শনিবার ● ২৫ আগস্ট ২০১৮
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনার ৭৮ কি.মি. তীর: সংরক্ষণ আছে মাত্র সাড়ে ৯ কি.মি.
ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনার ৭৮ কি.মি. তীর: সংরক্ষণ আছে মাত্র সাড়ে ৯ কি.মি.
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: (১০ ভাদ্র ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.৩৩মি.) গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনা নদীর ৭৮ কিলোমিটারের মধ্যে গত ৪৬ বছরে নদীর তীর (স্থায়ীভাবে সিসি ব্লক দ্বারা) সংরক্ষণ করা হয়েছে মাত্র সাড়ে ৯ কিলোমিটার এলাকায়। গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার এই তিন নদীর তীর সংরক্ষণে সবচেয়ে কম কাজ হয়েছে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়, মাত্র ৪৯৫ মিটার। তাই নদীভাঙ্গনরোধে স্থায়ীভাবে আরও নদীর তীর সংরক্ষণের দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা যায়, নদীভাঙ্গন ঠেকাতে নদীর তীর সিসি ব্লক দ্বারা (স্থায়ীভাবে) সংরক্ষণ ও জিও টেক্সটাইল ব্যাগে বালু-সিমেন্ট মিশ্রিত করে প্রতিরক্ষা কাজ (অস্থায়ীভাবে) করা হয়। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার আওতাধীন ৭৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনা নদীর তীর স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের কোন কাজই করা হয়নি। পরে প্রায় ২৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নদীর তীর স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে মাত্র সাড়ে ৯ কিলোমিটার এলাকায়। এরমধ্যে সবচেয়ে কম কাজ হয়েছে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় আর বেশি কাজ হয়েছে সাঘাটা উপজেলায়। এ ছাড়া নদীর তীর প্রতিরক্ষা কাজ করা আছে প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকায়। স্থায়ীভাবে ১৯৯৭ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত পুরাতন ফুলছড়ি হেডকোয়ার্টার এলাকায় ৩০০ মিটার, ১৯৯৯ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা বাজার রক্ষায় ৪৯৫ মিটার, ২০০৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত পুরাতন ফুলছড়ি হেডকোয়ার্টার এলাকায় ১০০০ মিটার ও সদর উপজেলার কামারজানী বাজার এলাকায় ১০৪৩ মিটার, ২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সদর উপজেলার বাগুড়িয়া এবং ফুলছড়ি উপজেলার সৈয়দপুর, কঞ্চিপাড়া ও বালাসীঘাট এলাকায় ১৮৭২ মিটার, ২০১০ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত সাঘাটা বাজার এলাকার ৪৭৮৯ মিটারের মোট সাড়ে ৯ কিলোমিটার এলাকা নদীর তীর স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা হয়। বর্তমানে ফুলছড়ি উপজেলার বালাসীঘাট এলাকায় ১৩০০ মিটার, রতনপুর-সিংড়িয়া-কাতলামারী এলাকায় ২২০০ মিটার ও পুরাতন ফুলছড়ি হেডকোয়ার্টার গণকবর এলাকায় ৭০০ মিটার এবং সদর উপজেলার বাগুড়িয়া এলাকায় ৩০০ মিটারের মোট সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকা নদীর তীর স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের কাজ চলমান রয়েছে।
জানা গেছে, গত ১৪৬ বছরে গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলাবেষ্টিত ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনা নদীর তীর প্রায় ৫৪৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকা ভেঙ্গেছে আর নদীভাঙ্গনের শিকার হয়েছে প্রায় চার লাখ মানুষ। ৪৬ বছরে মাত্র সাড়ে ৯ কিলোমিটার এলাকা নদীর তীর স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ হয়েছে যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। তাই এসব এলাকার নদীভাঙ্গনরোধে আরও বেশি বেশি স্থায়ী প্রকল্প গ্রহন করতে হবে।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, বর্তমানে ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনা নদীর তীর সাড়ে ৯ কিলোমিটার এলাকায় স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা আছে। এ বছর আরও সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকা স্থায়ীভাবে নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া সদর উপজেলাসহ ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলায় আরও ১০.৬০ কিলোমিটার এলাকা নদীর তীর সংরক্ষণের দুইটি প্রকল্প দাখিল করা হয়েছিল। সেগুলো ফেরত এসেছে, সংশোধনের পর আবারও পাঠানো হবে।