শুক্রবার ● ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » নবীগঞ্জে সিএনজি ষ্ট্যান্ডে আধিপত্য বিস্তার : সংঘর্ষের আশংকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন
নবীগঞ্জে সিএনজি ষ্ট্যান্ডে আধিপত্য বিস্তার : সংঘর্ষের আশংকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন
নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :: (২৩ ভাদ্র ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১১.০৮মি.) নবীগঞ্জ পৌর এলাকায় সিএনজি চালককে মারধোরকে কেন্দ্র করে দুইদিন ধরে নবীগঞ্জে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে । আজ শুক্রবার সন্ধ্যার আগ থেকেই শহরের রাজাবাদ ও আনমনু পয়েন্টে লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র এবং লাটিসোটা নিয়ে জড়ো হতে থাকেন । উত্তেজনাপূর্ন পরিবেশ বিরাজ করছে। যেকোন সময় বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে বলে ধারনা করছেন সাধারন মানুষ। শহরের প্রায় সকল ব্যবসায়ীরা সন্ধ্যার সাথে সাথেই দোকানপাট বন্ধ করে দিক-বিদিক ছুটাছুটি করতে দেখা যায়। সংঘর্ষ এড়াতে শহরে পুলিশ নবীগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে টহল জোরদার করেছে।
সুত্রে জানাযায়, নবীগঞ্জ পৌর এলাকায় সিএনজি চালককে মারধোরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের শতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন।
গুরুতর আহত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ পুলিশ সদস্য খায়রুলসহ ৬জনকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। শহরের মাছ বাজার,পোল্ট্রি ফার্ম,রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন দোকানঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়।
সংঘর্ষ চলাকালে ভাংচুরে কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এঘটনায় দুইদিন ধরে শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে,সংঘর্ষ এড়াতে পুরো শহর এবং গুরুত্বপূর্ণস্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে । আতংকে বন্ধ রয়েছে নবীগঞ্জ শহরের অধিকাংশ দোকান পাট। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নবীগঞ্জ জেকে উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠের নিকটবর্তী শহীদ মিনারের সামনে ১ম দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে । খোজ নিয়ে জানাযায় ঘটনার সূত্রপাত হয় গত বুধবার বিকেলে বানিয়াচং কাগাপাশা থেকে নবীগঞ্জ শহরের ফেরার পথিমধ্যে কানাইপুর শ্মশানঘাট এলাকায় পৌঁছামাত্রই চরগাঁও সিএনজি স্ট্যান্ডের সিএনজি চালক কাওছার মিয়াকে (রাজাবাদ) থানা পয়েন্টের সিএনজি স্ট্যান্ডের সিএনজি চালক শিশু মিয়াসহ কয়েকজন একত্রিত হয়ে মারধোর করে।
এঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে মারধরের ব্যাপারে রাজাবাদ পয়েন্টের ম্যানেজারের আফজল মিয়া,মিজান মিয়া,ফয়েজ মিয়া,বেলাল মিয়ার কাছে চরগাও সিএনজি স্ট্যান্ডের ম্যানেজার আব্দুল আমিন চৌধুরী,আলমন্দর চৌধুরী,নিপন,রিপন,শাহজাহান,আলমসহ কয়েকজন সেখানে গেলে তাদের সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে উভয় গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে । এসময় মাছ বাজার,পোল্ট্রি ফার্ম,দোকানপাটসহ বেশ কয়েকটি দোকান ভাংচুর করা হয় । প্রায় ৩ ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শতাধিক লোকজন আহত হয়। ঘটনার কারনে শহরে হবিগঞ্জ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েত করা হয়েছে। আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক গুরুতর আহত অবস্থায় ইব্রাহিম মিয়া(৫৫),আব্দুল জলিল(৪০),আরদাশ (২৫),ফয়জুর রহমান(২৬),সাহিদুর রহমান(৫৪),জাবেদ চৌধুরী (৩৬) সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় । পরে খবর পেয়ে নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী নেতৃত্বে অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় সংঘর্ষ থামাতে মিস ফায়ারে(অসাবধানতামূলক) কারণে গুলিবিদ্ধ হয়ে পুলিশ সদস্য খায়রুল ইসলাম(২২) আহত হন। পরে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এই ঘটনার জের ধরেই পুনরায় সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিয়ে গতকাল শুক্রবার বিকাল থেকে নবীগঞ্জ শহরের রাজাবাদ পয়েন্ট ও আনমনু পয়েন্টে লোকজন জড়ো হতে থাকেন। সংঘর্ষের ঘটনা আচঁ করতে পেরে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রনে আনতে নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী,নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মোজাহিদ আহমদ,সাধারন সম্পাদক নির্মলেন্দু দাশ রানা, মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি ইয়াওর মিয়া,পৌর কাউন্সিলর মোঃ কবির মিয়াসহ স্থানীয় গর্ণমান্য ব্যক্তিবর্গ পুনরায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে সহায়তা করেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যেকোন সময় উভয়পক্ষের লোকজন পুনরায় সংঘর্ষে লিপ্ত হতে পারে বলে ধারনা করা যাচ্ছে।