সোমবার ● ১ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » পাবনা » শরৎ প্রকৃতিকে সাজিয়েছে মোহনীয় সাজে শরতের কাশফুলে
শরৎ প্রকৃতিকে সাজিয়েছে মোহনীয় সাজে শরতের কাশফুলে
মো. নূরুল ইসলাম, চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি :: (১৬ আশ্বিন ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.৩৭মি.) ভাদ্রও আশ্বিন এ দুই মাস নিয়ে শরৎ কাল। ঋতু বৈচিত্রের লীলা খেলায় এখন শরৎ কাল চলছে। প্রত্যেকটি ঋতুরই কিছু স্বকীয় বৈশিষ্ট থাকে। স্নিগ্ধতা ও কোমলতায় ভরা শরৎ ঋতুও তার ব্যতিক্রম নয়। কাশফুল এক ধরনের ঘাসজাতীয় জলজ উদ্ভিদ। এরা উচ্চতায় ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। নদীর তীরে জন্মানো শ্বেতশুভ্র কাশবন দেখতে খুবই সুন্দর। বাংলাদেশের ঋতুরীতি অনুযায়ী শরতের শোভা এই কাশফুল। এই ফুল ফুটতে দেখেই বোঝা যায় এটা শরতকাল। কাশফুল মূলত ছন গোত্রীয় এক ধরনের ঘাস। বাংলাদেশে সব অঞ্চলেই কাশফুল দেখতে পাওয়া যায় পালকের মতো নরম সাদা কাশফুল। নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনো রুক্ষ এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের কোনও উঁচু জায়গায় কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে। তবে দীর তীরেই এদের বেশি জন্মাতে দেখা যায়। এর কারণ হল নদীর তীরে পলিমাটির আস্তর থাকে এবং এই মাটিতে কাশের মূল সহজে সম্প্রসারিত হতে পারে।
মহাকবি কালিদাস শরৎ বন্দনায় বলেছিলেন, প্রিয়তম আমার ঐ চেয়ে দেখ নব বধূর ন্যায় সুসজ্জিত শরৎ কাল সমাগত। তিনি ঋতুসংহার কাব্যে আরও লিখেছেন কাশ ফুলের মতো যার পরিধান প্রফুল্ল পদেœর মতো যার মুখ উন্মত্ত হাঁসের ডাকের মতো রমণীয় যার নূপুরের শব্দ, পাকা শালি ধানের মতো সুন্দর যার ক্ষীণ দেহলতা, অপরূপ যার আকৃতি সেই নববধূর মতো শরৎকাল আসে। তাইতো শরতে আজ রূপসী বাংলার প্রকৃতি নব রূপে সেজেছে সৈন্দর্যে। নদ নদী খাল বিলসহ জলাশয়ের পারের শুভ্র কাশ ফুল, সাদা মেঘ, কখনো বা নীল আকাশে উড়ন্ত পাখির ঝাঁক, সজীবতায় ভরপুর বৃক্ষরাজি, শিউলী শেফালীর মন পাগল করা সুগন্ধী বাতাস, হালকা শিশিরে সিক্ত দূর্বা ঘাসসহ সবুজ ধানক্ষেত ছুয়ে আসা উদাসী বাতাস সকলকে যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
আমাদের কবিতা গান গল্প সাহিত্যে শরৎ এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামসহ প্রাচীন মধ্য ও আধুনিক যুগের কবি সাহিত্যিকেরা শরতের রূপে মুগ্ধ হয়েছেন। তাইতো তাদের লেখায় মেলে শরতের বন্দনা। “শরৎ, তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলী, শরৎ তোমার শিশির ধোয়া কুন্ডলে, বনের পথে লুটিয়ে পরা অঞ্চলে। কবি গুরুর এমন কথা গুলো অথবা জাতীয় কবির “এসো শারদ প্রভাতের পথিক এসো শিউলী বিছানো পথে, এসো ধুইয়া চরণ শিশিরে এসো, নীল লাল ঝড়ায়ে ঢল ঢল এসো অরণ্য পর্বতে” এমন কথা মালা শরতের অপূর্বতার প্রকাশ। ঋতু পরিক্রমায় প্রতি বছর ঋতুর রাণী শরৎ আসে। শরৎ যায়। শরতে প্রকৃতির অপরুপ সাজ মানুষের মনে দাগ কেটে যায়। মানুষের মন কে প্রফুল্ল করে।