রবিবার ● ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, ভাঙনে গৃহহীন প্রায় শতাধিক
ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, ভাঙনে গৃহহীন প্রায় শতাধিক
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: (১ আশ্বিন ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.১৭মি) উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও বৃষ্টির পানিতে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধীর গতিতে হলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এদিকে পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি কয়েকটি স্থানে তীব্র ভাঙনে শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কায় ও ভাঙনে আতঙ্কিত চরাঞ্চলের মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার হলদিয়া ও জুমারবাড়ী ইউনিয়নের থৈকরেরপাড়া ও ব্যাঙারপাড়া গ্রামে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ওই এলাকার প্রায় ২’শ বিঘা রোপা আমন ও সবজিক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় কৃষকের মাথায় হাত পড়েছে। সেই সাথে নদী ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় নদী পাড়ের লোকজন আতংকে দিন পার করছেন। এমনকি সুবিধামত স্থানে বাড়ীঘর সড়িয়ে নিচ্ছেন। ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ীসহ বহু আবাদী জমি। স্থানীয় মিঠু মিয়া বলেন, “যেভাবে পানি বাড়ছে নদীতে এবারে, মনে হয় ভিটে মাটি গিলে খাবে। উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা নূরুল ইসলাম জানান, গত ৩ দিন ধরে যেভাবে ব্রহ্মপুত্রর পানি বাড়ছে তাতে বড় ধরনের বন্যা হতে পারে। আমরা কৃষকরা সেচ দিয়ে কিছু জমিতে আমন লাগিয়েছি। এসব আমন ক্ষেত তলিয়ে গেছে। গত ৩ দিন ধরে নদীর পানি বাড়তেই আছে। পানি কমে না গেলে ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্র পানি ব্রদ্ধি পেয়ে উপজেলার তিস্তমুখঘাট পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে পানি বৃদ্ধিরর ফলে নদীর তীরবর্তী চরের নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি প্রবেশ করায় তলিয়ে গেছে আমনসহ সবজি ক্ষেত। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হয়ে পড়ছে চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা এবং পথঘাট।
ফজলুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হানিফ প্রামানিক জানান, দু’দিনের ব্যবধানে উজান ভাঙা গ্রামের পায় ৫০টি পরিবার ও উপজেলায় প্রায় শতাধিক পরিবার তাদের সহায়-সম্পদ হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী জানান, নদী ভাঙ্গন বিষয় নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে কয়েকবার অবগত করা হয়েছে। তারা জিও ব্যাগ ফেলেই ক্ষ্যান্ত। নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী কোন ব্যবস্থা এখন চোখে পড়ছে না।
উল্লেখ্য বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর ৯৪টি পয়েন্টের মধ্যে ৭৪টির পানি বেড়েছে। কমেছে ১৮টির। গতকাল পর্যন্ত কোনো নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। তবে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার কাছাকাছি রয়েছে। আজ-কালের মধ্যে তা বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।