বৃহস্পতিবার ● ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » রাজশাহীর বিআরটিএ’তে রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্স প্রত্যাশীদের ভিড়
রাজশাহীর বিআরটিএ’তে রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্স প্রত্যাশীদের ভিড়
রাজশাহী প্রতিনিধি :: (২৯ ভাদ্র ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩.১২মি) ঢাকায় নিহত হওয়ার ঘটনার জের ধরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো নড়ে চড়ে বসেছে। রাজশাহীসহ সারাদেশে অবৈধ ও ফিটনেস বিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন। প্রতিদিনই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী রাস্তার মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনের বৈধ কাগজপত্র এবং চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স যাচাই-বাছাই করছে।
বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারলে চালকরা ছাড় পাচ্ছেন আর কাগজপত্র না দেখালে গাড়ী জব্দ করা হচ্ছে। এমনকি ত্রুটিযুক্ত কাগজপত্রের জন্য যানবাহনের মামলা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও মোটরসাইকেল চালকদের হেলমেট না থাকলেও মামলা দেওয়া হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। রাজধানী ঢাকার পর এবার রাজশাহীতেও হেলমেট ছাড়া চালককে তেল দেওয়া হবে না এমন নির্দেশনা দিয়েছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ। বিশেষ করে ট্রাফিক সচেনতনা বাড়াতে জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট ইউনিট পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছে। জনগণের সচেতনতা বাড়িয়ে দুর্ঘটনা কমানোর প্রত্যাশায় এসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
বর্তমানে একদিকে মালিক ও ড্রাইভারের স্বচ্ছতা এবং অন্যদিকে পুলিশের মামলা খাওয়ার ভয়ে গাড়ীর মালিকরা ছুটছেন বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি বিআরটিএ’তে। গাড়ীর রেজিস্ট্রেশন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ফিটনেস ও নবায়নসহ বিভিন্ন আবেদন করতে। বর্তমান সময়ে আগের যে কোন সময়ের চেয়ে দুই থেকে তিন গুণ আবেদন বেশি পড়ছে। কিছুদিন আগেও (পদক্ষেপ নেয়ার) যেখানে প্রতিদিন ৩০০ টির মতো আবেদন জমা হতো বর্তমানে সেখানে প্রতিদিন ৭০০টিরও বেশী আবেদন জমা পড়ছে।
কাজও বেড়ে যাওয়ায় অল্প জনবল নিয়ে এত আবেদনের কাজ করতে হিমসিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। কারণ রাজশাহী বিআরটিএ আঞ্চলিক অফিস হলেও প্রয়োজনের তুলনায় এখানে জনবল অপ্রতুল। কম জনবল নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। সকাল ৯টার আগেই লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশন প্রত্যাশীরা কার্যালয়ের সামনে এসে ভিড় জমাচ্ছে। ইতিমধ্যে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ ও জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ চেকপোস্ট করা ছাড়াও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে চেকপোস্ট করা হচ্ছে।
শুধু তাই নয় চেকপোস্টের ভয়ে অনেক বাস বন্ধ রয়েছে। ফিটনেসের জন্য আবেদন করা হচ্ছে। বিআরটিএ এর কর্মকর্তারা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অভিযান শুরু করেছে। সেই সাথে সব শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে বিআরটিএ’র উদ্যোগে সড়ক নিরাপত্তা মূলক নাগরিক কর্তব্য শীর্ষক কর্মশালা করা হচ্ছে। কর্মশালায় মালিক, ড্রাইভার, বিএনসিসি, রোভার স্কাউটস ও গার্ল্স গাইড সদস্যরা অংশ নেয়। সমাপনিতে বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমান প্রধান অতিথি থেকে সনদপত্র বিতরণ করেন।
এদিকে এতদিন যে মাহেন্দ্রসহ থ্রি হুইলার গুলো লাইসেন্স নেয়ার প্রয়োজন মনে করে নি। সে গাড়িগুলোও রেজিস্ট্রেশনের আওতায় এনেছে কর্তৃপক্ষ। যে কারণে রাস্তায় এসব গাড়িতে ঝুলছে রেজিস্ট্রেশনের ফটোকপি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ড্রাইভার বলেন এক রেজিস্ট্রশনের ফটোকপি দিয়ে অনেক গাড়ি চলছে। এখন সময় এসেছে এগুলোও দেখার। নইলে আস্তে আস্তে আবারো বিশৃংখলা দেখা দিবে।
রাজশাহী বিআরটিএ’র (সার্কেল) সহকারী পরিচালক এ.এস.এম কামরুল হাসান বলেন, পূর্বের থেকে বর্তমান সময়ে রেজিস্ট্রেশন, লাইসেন্স ও ফিটনেসের জন্য যানবাহন মালিকরা আবেদন করছে। যেখানে প্রতিদিন ৩০০ আবেদন পড়তো সেখানে বর্তমানে ৭০০ শতাধিকের উপর আবেদন পড়ছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের চাপ বেড়েছে। ট্রাফিক বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে কর্মশালা করা হচ্ছে।