রবিবার ● ১৯ আগস্ট ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বগুড়ায় শেষ মুহুতে জমে উঠেছে কোরবানী পশু’র হাট
বগুড়ায় শেষ মুহুতে জমে উঠেছে কোরবানী পশু’র হাট
বগুড়া প্রতিনিধি :: (৪ ভাদ্র ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৩৫মি.) আসন্ন আর মাত্র ২দিন পর পবিত্র ঈদ উল আযহা। মুসলমান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে প্রিয় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র কোরবানী’র ঈদকে সামনে রেখে বগুড়া জেলা’সহ গাবতলীতে শেষ মুহুতে জমে উঠেছে পশু’র হাট। গতবছরের তুলনায় এ বছরে বিদেশী গরু-ছাগল আমদানী হলেও দেশী গরু-ছাগলের চাহিদা সবচেয়ে বেশী ছিল। বেশীর ভাগ ক্রেতা কিনছেন দেশী গরু-মহিষ ও ভেড়া-ছাগল। ফলে আশানুরুপ মূল্যে থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গরু ব্যবসায়ী ও খামাররা। দুর-দরন্ত থেকে অনেক ক্রেতা-বিক্রেতা’র সমাগমে জমে উঠছে পশুর হাটগুলো। গত শুক্রবার কাগইল করুণা কান্ত উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পশুর হাটে ব্যাপক বেচা কেনা হয়েছে। পছন্দ মতে ক্রয়-বিক্রয় করেছে সবাই। মাঝারি গরু’র দামটা একটু বেশী হলেও ছাগলের দাম ছিল তুলনামূলক ভাবে কম। ফলে দাম কম হলেও ব্যবসায়ী’সহ খামারীরা বিক্রি করেছে পশুদের। এতে করে কিছুটা হলেও ব্যবসায়ীদের লাভ কম হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গরু ব্যবসায়ীরা। উপজেলার কাগইল, পীরগাছা, ডাকুমারা, সুখানপুকুর, কদমতলী, নাড়ুয়ামালা, মহিষাবান, পেরীহাট, দূর্গাহাটা, তরুনীহাট ও বাগবাড়ী পশুর হাট জমে উঠেছে। এছাড়াও ইউনিয়ন ভিত্তিক পশুর হাট বসেছে। কাগইল হাট ইজারাদার মো. দুলাল আকন্দ ও হাটের পরিচালক কাগইল ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিকরাইল ইসলাম সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, এলাকার অধিকাংশ মানুষ কৃষির উপর নিভরশীল। ফলে তারা স্থানীয় কাগইল হাট থেকে কোরবানী জন্য পশু কিনেছেন। বেচা কেনাও ভাল হয়েছে। ক্রেতা আব্দুল মোত্তালিব জানান, ৬০হাজার টাকায় একটি গরু কিনেছি। কাগইল পশুর হাট নিয়মিত হলে হাট আরো জমে যাবে। খামারী রাকিব হাসান সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, পশু লালন পালন করতে যে টাকা খরচ হয়েছে। এখন সে টাকাও উঠছে না। এদিকে গরু ব্যবসায়ীরা জানান ভিন্ন কথা তারা বলেন, এ বর্ষায় চারিদিকে বন্যা হওয়ায় কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও গতবোরো মৌসুমে কৃষকরা ধানের ন্যার্যমূল্যে না পাওয়া সেই প্রভাব পড়েছে পশুর হাটে। কাগইল হাটে গরু কিনতে আসা সাংবাদিক আব্দুল বাসেদ ও আতাউর রহমান সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, এ বছরে খাজনা পরিমান বেড়েছে। প্রতিটি গরু ৫শ টাকা ও ছাগল-ভেড়া ২শ ৫০টাকা নেওয়া হচ্ছে। এমনকি বিক্রি করতে আসা গরু-মহিষের মালিকদের নিকট থেকে প্রতিটি গরু ১শ টাকা ও ছাগল-ভেড়া ৫০টাকা করে খাজনা (টোল) আদায় করা হয়েছে। তারা আরো জানান, গতহাটের চেয়ে শুক্রবার হাটে পশুর দামটা বেশী ছিল। পুলিশের টহল ছিল ফলে ক্রেতা-বিক্রেতারা নিরাপদে কোরবানী পশু কেনাবেচা করেছে। এদিকে ডাকুমারা হাটের ইজারাদার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ হাসান রানা জানান, পুলিশ মোতায়ন করার ফলে হাটে ভালভাবে পশু বেচাকেনা হয়েছে। ডাকুমারা পশুর হাট প্রতি রবিবার হয়ে থাকে। এদিকে পশুর হাটে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সাথে কেউ জেন প্রতারনা করতে না পারে সে জন্য জাল টাকার সনাক্তকরণে স্থানীয় ব্যাংক গুলো সনাক্তকরণ মিশিন বসানো হয়েছে। পশুর স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে গাবতলী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মোস্তফা ও ভেটানারি সার্জন ডা. মো. একরামুল হক মন্ডলের নের্তৃত্বে কোরবানী পশুর হাটে পশুর স্বাস্থ্য পরিক্ষা ও তদারকি করা হচ্ছে। এ কাজে সহযোগিতা করছেন ভিএফএ ও স্বেচ্ছাসেবকগণ। কাগইল ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃত্রিম প্রজনন সহকারী জাহিদুল ইসলাম সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, কাগইল পশুর হাটে পশুর স্বাস্থ্য পরিক্ষা ও তদারকি করার জন্য সকাল থেকে রাঁত পর্য়ন্ত ছিলাম। ক্রেতাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গাবতলী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মোস্তফা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, গাবতলীতে ভেটেরিনারি ২টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। মেডিক্যাল টিম বিভিন্ন পশুর হাটে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগে কোরবানীর জন্য সকল পশু সুস্থ সবল ও রোগমুক্ত রয়েছে কি না সে জন্য পরিক্ষা ও তদারকি করা হচ্ছে। এদিকে হাটগুলোর নিরাপত্তা দেওয়া জন্য মোতায়ন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য। হাটে গরু চোর ও নকল (জাল) টাকা সনাক্তকরণে (প্রতিরোধে) গাবতলী মডেল থানা ওসি মোঃ খায়রুল বাসার জানান, আমরা গাবতলী উপজেলার বিভিন্ন পশুর হাট-বাজারে ব্যাপক প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, সু-শৃংঙ্খল ভাবে হাটে কোরবানী’র পশু বেচা-কেনার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। আশাকরছি সবাই সুন্দর ভাবে পবিত্র ঈদ উল আযহা উদযাপন করতে পারবেন। এ জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।