মঙ্গলবার ● ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাঙামাটি সরকারী কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের ৫দফা দাবীসহ প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান
রাঙামাটি সরকারী কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের ৫দফা দাবীসহ প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান
ষ্টাফ রিপোর্টার :: ( ১০ আশ্বিন ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.২৬মি.) আউট সোর্সিং নিয়োগপ্রথা বাতিল, টইমস্কেল সিলেকশন গ্রেড পূর্ণবহাল, পূর্বের ন্যায় শতভাগ পেনশন প্রদানসহ ৫দফা পূরণের দাবীতে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ সরকারী কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলা শাখা।
আজ মঙ্গলবার ২৫ সেপ্টেম্বর সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এসএম শফি কামালের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।
এসময় রাঙামাটি জেলা শাখা সরকারী কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মো. নাদিরুজ্জামান, সহ সভাপতি ইন্দ্র দত্ত তালুকদার, সহ সভাপতি কাজী মইনূর হোসেন সাধারণ সম্পাদক মো. মাবুদুল হকসহ পরিষদের প্রমুখ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সরকারী দপ্তরে বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের কাছ থেকে ক্রীতদাস প্রথার ন্যায় আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে জনবর সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে যা ১১ থেকে ২০ তম গ্রেডের কর্মচারীদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হচ্ছে। এর ফলে শুন্যপদে পদোন্নতির সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে এবং নিয়োগকৃত জনবলের বেতন ভাতার অধাংশ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হাতিয়ে নিচ্ছে। তাই সংবিধান পরিপন্থি আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে জনবল নিয়োগের কারণে প্রকারান্তরে কর্মচারী নিধন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে যার ফলশ্রুতিতে সারাদেশের কর্মচারী অঙ্গণে চরম হতাশা ও তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, ২০১৫ সালে নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হওয়ার ফলে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করায় কর্মচারী অঙ্গণে চরম হতাশা ও তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে বিধায় কর্মচারীদের সর্বক্ষেত্রে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পূর্ণবহালের জোর দাবী জানাচ্ছি। আর সরকারী চাকুরীজিবীদের বিদ্যমান পেনশন নীতিমালা পরিবর্তন করার ফলে কর্মচারীরা মারাত্মক আর্থিক ভাবে ক্ষতির স্বীকার হচ্ছে। এই অবস্থায় অবসর পরবর্তী জীবনে সমুদয় টাকা এককালীন উত্তোলন করে বাসগৃহ নির্মাণসহ যে কোন ক্ষুদ্র ব্যবসায় বিনিয়োগের মাধ্যমে পরিবার নিয়ে দিন যাপনের স্বপ্ন দেখেন। এহেন অবস্থায় সরকার বিদ্যমান নীতিমালা সংশোধন করে প্রাপ্য টাকার অর্ধাংশ তথা ৫০ শতাংশ টাকা সরকারের নিকট গচ্ছিত রাখার সিদ্ধান্ত অবসরে যাওয়া কর্মচারীদের উপর চরম আর্থিক অবিচার শুরু হয়েছে।
এছাড়া সচিবালয়ের ন্যায় বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে কর্মরত প্রধান সহকারী, উচ্চমান সহকারী, স্টেনোগ্রাফ, তত্ত্বাবধায়ক ইত্যাদি সমমানের পদকে ২য় শ্রেনীর পদমর্যাদাসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ব্যক্তিগত, কর্মকর্তা নামকরণ, স্টেনোটাইপিষ্ট, বিনিযোগ সহকারী, অপিস সহকারী, নাজির ইত্যাদি সমমানের পদকে সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সহকারী ব্যক্তিগত কর্মকর্তা নামকরণ, হিসাব রক্ষক পদকে সহকারী হিসাব কর্মকর্তা, হিসাব সহকারী পদকে উপ সহকারী হিসাব কর্মকর্তা নামকরণ এবং অফিস সহায়ক সমমানের পদকে অফিস সহকারী নামকরণসহ স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত ওয়ার্ড সরদার পদবীকে ওযার্ড সুপারভাইজার, জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশলী বিভাগের নলকুপ মোকানিক পদবীকে ওয়াস সুপারভাইজার নামকরণ, জর্জ কোর্ট ও জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত ও অস্থায়ী ভাবে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের রাজস্বখাতে নিয়মিতকরণ, গোডাউন কিপার নামকরণ, পদোন্নতিবিহীন পদ ইত্যাদি সমমানের পদকে পরবর্তী উর্দ্ধতনস্তরে পদোন্নতি দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এছাড়া দূর্গম অরন্যে পাহাড়ী অঞ্চল, হাওড়, বাওর, সামুদ্রিক অঞ্চলে কর্মরতদের প্রাকৃতিক বিপর্যয় এর মুখে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয় বিধায় তাদের জন্য মূল বেতনের ৪০% প্রদানের দাবিসহ গাড়ী চালক ও ১৮, ১৯, ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদেরকে নার্সতেদর ন্যায় মাসিক বেতনের সাথে ৩হাজার টাকা হারে সাজ পোষাক ভাতা প্রদান, বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত কর্মচারীগণকে মূল বেতনের ২০% ঝুঁকি ভাতা প্রদানসহ দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির কারণে বিশেষ বিশেষ সরকারি সংস্থার সদস্যদের ন্যায় ন্যায্য মূল্যে মানসম্মত রেশন প্রদান এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য রেল এর ন্যায় ৪০ শতাংশ পোষ্য কোটা সংরক্ষণ এবং রেল বিভাগের পেনশনারদের জন্য পেনশন উত্তোলনের সুবিদার্থে সরকারী ব্যাংকের মাধ্যমে পেনশন প্রদানের দাবী জানাচ্ছি।
এছাড়া ২০১৫ সালের বেতন কাঠামোতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য প্রকট। যা নি¤œ আয়ের কর্মচারীদের জন্য চরম হতাশাজনক। এমতাবস্থায় বর্তমান মহাজোট সরকারের শেষ বাজেটে সরকারী কর্মচারীদের জন্য কোন আর্থিক সুবিধা না রাখায় কর্মচারীগণ হতাশ। এক্ষেত্রে বর্তমান বাজার দর ও বাস্তবতার নীরিখে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ৫শতাংশের স্থলে ২০ শতাংশ নির্ধারণের জোর দাবিসহ আই এল ও কনভেনশন এর ৮৭ ও ৯৮ ধারা মোতাবেক গণকর্মচারীদের সংগঠন করার প্রয়োজনে ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার প্রদানসহ অবিলম্বে সাধারণ কর্মচারীদের এই চাহিদা দ্রুত পূরণ করার জন্য আমরা সরকারের কাছে আবেদন করছি।