্রতিটি মহলস্নায় ছোট-বড় সব ধরণের দোকানে অভিযান পরিচালনাসহ শপিংমল থেকে ফুটপাতের অস্থায়ী দোকানসহ সর্বত্র যাদের কাছেই পলিথিন পাওয়া যাবে সকলকে জরিমানার আওতায় নিয়ে আসলে হয়তো এর ব্যবহার কমবে৷ সর্বোপরি, আমরা মনে করি আইন করা যথেষ্ঠ নয়, বাস্তবায়ন করাটাই হলো সফলতা৷

লেখক: মুহাম্মদ আবদুল কাহহার
শিক্ষক ও কলামিষ্ট,
ই-মেইল :[email protected]





প্রকৃতি ও পরিবেশ এর আরও খবর

রাঙামাটির রাজস্থলীতে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান রাঙামাটির রাজস্থলীতে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান
আত্রাই ছোট যমুনা নদীর দু’তীরে সবুজের সমারোহ আত্রাই ছোট যমুনা নদীর দু’তীরে সবুজের সমারোহ
রাঙামাটির  লংগদুতে অবৈধ  ইটভাটা বন্ধে অভিযান রাঙামাটির লংগদুতে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে অভিযান
রাঙামাটির কাউখালিতে তিনটি অবৈধ ইটভাটা বন্ধের অভিযান রাঙামাটির কাউখালিতে তিনটি অবৈধ ইটভাটা বন্ধের অভিযান
ভরাট হওয়া রাউজান খাল এখন কৃষকের গলার কাঁটা ভরাট হওয়া রাউজান খাল এখন কৃষকের গলার কাঁটা
খেজুর গাছের দায়িত্ব নিলো মানুষ যে সেচ্ছাসেবী নামের সংগঠন খেজুর গাছের দায়িত্ব নিলো মানুষ যে সেচ্ছাসেবী নামের সংগঠন
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে বিলীন হচ্ছে কৃষি জমি ও ঘরবাড়ি অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে বিলীন হচ্ছে কৃষি জমি ও ঘরবাড়ি
রাউজানে চার ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর রাউজানে চার ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর
টানা দুই দিনের ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে কক্সবাজার : পাহাড় ধসে ছয়জনের মৃত্যু টানা দুই দিনের ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে কক্সবাজার : পাহাড় ধসে ছয়জনের মৃত্যু
বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেছে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেছে

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)