শুক্রবার ● ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » সাপ নিয়েই ষাট বছর : সরকারি সহায়তা চান ইব্রাহিম আলী
সাপ নিয়েই ষাট বছর : সরকারি সহায়তা চান ইব্রাহিম আলী
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: (৬ আশ্বিন ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৪০মি.) সাপ মানুষের শত্রু নয়, বন্ধু। নিরীহ এ প্রাণী আঘাত না পেলে কাউকে দংশন করেনা বলছিলেন সর্পবন্ধু ইব্রাহিম আলী। কোথাও সাপের উপদ্রব হলেই ডাক পড়ে ইব্রাহিমের। তিনি ছুটে যান, যখন যেখানে প্রয়োজন। বাসা-বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অফিসপাড়া থেকে সাপ ধরে স্বস্তি এনে দেন মানুষের মনে। দীর্ঘ ষাট বছর ধরে এভাবেই সাপের উপদ্রব থেকে মানুষকে সুরক্ষা দিয়েই চলেছেন সর্পবন্ধু ইব্রাহিম আলী। এ কাজে ইতিমধ্যে দেশব্যাপী খ্যাতি লাভ করেছেন তিনি। বিনিময়ে সামান্য ‘বখশিষ’ দিয়েই কোন মতে চলে তার দিনাতিপাত।
বর্তমানে এ সেবা চালু রাখতে সরকারি সহায়তা চান তিনি। ইব্রাহিম আলী দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস, বাসা-বাড়ি, অফিস, ব্যাংক, পুলিশ স্টেশন থেকে অসংখ্য সাপ ধরে আতঙ্কিত জনমনে স্বস্তি দিয়েছেন।
সম্প্রতি সিলেটের বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনে দেখা দেয় বিষধর সাপেরউপদ্রব। খবর পেয়ে ছুটে আসেন ইব্রাহিম। দীর্ঘ চেষ্ঠার পর থানা কম্পাউন্ড থেকে ৫ ফুট লম্বা একটি ‘পংকি আলদ’ সাপ ধরেন তিনি। এ কাজে সব সময় ইব্রাহিমকে সহযোগীতা করেন তার ছেলে মাইদুল হোসেন, ভাইপো বাদশা মিয়া ও মুরাদ হোসেন।
সুনামগঞ্জের সদর উপজেলার বাসিন্দা ইব্রাহিম আলীর জন্ম ভারতের আসামে। তার পিতা তাহের আলী ছিলেন ওঝা ও কবিরাজ। ছোটবেলা থেকেই বারার কাছ থেকে গূণমন্ত্রের বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেন তিনি। পরে ভারতের আসাম রাজ্যের কামরূপ কামাখ্যায় (পানামং মায়ারাজ্যে) সর্প বিদ্যা ও তন্ত্রমন্ত্রে একাধারে ১৮ বছর প্রশিক্ষণ নেন তিনি। তার গুরু আসামের সামলাল গারওয়ালি নেংটা নাগার কাছে গূণমন্ত্র শিখেন ইব্রাহিম। এর পর ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে বাংলাদেশে এসেই সর্প থেকে মানুষকে সুরক্ষায় নেমে পড়েন তিনি। যে কোন প্রজাতির সাপ ধরতে সক্ষম ইব্রাহিম ছুটে বেড়ান দেশের এক প্রান্ত থেকে
অন্যপ্রান্তে। সেই সাথে গাছ-গাছরা থেকে তৈরী ভেজষ ঔষধ দিয়েও বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা দেন তিনি।
ইব্রাহিম আলীর সাথে কথা হলে তিনি ‘সাংবাদিকদের জানান, গুরুর নির্দেশে মানব সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছি। জীবনভর সর্প থেকে মানুষকে সুরক্ষা দিয়ে আসছি আমি। বর্তমানে আমার ছেলে মাইদুলও একই করছে। জীবনের শেষ সময়ে এসে নানা অসঙ্গতির কারণে কাজ অব্যাহত রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি সহায়তা পেলে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত মানুষের সেবা করে যাওয়াই আমার ইচ্ছে।