সোমবার ● ৮ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » মহালয়ার পূর্ণ্যলগ্নে দেবী দূর্গার আগমনী বার্তা
মহালয়ার পূর্ণ্যলগ্নে দেবী দূর্গার আগমনী বার্তা
মাইকেল দাশ,রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি :: (২৩ আশ্বিন ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.০৭মি.) বাজলো ঢাক, বাজলো তোমার আগমনী। পিতৃপক্ষের শেষে দেবীপক্ষের শুরু।মা পা রেখেছেন মর্ত্যলোক পৃথিবীতে। মা এবার এলেন ঘোড়ায় চড়ে। মহালয়ায় দুর্গা দেবীর আগমনী বার্তা। বছর ঘুরে আবারও উমা দেবী আসছেন তার বাপের বাড়ি। হিমালয়ের কৈলাশে তার স্বামী শিবের বাস। সেখান থেকেই সুদূর পথ পাড়ি দিয়ে আসেন সমতল ভূমির এই বাংলায়। সঙ্গে নিয়ে আসেন গণেশ, কার্ত্তিক, লক্ষ্মী আর সরস্বতীকে। প্রতিবছরের শরৎকালে দেবী দুর্গার এই আগমন হয় নিজ ভূমিতে। হিন্দু শাস্ত্রমতে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। মহালয়া দুর্গোৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
এদিন গঙ্গাতীরে প্রার্থনা করে ভক্তরা মৃত আত্মীয়স্বজন ও পূর্বপুরুষদের আত্মার মঙ্গল কামনা করেন। সসাগরা পৃথিবীর অধীশ্বর রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। বসন্তকালে তিনি এই পূজার আয়োজন করায় দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজাও বলা হয়।
শ্রী রামচন্দ্র রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে যাওয়ার আগে দুর্গাপূজার আয়োজন করেছিলেন। তাই শরৎকালের এই পূজাকে হিন্দুমতে অকালবোধনও বলা হয়।এই দিনে দেব-দেবীকুল দুর্গাপূজার জন্য নিজেদের জাগ্রত করেন। মহালয়ার দিন ভোরে মন্দিরে মন্দিরে শঙ্খের ধ্বনি ও শ্রীশ্রী চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবীকে আবাহন জানানো হয়,দেবীর আরাধনা সূচিত হয় মহালয়ার মাধ্যমে। এভাবেই মর্ত্যলোকে আবাহন ঘটে দেবী দুর্গার।
মন্দিরে মন্দিরে উচ্চারিত হয় ‘যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেন সংস্থিতা, নমস্ত্যৈ নমস্ত্যৈ নমস্ত্যৈ নমঃ নমঃ’। ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও মূলত আজ থেকেই পূজারীরা দুর্গা মায়ের আগমন ধ্বনি শুনতে পান। মায়ের আগমনে চারদিকে আনন্দ আয়োজন সম্পন্ন করার তাড়া। খুশির আনন্দ ছুঁয়ে যাচ্ছে ঘরে ঘরে।
পঞ্জিকা অনুয়ায়ী অমাবস্যা পড়ছে আজ সোমবার ১১টার পর থেকে। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে, মহালয়া পার্বণ শ্রাদ্ধম- ২১ আশ্বিন, সোমবার, ১৪২৫, ইং- ৮ অক্টোবর ২০১৮ সকাল ১০/৪৯/০৮ গতে। থাকবে ২২ আশ্বিন, মঙ্গলবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৮ ০৯/০৮/২০ পর্যন্ত। অর্থাৎ আজ সকাল ১০টা ৪৯ মিনিট ৮ সেকেন্ডের পর থেকে কাল মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৮ মিনিট ২০ সেকেন্ড পর্যন্ত তর্পণ করা যাবে। ১৪ অক্টোবর পঞ্চমীর সায়ংকালে অকাল বোধনে খুলে যাবে মা দুর্গার শান্ত-স্নিগ্ধ অতল গভীর আয়ত চোখের পলক। ধূপের ধোঁয়ায় ঢাক-ঢোলক, কাঁসর-মন্দিরার চারপাশ কাঁপানো নিনাদ আর পুরোহিতের ভক্তিকণ্ঠে ‘যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেন সংস্থিতা/নমস্তৈস্য নমস্তৈস্য নমো নম..’ মন্ত্রোচ্চারণের ভেতর দূর কৈলাশ ছেড়ে দেবী পিতৃগৃহে আসবেন।