মঙ্গলবার ● ৭ আগস্ট ২০১৮
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » উদ্বিগ্ন উৎকণ্ঠার মাঝে আত্রাইয়ের কৃষক : ভারী বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
উদ্বিগ্ন উৎকণ্ঠার মাঝে আত্রাইয়ের কৃষক : ভারী বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
আত্রাই প্রতিনিধি :: (২৩ শ্রাবণ ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.০৫মি.)নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় গত কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণে ও উজানের ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মাঠে মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় আমন চাষ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে কৃষকরা। এতে উপজেলার কয়েকটি মাঠে শতাধিক হেক্টর জমির রোপণকৃত ধান পানির নিচে তলে গেছে। এ ছাড়া প্রায় ৮ হেক্টর বীজতলাও ডুবে গেছে। এদিকে পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে এলাকায় ধানের চারার সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে এমনটি মনেকরছেন কৃষকেরা।
আত্রাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মৌসুমের শুরু থেকেই বৃষ্টির অভাবে ধান রোপণে কিছুটা দেরি হলেও উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে শ্যালো মেশিনের পানি দিয়ে ধান রোপণ শুরু করে কৃষকরা। গত কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণের ফলে আগাম বন্যার আশংকায় হাল ছেড়ে দিয়েছেন।
উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহের টানা ভারী বর্ষণে উঁচু জমি ব্যতিত অপেক্ষাকৃত নিচু, নদী সংলগ্ন কিংবা বিল এলাকার ধান ক্ষেতগুলো এখন পানির নিচে নিমজ্জিত। উপজেলার ১নং শাহাগোলা ইউনিয়নের শাহাগোলা, চাপড়া, বহলা, ঝনঝনিয়া, ছোটডাঙ্গা, কয়সা, ভবানীপুর। ভোঁপাড়া ইউনিয়নের জামগ্রাম, শিমুলিয়া, আহসানগঞ্জ ইউনিয়ন ও মনিয়ারি ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকার মাঠ প্লাবিত হয়েছে। এতে সদ্য রোপণকৃত শতাধিক হেক্টর জমির ধান ও প্রায় ৬ হেক্টর জমির বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া দুই দিন ধরে উজান থেকে নেমে আসা বৃষ্টিপাতের ঢলের পানিতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে করে উপজেলার কৃষকরা তাদের রোপনকৃত আমন ধান এবং অবশিষ্ট চাষকৃত জমি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।
শাহাগোলা গ্রামের কৃষক আজাদ সরদার বলেন, চলতি আমন মৌসুমে খরার কারণে ধান রোপন করা কিছুটা দেরিতে হলেও আমরা সেচ দিয়ে জমি প্রস্তুুত করেছিলাম এবং কিছু জমিতে ধান রোপনও করেছিলাম কিন্তু কয়েকদিনের টানা বর্ষনে ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে সেই সব ধান এখন পানির নিচে। পানি নেমে গেলে আবার এই সব জমিতে নতুন করে ধান রোপন করতে হবে। এতে করে লাভের চেয়ে লোকসানই বেশি বলে আমি আশঙ্কা করছি।
উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো: সাজ্জাদ হোসেন বলেন, যে সব ধান এখন পানির নিচে সেই সব জমি থেকে পানি নেমে গেলে আবার ধান রোপন করতে হবে। তবে কিছু ধানের জাত আছে যেগুলো একটু দেরিতে রোপন করতে হয় সেই সব ধান যদি কৃষকরা পুনরায় রোপন করেন তাহলে এই লোকসানটা কৃষকরা কিছুটা হলেও পূরন করতে পারবেন।
এ ব্যাপারে আত্রাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের উপর মানুষের কোন হাতে নেই। যেখানেই সমস্যা সেখানেই আমাদের উপস্থিতি এবং সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। বর্তমান অবস্থায় করনীয় সম্পর্কে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত আমাদের কৃষি কর্মকর্তারা পরামর্শ দিয়ে আসছেন। পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার ধান রোপন করলে তেমন একটা ক্ষতির মধ্যে কৃষকরা পড়বেন না। ধান রোপনে একটু দেরি হলেও ফলনের কোন তারতম্য হবে না।