বুধবার ● ৩ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » করোনা আপডেট » বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার নেই রোগী দেখছেন নার্স
বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার নেই রোগী দেখছেন নার্স
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: (১৮ আশ্বিন ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.০৭মি.) সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সময় মতো কর্তব্যরত চিকিৎসক উপস্থিত না থাকায় রোগীদের চরম দূর্ভোগের শিকার হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাই প্রায় সময় বাধ্য হয়ে জরুরী বিভাগে ডাক্তারের পরিবর্তে রোগীদেরকে চিকিৎসা সেবা দিতে হয় নার্সকে।
রোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিন বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ৮টা থেকে ২জন চিকিৎসক রুগীকে সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও রয়েছে একজন মহিলা ডাক্তার। তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিলেও কর্তব্যরত পুরুষ চিকিৎসকের রুম রয়েছে তালাবদ্ধ। তাই বাধ্য হয়ে জরুরী বিভাগে ডাক্তার সেঁজে চেয়ারে বসে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন সিনিয়র নার্স সাকুর মিয়া।
হাসপাতালে প্রায় সময়ই রুগীদেরকে এই অবস্থার শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ করেন ভূক্তভোগী রহিম মিয়া, সমুজ আলী’সহ চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহিঃবিভাগে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত দুই জন ডাক্তার (পুরুষ ও মহিলা)। জরুরী বিভাগে আলাদা কোন ডাক্তার না থাকায় উক্ত চিকিৎসকরাই হাসপাতালে আগত রোগীদেরকে সেবা করেন। বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১জন ডাক্তার ও রাত ৮টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত একজন চিকিৎসক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে রোগীদের সেবা দেওয়ার কথা। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন মেডিকেল অফিসার ডাঃ তারেক নূরুল। বুধবার সকাল ৮টা থেকে মেডিকেল অফিসার ডাঃ ইয়াসিন আরাফাত ও ডাঃ উম্মে কুলসুমা দায়িত্বে থাকার কথা। কিন্ত ডাঃ উম্মে কুলসুমা মহিলা রুগীদের সেবা প্রদান করলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ ইয়াসিন আরাফাত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে না থাকায় তার পরিবর্তে পুরুষ রোগীদের সেবা দিচ্ছেন সিনিয়র নার্স সাকুর মিয়া। এসময় সাংবাদিকরা তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজে সিনিয়র স্টাফ নার্স বলে পরিচয় দেন। তবে চিকিৎসকের চেয়ারে বসে রোগীদের কনে চিকিৎসা দিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেননি।
আজ বুধবার বেলা ১টা ৪০ মিনিটে মেডিকেল অফিসার ডাঃ ইয়াসিন আরাফাতের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন- আমি একটি জরুরী কাজে সিভিল সার্জনের অফিসে অবস্থান করছি।
এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডাঃ আব্দুর রহমান বলেন- হাসপাতালের জরুরী কাজে সির্ভিল সার্জন অফিসে গিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ ইয়াসিন আরাফাত। হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট থাকায় অনেক সময় রোগীদের ভীড় হলে আমি নিজে রুগী দেখি। নার্স কর্তৃক রোগী দেখার বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।
সিলেটের সিভিল সার্জন ডাঃ হিমাংশু লাল রায় সাংবাদিকদের বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। সেজন্য অনেক সময় ডাক্তার না থাকলে রোগীর নাম ঠিকানা লিখে রাখতে নার্সরা সহযোগীতা করে। তাই বলে একজন নার্স কিছুতেই ডাক্তারের চেয়ারে বসে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে পারে না। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।