সোমবার ● ২৭ আগস্ট ২০১৮
প্রথম পাতা » নওগাঁ » আজিম মামার বাহারী স্বাদের পান
আজিম মামার বাহারী স্বাদের পান
আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: (১২ ভাদ্র ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.৪১মি.) এক সময় সদর ঘাটের পানের কথা শোনা গেলেও এখন নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ব্রজপুর বাজারের আজিম মামার মনকাড়া বাহারী স্বাদের পান নজর কেড়েছে আত্রাই উপজেলাবাসীর।
যদি সুন্দর একটা মুখ পাইতাম মহেসখালীর পানের খিলি তারে বানাই খাওয়াইতাম কিংবা পালের লাও পালের লাও পান খেয়ে যাও, ঘরে আছে ছোট বোনটি তারে নিয়ে যাও। পান নিয়ে এমন আরও অনেক গান, কবিতা ,প্রবাদ আছে যা আমাদের সাহিত্য ভান্ডার কে করেছে সমৃদ্ধ।
সরেজমিনে আজিম পান ষ্টলের মালিক আজিম হোসেনের সাথে আলাপচারিতায় জানা যায়, প্রতি খিলি পানের দাম ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। শাহজাদী ১০ বেনারশ ১৫ আর বোম্বে মাসালা খিলি বিক্রি হয় ৩০ টাকায়। পানে কী মসলা ব্যবহার করেন এমন প্রশ্ন করতেই মুচকি হাসেন আজিম মামা। তার পর বলতে থাকেন দম না নিয়েই কয়েক ডজন স্বাদ বৃদ্ধিকারী মসলার নাম এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মোরব্বা, খেজুর, খোরমা, তানশিন, তেরেঙ্গা, চমন বাহার, এলাচ, নারিকেল, কিসমিস, সেমাই, ঝুড়া ইত্যাদি। তিনি বলেন, এসব মসলার সবক’টি দেশে পাওয়া যায় না। বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আর এই বাহারী মসলার স্বাদের কারনেই তার দোকানের বিশেষত্ব।
আজিম মামার পান ষ্টলে পান খেতে আসা ব্রজপুর গ্রামের মেহেদী হাসান রুবেলের সাথে কথা বললে তিনি মৃদু হেসে জানালেন, আমি তো আজিম মামার দোকানের পান ছাড়া অন্য কারো দোকানের পান খাইনা। আমি প্রয় ৬-৭ বছর ধরে এই দোকানের পান খেয়ে আসতেছি। তার বানানো পান আমার মুখে অন্য রকম একটা স্বাদ এনে দেয়।
পার্শ্ববর্তী বাগমারা উপজেলা থেকে ব্যক্তিগত কাজে ব্রজপুর বাজারে এসেছেন মজিবর রহমান কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে আজিম মামার দোকানে এসেছেন পান কিনতে শাহাজাদী একটি পান মুখে দিয়েছেন এবং দুই খিলি পান কাগজে মুড়ে নিয়েছেন বাসায় নিয়ে যাবেন বলে। তিনি বলেন আমি যখনই ব্রজপুরে আসি আজিমের দোকানের বাহারী মসলা দিয়ে পান না খেলে আমার অপূর্নতা থেকে যায়। আর দুই খিলি পান নিয়ে যাচ্ছি বাসায় গিয়ে খাবো।
পান বিক্রেতা আজিম মামার সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি প্রায় ২০ বছর যাবৎ পান বিক্রি করে আসছি প্রতিদিন প্রায় ১৫ থেকে ১৮ বিরা পান বিক্রি হয়। তিনি আরও জানান , অনেক মানুষ আসে আমার দোকানে পান খেতে মাঝে মাঝে এত ভিড় হয় যে একা হিমসিম খেয়ে যাই। পান বিক্রি করেই পরিবারের সদস্যদের খরচ যোগান। লেখা পড়া করে সন্তানেরা চাকুরি করবে তবেই আমার পরিশ্রম সার্থক হবে।
প্রচলিত নানা গল্পগাথায় রাজ-রাজাদের পানবিলাসের বর্ণনা মেলে। সেসব পান সাজানো হতো দুর্লভ সব মসলা দিয়ে। মেশানো হতো বহুমূল্য সুগন্ধি। আত্রাই উপজেলার ব্রজপুর বাজারের আজিম হোসেনের শাহী পান, বেনারশি পান, বউ জামাই পান, মোম্বাই পানসহ নানা ধরনের হরেক রকমের পান সকলের মন জয় করেছে এবং করবে এমনটি প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।