বৃহস্পতিবার ● ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি মানছে না কেউ
সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি মানছে না কেউ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: (২২ ভাদ্র ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.৩৫৫মি.) গাইবান্ধা-উল্লাবাজার-সাঘাটা সড়কের বাদিয়াখালী সেঁতুতে ওঠার দুইপাশের সাইনবোর্ডেই সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি, ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেঁতু, ৫ টনের অধিক মালামাল পরিবহন নিষেধ, কথাগুলো লেখা রয়েছে। একই কথা লেখা রয়েছে উল্লাবাজার-পুরাতন ফুলছড়ি হেডকোয়ার্টার সড়কের বেইলি সেঁতুতেও। আর গাইবান্ধা-বালাসীঘাট সড়কের পুলবন্দি সেঁতুতে ওঠার আগে সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি, ঝুঁকিপূর্ণ সেঁতু, ভারী যানবাহন চলাচল নিষেধ।
এ বছরের শুরুর দিকে যানবাহন চালকদের সতর্ক করে এসব ঝুঁকিপূর্ণ সেঁতুগুলো সামনে এমন সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি লেখা সাইনবোর্ড গাইবান্ধা সড়ক বিভাগ লাগিয়ে দিলেও থেমে নেই এসব সেঁতুর উপর দিয়ে ভারী যানবাহনের চলাচল। বেশি ওজনের মালামাল নিয়ে ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানগুলো চলাচল করছে এসব সেঁতুর উপর দিয়ে। এসব সেঁতু ধসে গিয়ে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে লক্ষাধিক মানুষের চলাচল ব্যাহত হবে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ এসব সেঁতু ভেঙে নতুন সেঁতু নির্মাণের দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।
গাইবান্ধা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনা এড়াতে চালকরা যাতে বেশি ওজনের মালামাল পরিবহন না করে এজন্য সতর্ক করে গাইবান্ধা-উল্লাবাজার-সাঘাটা সড়কে নির্মিত সদর উপজেলার বাদিয়াখালী ইউনিয়নের বাদিয়াখালী সেঁতু, উল্লাবাজার-পুরাতন ফুলছড়ি হেডকোয়ার্টার সড়কে নির্মিত ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের বেইলি সেঁতু ও গাইবান্ধা-বালাসীঘাট সড়কে নির্মিত সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের পুলবন্দি সেঁতুতে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাদিয়াখালী সেঁতুটির প্রস্থ খুবই কম। কোনো বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান সেঁতুর উপরে উঠলে আরেক পাশে যানবাহনগুলোকে আটকে থাকতে হয়। একই অবস্থা পুলবন্দি ও পুরাতন ফুলছড়ি হেডকোয়ার্টার সড়কের বেইলি সেঁতুতেও। এসব সেঁতুর দুইপাশেই গাইবান্ধা সড়ক বিভাগ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ সেঁতু লেখা সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। এরপরও ভারী যানবাহনের চলাচল ঠেকাতে সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে এসব ঝুঁকিপূর্ণ সেঁতুস্থলে কোনো ব্যক্তিকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়নি। এসব সেঁতুর মধ্যে সত্তর দশকেরও আগে বাদিয়াখালীতে আলাই নদীর উপর নির্মিত কংক্রিটের সেঁতুটি ২০০৭ সালের বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও ২০১০ সালের ১৬ এপ্রিল আবারও সেঁতুর উত্তরাংশের কংক্রিটের পাটাতন ধসে যায়। এতে করে প্রায় একমাস জেলা শহরের সঙ্গে ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার সড়কপথে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন থাকার পর গাইবান্ধা সড়ক বিভাগ বিধ্বস্ত কংক্রিটের সেঁতুর পুরো অংশের উপর একটি বেইলি সেঁতু (স্টিলের) স্থাপন করে দিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা সড়ক উপ-বিভাগের প্রকৌশলী মাহমুদ আলনূর সালেহীন বলেন, বাদিয়াখালীতে নতুন সেঁতু নির্মাণ প্রকল্পটি শুধুমাত্র জাইকার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন পাওয়া গেলে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সেঁতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া স্থানীয়দের দাবি অনুযায়ী পুরাতন ফুলছড়ি হেডকোয়ার্টার সড়কের বেইলি সেঁতুস্থলে কালভার্ট ও রাস্তা তৈরি এবং পুলবন্দিতে নতুন সেঁতু নির্মাণের প্রস্তাবনা তৈরি করা হচ্ছে।
ঝুঁকিপূর্ণ সেঁতুর বিষয়ে গাইবান্ধা সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এসব সেঁতু ঝুঁকিপূর্ণ নয়। যেহেতু সেঁতুগুলো পুরনো, সেহেতু দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি সাইনবোর্ডে লিখে ভারী যানবাহনের চালকদের সতর্ক করা হয়েছে মাত্র।