বুধবার ● ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » লামায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রুপের দিন দুপুরে দোকান লুট : সেনা ক্যাম্প স্থাপনের দাবী
লামায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রুপের দিন দুপুরে দোকান লুট : সেনা ক্যাম্প স্থাপনের দাবী
বান্দরবান প্রতিনিধি :: (২১ ভাদ্র ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সকাল ৮.৪৩মি.) বান্দরবানের লামা উপজেলার মেরাখোলায় একটি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রুপ দিন দুপুরে ১৭টি দোকানে লুটপাট চালিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে উপজেলার লামা সদর ইউনিয়নের মেরাখোলা বাজার ও ছোটবমু এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ঘটনার পর ইউনিয়নের, মেউলারচর, বরিশাল পাড়া, এম. হোসেন পাড়া, চিউনি পাড়া, লণ ঝিরি, ঠাকুরঝিরি, বেগুনঝিরি, পাহাড়পাড়া, ছোটবমু, আশ্রয় প্রকল্প, মেরাখোলাসহ পুরো ইউনিয়নের মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ওই এলাকায় একটি সেনাবাহিনী ক্যাম্প স্থাপনের দাবী জানান এলাকাবাসীরা।
সন্ত্রাসীরা লুটপাট ও হামলা শেষে ফিরে যাওয়ার সময় ইউনিয়নের নকশা ঝিরি নামক স্থানে সেনাবাহিনীর সাথে পাহাড়ি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের সাথে শতাধিক রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। খবর পেয়ে দ্রুত সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে আলীকদম সেনাবাহিনীর জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল মাহাবুবুর রহমান পিএসসি সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ৩টি সেনাবাহিনী”র টিম প্রেরণ করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর একটি টিমের সাথে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের কয়েক রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়েছে। সন্ত্রাসীরা প্রথমে গুলি ছুঁড়লে আমরা পাল্টা গুলি চালাই। এসময় তাদের ফেলে যাওয়া ইউনিফর্ম ও মাথার ক্যাপ উদ্ধার করি।
জানাগেছে সন্ত্রাসী গ্রুপটি প্রথমে মেরাখোলা বাজারে হামলা ও লুটপাট চালায়। স্থানীয় লোকজন ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। মেরাখোলা বাজারে ৪টি দোকান ভেঙ্গে মালামাল ও নগদ টাকা লুট করে। ফার্মেসি দোকানদার ডাঃ নেপাল সেন বলেন, মেরাখোলা বাজারের ওমর বশাকের মুদি দোকান, মিলন পালের মুদি দোকান ও কসমেটিক দোকান, কায়েস উদ্দিনের চা দোকান ও আমার নিরাময় ফার্মেসি হতে দেড় লক্ষাধিক নগদ টাকা ও প্রায় লক্ষাধিক টাকার সিগারেট, ঔষুদ নানা রকম মালামাল নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। লুটতরাজ চালিয়ে মেরাখোলা হতে ফিরে যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীরা নকশা ঝিরি এলাকায় অস্ত্রের মুখে কয়েকজনকে জিম্মি করে আরো ২টি দোকান লুট করে নগদ টাকা ও মালামাল নিয়ে যায় বলে স্থানীয়রা জনিয়েছেন। এলাকার লোকজন ভয়ে বাড়িঘর ফেলে পালিয়ে যেতে শুরু করেছে।
স্থানিয় সূত্রে জানাগেছে মিয়ারমারের অস্ত্রধারী উগ্র সংগঠন এপি এর কয়েকজন সন্ত্রাসী দেশে ফিরে না গিয়ে এইসব সন্ত্রাসী কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাদের সাথে স্থানীয় কয়েকজন ম্রো ছেলে, বিভিন্ন সময় পিসিজেএসএস থেকে অস্ত্র নিয়ে পালিয়ে যাওয়া যুবক ও থানচি এলাকার কয়েকজন মারমা ছেলে জড়িত রয়েছে। এই গ্রুপটিতে মোট ৬০ থেকে ৭০ জন সদস্য রয়েছে বলে জানাগেছে। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে লামা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, দিনে দুপুরে সন্ত্রাসীদের হামলার কারণে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন এলাকাবাসী
লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অপ্পেলা রাজু নাহার সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, খবর পেয়ে সঙ্গীয় পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। জনসাধারণের নিরাপত্তা দিক বিবেচনা করে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।