শনিবার ● ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধায় পানিবন্দি ৭১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ
গাইবান্ধায় পানিবন্দি ৭১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: (৭ আশ্বিন ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১০.৩৯মি.) গাইবান্ধার বন্যা কবলিত চার উপজেলায় ৭১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠায় সেগুলোতে পাঠদান সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এছাড়া নদী ভাঙ্গনে ভবন বিলীন হওয়ায় ফুলছড়ির এরন্ডাবাড়ী ও হাড়–ডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এদিকে জেলার সবক’টি নদ-নদীর পানি হ্রাস পেলেও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দুই সে মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১৩হাজার পরিবার। নদী ভাঙনে দুই সহস্রাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় ১৮শ’ হেক্টর জমির আমন ক্ষেত ও বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল ।
গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম মন্ডল জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঠে পানি ওঠায় ৭১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদানসহ সকল কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থাগিত রাখা হয়েছে। এরমধ্যে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ৩৪টি, ফুলছড়িতে ২২টি, সাঘাটায় ১০টি ও গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ৫টি। এছাড়া নদী ভাঙ্গনের কারণে ফুলছড়ির এরন্ডাবাড়ী ও হাড়–ডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নুরুন্নবী সরকার জানান, গত কয়েকদিনে তিস্তার প্রবল স্রোতে ভাঙ্গনের কবলে নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে সুন্দরগঞ্জের ভাটি কাপাসিয়া চরে সরকারি অর্থে নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশিভাগ অংশ। এতে এই প্রকল্পে আশ্রয় পাওয়া ১৮০টি অসহায় পরিবারের মধ্যে ৩৫টি পরিবার গৃহহীন হয়ে পরেছে।
গাইবান্ধা জেলা ত্রান ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস আলী জানান, জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে নিমজ্জিত সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ১৯টি ইউনিয়নের ৮৪টি গ্রামের ১২ হাজার ৮১০টি পরিবারকে উদ্ধার করে বিভিন্ন সরকারী আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। তাদেরকে বিশুদ্ধ পানি, খাবারসহ সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া এ পর্যন্ত ওই চার উপজেলায় নদীভাঙ্গনে গৃহহীন হয়ে পড়েছে ২ হাজার ১৬৫ পরিবার। তাদেরকে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদ ছাড়া বাকী সব নদীর পানি কমতে শুর করেছে। আগামী দুই এক দিনের মধ্যে ব্রহ্মপুত্রের পানি কমতে শুরু করবে। ভাঙনকবলিত এলাকায় জরুরি পদক্ষেপসহ সার্বক্ষণিক নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রুহুল আমীন বলেন, বন্যায় গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের প্রায় ১৭শ’ ৬৮হেক্টর জমির আমন ক্ষেত ও বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। তারমধ্যে আমন ধান ১৭শত ৩২ হেক্টর, বীজতলা ২১ হেক্টর ও শাক সবজি ১৫ হেক্টর। তিনি বলেন, দ্রুত বন্যার পানি কমলে এসব ফসলের তেমন কোনও ক্ষতি হবে না।