বৃহস্পতিবার ● ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » কৃষি » সোনালী আঁশে স্বর্ণরাঙা মধুমতি ও বলেশ্বর নদীর চর
সোনালী আঁশে স্বর্ণরাঙা মধুমতি ও বলেশ্বর নদীর চর
বাগেরহাট অফিস :: (২২ ভাদ্র ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.৩৩ মি.) বাগেরহাটের চিতলমারীর পাট চাষিরা সোনালি আঁশের স্বর্ণালী দিনের অপেক্ষায় রয়েছেন। অনেকেই এখন পাট চাষে ভাগ্য বদলানোর স্বপ্ন দেখছেন। তারা ন্যায্যমূল্য পেলে আগামিতে আরো ব্যাপক ভাবে এটি চাষ করবেন বলে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। উপজেলার মধুমতি ও বলেশ্বর নদীর বিস্তৃর্ণ চর ও বিভিন্ন জমিতে এ বছর ব্যাপক ভাবে পাট চাষ করা হয়েছে। বর্তমানে এসব জমির পাট কেটে জাগ দেওয়া ও আঁশ ছাড়ানোর কাছে ব্যস্ত চাষীরা।
স্থানীয় চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর ধরে পাট চাষ করে লোকসান গুনতে হয়েছে চাষিদের, ফলে এটি চাষ করা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন চাষিরা কিন্তু বর্তমানে দেশ-বিদেশে পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এটি চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। এছাড়া এ বছর পাটের বাজার দর ভালো থাকায় ও পাটকাঠি থেকে বাড়তি আয় ঘরে আসায় কিছুটা লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। ফলে অন্যান্য ফসল চাষের পরিবর্তে পাট চাষ করছেন চাষিরা।
বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বড়বাড়িয়া, কলাতলা, হিজলা, শিবপুর, চিতলমারী সদর, চরবানিয়ারী ও সন্তোষপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন জমিতে ব্যাপক ভাবে পাট চাষ করা হয়েছে। এলাকার নারী-পুরুষ সকলে রাত-দিন সমান তালে পাট কেটে প্রক্রিয়া জাতের জন্য কাজ করছেন। গত কয়েক বছর ধরে সবজি ও ধান চাষ করে লোকসান হওয়ায় এটি চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। যার কারণে অনেকেই আগ্রহের সাথে পাট চাষ করছেন। ফলে ফিরে এসেছে সোনালি আঁশের সুদিন। এলাকার শত শত চাষিরা এখন এটি চাষের মাধ্যমে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন।
উপজেলার কুড়ালতলা গ্রামের ননী গোপাল মন্ডল জানান, তিনি ৫ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। এ বছর পাটের গাছও খুব ভালো হয়েছে। বর্তমানে এসব পাট কেটে পানিতে জাগ দেওয়া হচ্ছে। আগামি ২ থেকে ৩ সপ্তাহ পর প্রক্রিয়া জাতের মাধ্যমে এসব পাটের আঁশ তুলে শুকনোর পর বিক্রির জন্য বাজারে তোলা হবে। এছাড়া খড়মখালী গ্রামের শুশীল মন্ডল ২ বিঘা, রেপতী মন্ডল ১০ কাঠা, গুরুদাস মন্ডল ২ বিঘা ও শুধাংসু মন্ডল ২ বিঘাসহ শত শত চাষিরা জমিতে পাট চাষ করেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার জানান, এ বছর পাটের বাজার দর খুবই ভালো আছে। প্রতি মণ পাট ১৮ শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে । যেটি অন্য বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। এছাড়া পাটের চেয়ে এর খড়ি থেকে একটা বড় ধরণের লাভের টাকা ঘরে আসে চাষিদের। এলাকায় সাধারণত ও-৯৮৯৭ এবং বঙ্কিম জাতের পাটের চাষ করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় জাতের মেচতা ও বাবুর দানা পাট চাষ করেছেন চাষিরা। পাট চাষে জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পায় ফলে এসব জমিতে অন্যান্য ফসল ও ভালো ফলন পাওয়া যায়।