সোমবার ● ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » গাজিপুর » বন্ধুর প্যান্টের বেল্ট গলায় বেঁধে বন্ধুকে শ্বাসরোধে হত্যা
বন্ধুর প্যান্টের বেল্ট গলায় বেঁধে বন্ধুকে শ্বাসরোধে হত্যা
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: (১৮ ভাদ্র ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.২৪মি.) গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার প্রহ্লাদপুর গ্রামের বনখড়িয়া এলাকায় শালবনের ভেতর থেকে গত ১০ আগস্ট শুক্রবার রাসেল মোল্লা নামের এক পোশাক শ্রমিকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
হত্যার ঘটনায় জড়িত দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ ৩ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়।
লাশ উদ্ধারের পর নিহতের মা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা করেন। নিহত রাসেল মোল্লা রাজেন্দ্রপুরের ডার্ট কম্পোজিটের অপারেটর ছিলেন। গত ৮ আগস্ট বুধবার কারখানা ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন তিনি।
মামলার পরপরই তার হত্যার রহস্য উদঘাটনের জন্য মাঠে নামে পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ২ সেপ্টেম্বর রবিবার শ্রীপুর উপজেলার রাজেন্দ্রপুর বাজার থেকে হত্যার ঘটনায় জড়িত আল মামুনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী রাতেই ওই গ্রামের ইমান হোসেনকে শ্রীপুর উপজেলা চৌরাস্তা বাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়। তারা ওই এলাকায় ভাড়া থেকে রাজমিস্ত্রির কাজ করত। গ্রেফতারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার কথা স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দেয়।
শ্রীপুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম মোল্লা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, আল মামুন ও ইমাম হোসেনদের বাড়ি একই গ্রামের হওয়ার সুবাদে গাজীপুর সদর উপজেলার রাজেন্দ্রপুর বাজার আরপি গেটে বাসা ভাড়া নিয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করত। রাসেল মোল্লা ও আল মামুন আগে গার্মেন্টে কাজের সুবাদে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। এ সময় আল মামুনের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নেয় রাসেল মোল্লা। তবে সময়মতো টাকা না দেয়ায় তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়।
গত ৮ আগস্ট বুধবার বিকেলে আল মামুন পাওনা টাকার জন্য ফোন করলে তাকে রাজেন্দ্রপুর বাজারে আসতে বলে বন্ধু রাসেল মোল্লা। পরে আল মামুন তার সহযোগী ইমনকে সঙ্গে নিয়ে রাজেন্দ্রপুর বাজারে আসে এবং পরিকল্পনা করে একটি হাতুড়ি কেনে ইমান আলী ইমনের কোমরে লুকিয়ে রাখে।
রাত ৭টার দিকে রাজেন্দ্রপুর বাজারে তাদের দেখা হয়। এ সময় আল মামুনকে পাওনা টাকা দেবে বলে তার সঙ্গে তাদের বাড়িতে যেতে বলে রাসেল মোল্লা। তারা তিনজন রাজেন্দ্রপুর রেলস্টেশন থেকে হেঁটে রাসেল মোল্লার বাড়ি যাওয়ার পথে রাস্তায় তাদের বাকবিতন্ডা হয়।
একপর্যায়ে আল মামুন ও তার বন্ধু ইমন মিলে রাসেল মোল্লাকে ভাওয়াল বনের ঝোঁপের ভেতর নিয়ে হাতুড়ি দিয়ে কপাল, মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানের আঘাত করে।
এ সময় রাসেল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ইমাম হোসেনের প্যান্টের বেল্ট খুলে গলায় বেঁধে রাসেলের মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা। পরে রাসেলের সঙ্গে থাকা মোবাইল ও বেতনের ৭ হাজার টাকা নিয়ে যায় তারা।
এসআই শহিদুল ইসলাম মোল্লা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, তাদের গ্রেফতারের পর আজ সোমবার সকালে অভিযান চালানো হয়। এ সময় তাদের দেয়া তথ্যমতে ঘটনাস্থল থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়।
আজ সোমবার দুপুরে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়।