রবিবার ● ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধা জেলার ঐতিহাসিক স্থাপনা
গাইবান্ধা জেলার ঐতিহাসিক স্থাপনা
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: (১৮ ভাদ্র ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.৪৪মি.) অনেকেই আছেন যারা জানতে চান শেকড়ের কথা, ইতিহাস-ঐতিহ্যের কথা। দেখতে চান ঐতিহাসিক সব স্থাপনা। এমন ভ্রমণপ্রিয় মানুষরা ঘুরে আসতে পারেন গাইবান্ধার জেলা শহরের গোবিন্দগঞ্জ, সাদুল্লাপুর, সুন্দরগঞ্জ ও সাঘাটা উপজেলার রাজপ্রাসাদ, জমিদার ও জোতদার বাড়ীগুলো থেকে।
রাজা বিরাট প্রাসাদ : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাহার ইউনিয়নের রাজা বিরাট এলাকায় অবস্থিত এই রাজপ্রাসাদ। এখন রাজপ্রাসাদটি আর দেখার মতো নেই। বহুবছর আগেই প্রাসাদটি মাটির নিচে ডেবে গেছে। এই প্রাসাদটির উপরের অংশ এখনো দেখা যায়। তবে সেটি দেখতে শুধুমাত্র একটি মাটির ঢিবি মাত্র। এ ছাড়া এই রাজপ্রাসাদটির ইট দেখা যায় বাহিরে থেকে। প্রচলিত আছে যে, এই রাজার কারণে গাইবান্ধা মহকুমাকে জেলা হিসেবে ঘোষণার সময় নামকরণ করা হয় গাইবান্ধা জেলা। ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের গোবিন্দগঞ্জ চৌমাথা এলাকা থেকে পশ্চিম দিকে সিএনজিযোগে সরাসরি যাওয়া যাবে।
বর্ধনকুঠি : এটি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শহরের সরকারি কলেজের সাথে অবস্থিত। সুদূর প্রাাচীনকাল থেকে বর্ধনকুঠি তৎকালীন রাজা-বাদশাহদের গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ইউনিট ছিল। ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে রাজা রামপাল এখানে বাসুদের মন্দির নির্মাণ করেন। তখন রাজা মানসিংহ বাংলার সুবাদার ছিলেন। ইংরেজ আমলে তা জমিদার বাড়ী হিসেবে খ্যাতি পায়। সর্বশেষ এই বর্ধনকুঠির সাথে জড়িত সৈলেশ চন্দ্র নামটি পাওয়া যায়। ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চৌমাথায় নেমে পূর্বদিকে মহিমাগঞ্জ সড়কের উত্তর পাশে অবস্থিত এই বর্ধনকুঠিতে রিক্সাযোগেই যাওয়া যায়। ১৯৬৫ সালে বর্ধনকুঠির এই জায়গায় গড়ে উঠেছে গোবিন্দগঞ্জ কলেজ।
নলডাঙ্গা জমিদার বাড়ী : এটি সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের কালীবাড়ী পাড়া গ্রামে। উপমহাদেশের প্রখ্যাত নাট্যকার-শিল্পী, চলচ্চিত্রকর তুলসী লাহিড়ীর জমিদার বাড়ীটিও নিঃচিহ্ন হওয়ার পথে। বর্তমানে জমিদার তুলসী লাহিড়ীর বংশধররা থাকেন এই বাড়ীতে। গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে ট্রেনযোগে নলডাঙ্গা রেলস্টেশনে নেমে যাওয়া যায় এই জমিদার বাড়ীতে। যা স্টেশনের পশ্চিম-উত্তর দিকে অবস্থিত।
কামারপাড়া প্যারীমাধবের জোতদার বাড়ী : প্যারীমাধবের জোতদার বাড়ী সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব কেশালীডাঙ্গা গ্রামে কামারপাড়া ডিগ্রি কলেজের সাথে অবস্থিত। তার বিশাল জমি-জমার
মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। তাই শিক্ষানুরাগী হিসেবে প্যারীমাধব সরকারের নামটি ছড়িয়ে রয়েছে এই এলাকায়। ২০১০ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে থাইল্যান্ডের রাজকন্যা মাহা চাক্রী শিরিনধর্ন এই জোতদার বাড়ীটি পরিদর্শন করে গেছেন। গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে ট্রেনযোগে কামারপাড়া রেলস্টেশনে নেমে যাওয়া যাবে এই জোতদার বাড়ীতে। যা স্টেশনের পূর্ব-উত্তর দিকে অবস্থিত।
রামজীবন জোতদার বাড়ী : জোতদার ইয়াকুব উদ্দিন সরদার থাকতেন এই বাড়ীতে। বাড়ীটিতে কেউ না থাকলেও এখন আশেপাশে নতুন বাড়ী তৈরি করে থাকেন তার বংশধররা। রয়েছে একটি শিয়া মিনারও। এই জোতদার বাড়ীটি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের কাশদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন কাশদহ গ্রামে অবস্থিত। গাইবান্ধা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহর থেকে সিএনজি ও অটোরিক্সা দিয়েই যাওয়া যায় এই জোতদার বাড়ীতে।
হাটভরতখালী জোতদার বাড়ী : যমুনা নদীর তীরে সাঘাটা উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়নের হাটভরতখালী এলাকায় কালের স্বাক্ষী হিসেবে এখনো টিকে রয়েছে এই জোতদার বাড়ীটি। অনেক আগেই এই জোতদারের বংশধররা ভারতে চলে গেছেন বলে জানান স্থানীয়রা। এই জোতদার বাড়ীর সাথে রমনীকান্ত রায় বাহাদুর নামটি পাওয়া যায় গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে সিএনজিযোগে বাদিয়াখালী-উল্যাবাজার হয়ে সরাসরি যাওয়া যাবে হাটভরতখালীর এই জোতদার বাড়ীতে। গাইবান্ধা পৌর এলাকার ভিএইড রোডের মুন্সিপাড়ার সিএনজিস্ট্যান্ড থেকে জনপ্রতি লাগবে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা করে। এ ছাড়া যেকোন ট্রেনযোগে বোনারপাড়া জংশনে নেমে সিএনজিযোগে বোনারপাড়া কলেজের সামনে দিয়ে যাওয়া যাবে এ বাড়ীতে।