বৃহস্পতিবার ● ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » গাজিপুর » মুচি জসিমকে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর ডিবি পুলিশ
মুচি জসিমকে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর ডিবি পুলিশ
মুহাম্মদ আতিকুর রহমান (আতিক), গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: (২২ ভাদ্র ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.৩৫মি.) সরকারের তিন’শ বিঘা গজারী বনের গাছ কেটে গড়ে তুলেছেন নতুন এক গ্রাম। ১৭টি পরোয়ানাভুক্ত মামলা মাথায় নিয়েও ঘুরে বেড়ান। জুতা তৈরির কারখানায় একসময় পিয়নের চাকরি করতেন। সেই থেকে এলাকার মানুষের কাছে পরিচিতি ‘মুচি জসিম’। সেই জসিম ইকবাল আজ শতকোটি টাকার মালিক। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে তিনি এক মূর্তিমান আতঙ্ক!
আজ ৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় অভিযান চালিয়ে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় গাজীপুর ডিবি পুলিশ।
জানা গেছে, একটি হত্যা মামলায় পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতে গিয়ে গোটা জীবনটাই বদলে নিয়েছেন জসিম। তাঁর কাছে যেন কেউই নিরাপদ নয়। স্বার্থের পরিপন্থী হলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ওপর হামলে পড়েন তিনি। একে একে ১৭টি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও প্রকাশ্যেই তিনি ঘুরে বেড়ান। তাঁর কুকর্মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে অসংখ্য নিরীহ মানুষ। বাদ যাননি সরকারি কর্মকর্তাও।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের আশীর্বাদপুষ্ট জসীম ইকবালের রয়েছে শক্তিশালী ক্যাডার বাহিনী। কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বনের অন্তত তিন’শ বিঘা জমি দখল করে পৃথক বেশ কয়েকটি সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন তিনি।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে জসিম ইকবাল ১৫ থেকে ২০ বছর আগে চন্দ্রা এলাকায় এসে জুতা তৈরির একটি কারখানায় পিয়ন পদে চাকরি নেন। এর আগে কিছুদিন টোকাইয়ের কাজও করেন। পরবর্তী সময়ে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজেই জুতা বানিয়ে ওই কোম্পানিতে সরবরাহ করতে শুরু করেন। এ জন্য এলাকায় মুচি জসীম নামে তাঁর পরিচিতি রয়েছে।
২০১৫ সালের ২১ আগস্ট চন্দ্রায় জাতির পিতা কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কালিয়াকৈর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলামকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। আর এই হত্যার ঘটনায় কপাল খুলে যায় মুচি জসীমের। রফিকুল হত্যার আসামিদের ধরিয়ে দিতে থানা পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। অল্প সময়ের ব্যবধানে পুলিশের বিশ্বস্ততা অর্জনের সুযোগে হত্যা মামলায় আসামি করার ভয় দেখিয়ে এলাকার মানুষজনকে জিম্মি করে ফেলেন জসীম। তাঁর সহযোগিতায় কালিয়াকৈর থানার পুলিশ ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে। হত্যাকান্ড সম্পর্কে কিছুই জানে না এমন মানুষজনকেও ধরে নিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে আর জসীম মধ্যস্থতা করে তাদের ছাড়িয়ে আনেন। আর থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে তিনি প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০-১৫ লাখ করে টাকা আদায় করেন।