মঙ্গলবার ● ২ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » সমঝোতায় ডাকা হলেও ডিভোর্সে অনড় ক্রিকেটার মোসাদ্দেক : সিদ্ধান্তহীনতায় স্ত্রী উষা
সমঝোতায় ডাকা হলেও ডিভোর্সে অনড় ক্রিকেটার মোসাদ্দেক : সিদ্ধান্তহীনতায় স্ত্রী উষা
ময়মনসিংহ অফিস :: (১৭ আশ্বিন ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.০৯মি.) ময়মনসিংহের জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের তারকা ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও স্ত্রী সামিয়া শারমিন উষাকে সমঝোতার জন্য অবশেষে ডাকা হলেও বিচ্ছেদ থেকে সরে না আসার সিদ্ধান্তেই নিজের অনড় অবস্থানের কথা জানিয়েছেন মোসাদ্দেক। কিন্তু এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তহীন রয়েছেন সামিয়া শারমিন উষা। তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আরো একদিন সময় চেয়েছেন এ তথ্য ময়মনসিংহের জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সূত্র জানায়।
আজ মঙ্গলবার ২ অক্টোবর বিকেলে ময়মনসিংহ জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে দু’ধাপে সামিয়া শারমিন উষা ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত’র সঙ্গে বসেন অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম অফিসার শারমিন শাহজাদী।
প্রথমে বেলা সাড়ে ১১টায় সামিয়া শারমিন উষা ও তার দুই ভাইয়ের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক কথা বলেন তিনি। এরপর বিকেল সোয়া ৩টা থেকে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের কথা শোনেন। পরে লিখিত জবানবন্দি শেষে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ওই অফিস থেকে বেরিয়ে আসেন অলরাউন্ডার সৈকত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই পরিবারের মধ্যস্থতায় ২০১২ সালের ২৮ অক্টোবর খালাতো বোন সামিয়া শারমিন উষাকে বিয়ে করেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এরপর বছর দু’য়েক যাবত দু’জনের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। সেইসাথে দাম্পত্য কলহ চরম আকার ধারন করে।
এরপর গত ২৬ আগস্ট দুপুরে ময়মনসিংহ সদর আমলি আদালতের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোজিনা খানের আদালতে ১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে স্ত্রী সামিয়া শারমিন উষা তার স্বামী মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
পরে আদালত মামলাটি গ্রহণ না করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ময়মনসিংহ সদর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর তদন্ত করতে আদালতের নির্দেশনার চিঠি হাতে পায় জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। আগামী ৮ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে আদালত সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়।
এদিকে মোসাদ্দেক ও তার পরিবারিক সূত্র অভিযোগ করে বলেন, ‘দেশের মানুষের চোখে আমাকে এবং আমার পরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতেই ডিভোর্স পাঠানোর ১০ দিন পর বানোয়াট ও মিথ্যা অভিযোগ এনে আমার বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবির মামলা করা হয়। এটা নির্লজ্জ মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়।’
ময়মনসিংহ জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম অফিসার শারমিন শাহজাদী এ বিষয়টি নিশ্চিত করে একইসাথে সামিয়া ও মোসাদ্দেককে আলাদাভাবে ডাকা ও তদন্তের অগ্রগতি প্রসঙ্গে জানান, দুই ভাইকে সঙ্গে নিয়ে সামিয়া শারমিন উষা অধিদপ্তরে এসেছিলেন। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা তার সঙ্গে কথা বলেছি।
সামিয়ার কাছে তার সিদ্ধান্তের বিষয় জানতে চাইলে, উত্তরে সামিয়া জানিয়েছে, আমাকে একদিন সময় দেন। আমার ছয় ভাই আমার অভিভাবক। তাদের সঙ্গে কথা বলে আমি সিদ্ধান্ত জানাবো। তার প্রত্যাশা মাফিক তাকে সময় দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান,ডিভোর্স এর সময় ৯০ দিন না হওয়ায় এখনো ডিভোর্স কার্যকর হয়নি বলে জানান এই কর্মকর্তা। ফলে সমঝোতা বৈঠকের শুরুতেই তিনি মোসাদ্দেককে অনুরোধ করেন পুনরায় সংসার করার। কিন্তু মোসাদ্দেক ডিভোর্সের বিষয়ে নিজের অনড় সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন।
মোসাদ্দেকের জবানবন্দির বিষয়ে তদন্তকারী এ কর্মকর্তা বলেন, গত দেড় বছর যাবত সামিয়া নাকি মোসাদ্দেককে বলেছে, তুমি আমাকে ছেড়ে দাও। প্রায় সময়েই একথা বলেন। আবার মোসাদ্দেককে সন্দেহও করেন। ডিভোর্সের পর আইনত যেটা পাবে সেটা সামিয়াকে পরিশোধ করবেন বলেও জানিয়েছে মোসাদ্দেক।
তিনি আরও জানান, সামিয়া ও তার পরিবার সিদ্ধান্ত জানানোর পর মোসাদ্দেকের লিখিত জবানবন্দিসহ আদালতে নির্ধারিত সময়েই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে আরও জানান জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম অফিসার শারমিন শাহজাদী ।