বুধবার ● ৩ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » লামায় যুবতীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন : জায়গা দখলের চেষ্টা
লামায় যুবতীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন : জায়গা দখলের চেষ্টা
লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি :: (১৮ আশ্বিন ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৩৩মি.) বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে ভাড়াটিয়া অস্ত্রধারী এনে একই পরিবারের ৪ জনকে কুপিয়ে জখম সহ ১৭ বছর বয়সী মেয়েকে গাছের সাথে বেধে মধ্যযুগীও কায়দায় পাশ¦বিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ফাইতং ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্যাতিত মাদরাসা ছাত্রীসহ আহতদের উদ্ধার করে এবং পাশ্ববর্তী চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের ভর্তি করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ২ জন হামলাকারীকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল মঙ্গলবার ২ অক্টোবর দুপুরে উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের ফাদুরছড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
অভিযোগে জানাগেছে, ফাইতং ফাদুর ছড়া গ্রামে মৃত তফুর আলীর পুত্র আবদুল করিম এর সাথে একই এলাকার নুরুল ইসলামের পুত্র মো. ফারুক পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ ৭ বছর যাবৎ জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় শালিসী বৈঠকে ও থানার বিচারে আবদুল করিম পক্ষ রায় পায়। স্থানীয় বিচার শালীস না মেনে ফারুক বান্দরবান জেলা জজ আদালতে মামলা করে অসহায় কৃষক পরিবারকে হয়রাণী করে আসছিল। এতে ক্ষান্ত না হয়ে মঙ্গলবার (২ অক্টোবর) দুপুরে চকরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে অস্ত্রধারী ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এনে আবদুল করিম এর জমি জোরপূর্বক জবর দখলে নেয়ার চেষ্টা করে।
এক পর্যায়ে প্রকাশ্য দিবালোকে হামলাকারী ফারুক ও তার ভাই সাইফুল, বারেক সহ ভাড়াটিয়া শতাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা, ভাংচুর ও লুৎপাট চালায়। হামলাকারীরা গৃহকর্তা আবদুল করিম, তার স্ত্রী ছফুরা খাতুন (৫০), মৃত আলী আহমদের পুত্র নুর মোহাম্মদ (৪০) কে হাত বেঁধে মারধর করে এবং করিমের মাদ্রাসা পড়ুয়া মেয়ে জোহাইরা বেগম (১৭) কে গাছের সাথে হাত-পা ও মুখ বেধে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে।
এ সময় ফারুক ও তার সঙ্গীয়রা করিমের বাড়িতে রক্ষিত স্থানীয় ফাইতং বায়তুল মামুর মসজিদের ১ লাখ টাকা সহ বাড়ির নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার এবং মালামাল সহ মোট ৫ লক্ষাধিক টাকার জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
ফাদুরছড়া এলাকার ওয়ার্ড মেম্বার থোয়াই হ্লা মারমা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, এই ধরনের নির্যাতন মানুষ করতে পারেনা। ফারুক ও সঙ্গীয়রা অমানুষ। এলাকার লোকজন এগিয়ে না গেলে তারা করিমের পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলত। তার মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের বিষয়টি মর্মান্তিক।
লামা থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী অফিসার পুলিশের উপ-পরিদর্শক জয়নাল আবেদীন সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, হামলাকারীরা মাদরাসা ছাত্রী জোহাইরা বেগমকে রশি দিয়ে গাছের সাথে প্রকাশ্যে বেধে নির্যাতনের এক পর্যায়ে মাদ্রাসা ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীরও চেষ্টা চালায়। নির্মম এই দৃশ্য সহ্য করতে না পেরে স্থানীয় লোকজন ফাইতং পুলিশ ফাঁড়িকে খবর দিলে পুলিশ আহত ও নির্যাতিতদের উদ্ধার করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত ফারুক ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাদশাকে গ্রেফতার করে ও অন্যান্য হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
লামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অপ্পেলা রাজু নাহা সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, ফাইতংয়ে জমি জবর, হামলা ও নির্যাতনের খবর পেয়ে ফাইতং পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
ঘটনাস্থল থেকে ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে থানায় মামলা নেওয়া হয়েছে। মামলা নং- ০১, তারিখ- ০২ অক্টোবর ২০১৮ইংরেজি।