সোমবার ● ৮ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » ঢাকা » পাহাড়ে ৮২ হাজার বিদেশি পরিবারকে পূর্নবাসনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে : পার্বত্য নাগরিক পরিষদ
পাহাড়ে ৮২ হাজার বিদেশি পরিবারকে পূর্নবাসনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে : পার্বত্য নাগরিক পরিষদ
প্রেস বিজ্ঞপ্তি :: (২৩ আশ্বিন ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৯.৫৩মি.) পার্বত্যাঞ্চলে ভূমিহীন অভ্যন্তরীণ লক্ষাধিক বাঙালি পরিবারকে পূর্নবাসন ও নতুন করে ৮২ হাজার উপজাতীয় পরিবারকে পূর্নবাসনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ ৮ অক্টোবর সোমবার সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পার্বত্য নাগরিক পরিষদ ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে পার্বত্য মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জি: আলকাছ আল মামুন ভূঁইয়া, বিশেষ অথিতি ছিলেন পার্বত্য নাগরিক পরিষদের যুগ্মসম্পাদ মো: শেখ আহাম্মদ রাজু, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের সমন্বয়ক আবদুল হামিদ রানা, প্রধান বক্তা ছিলেন, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো: ইব্রাহিম মনির, বক্তব্য রাখেন- পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মো: তৌহিদুল ইসলাম, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাহাদাৎ ফরাজি সাকিব, ইব্রাহিম অপি ও মো: আলামিন প্রমুখ।
প্রধান অথিতি তার বক্তব্যে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিদের সংখ্যা বাড়াতে ভারতের মনিপুর, আসাম ও মেঘালয় এবং মায়ানমার থেকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিদের এদেশে এনে শরণার্থী হিসেবে সাজানোর ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। আর এজন্য ভারত প্রত্যাগত ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠি (উপজাতীয়) শরণার্থী বিষয়ক কমিটি ট্রাস্কফোর্স গত সেপ্টেম্বরের ২৭ তারিখের এক বৈঠকে আভ্যন্তরীণ ‘আজগবি’ (নতুন করে) ৮২ হাজার উপজাতি শরণার্থী পূর্ণবাসন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ট্রাস্কফোর্স এর চেয়ারম্যানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বাঙালিরা মনে করেন। এমন সিদ্ধান্ত পার্বত্যবাসী কখনও মেনে নিবে না। তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে এধরনের সিদ্ধান্ত গভীর ষড়যন্ত্র বলে আমরা মনে করি, তাই এ সিদ্ধান্ত থেকে দ্রুত ফেরৎ আসার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, এ সময়ে আভ্যন্তরীণ আজগবি ৮২ হাজার উপজাতিদের সঙ্গে প্রশিক্ষিত বিচ্ছিন্নতাবাদী, অস্ত্রবাজরা ঢুকে যাবে না এমন গ্যারান্টি কে দেবে?। তিনি বলেন, নতুন করে যাদের পূনর্বাসনের (৮২ হাজার) করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাদের তালিকা শিগগিরই প্রকাশ করা হউক।
বক্তারা বলেন, সর্বশেষ আভ্যন্তরীণ ভারত প্রত্যাগত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি (উপজাতীয়) শরণার্থী ২১টি পরিবারকে খাগড়াছড়ি জেলার দিঘীনালায় জামতলীতে পূনর্বাসন করা হয়। কিন্তু সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন বর্তমান জেএসএসের হত্যা নির্যাতনে উদ্বাস্তু ৫৬ হাজার বাঙালি পরিবারকে এখন পর্যন্ত পূনবার্সনের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ২২,২২২টি উপজাতীয় পরিবারকে পূণর্বানের পর উপজাতীয়- ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী, আভ্যন্তরীণ উপজাতীয় কোন উদ্বাস্তু ছিল না। তাহলে হঠাৎ করে ৮২ হাজার উদ্বাস্তু কোথা থেকে আসল। এদের খবর সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রামের কেউই জানেন না। হঠাৎ করে উপজাতীয় নেতৃবৃন্দ কোথা হতে নতুন করে এই ৮২ হাজার পরিবার বা ৪০০০০০ চার লাখের বেশি উদ্বাস্তু আবিস্কার করলেন? তালিকায় স্থান পাওয়া ২১ হাজার ৯০০ পরিবার সহ ৮২ হাজার পরিবারের সদস্যরা কারা তার বিস্তারিত প্রকাশ করার আহবান জানান বক্তারা।
বক্তারা মনে করেন- পার্বত্য চট্টগ্রাম কে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের কাঙ্খিত জুম্মল্যান্ড বানাতে গোপনে মায়ানমার ও ভারত থেকে উপজাতীয় পরিবারকে কৌশলে পার করে আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু সাজানো হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে রক্ষায় সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানোসহ তালিকা টি বাতিল করে যাচাই বাচাইয়ের মাধ্যমে ৫৬ হাজার বাঙালি পরিবার কে পূনর্বানের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানান বক্তারা।
অন্যদিকে দীর্ঘদিন যাবত বাঙ্গালীদের ভূমি বন্দোবস্ত বন্ধ থাকায় ভূমি রেজিষ্ট্রি হচ্ছেনা, তাই তিন পার্বত্য জেলায় লক্ষাধিক বাঙ্গালী বসতভূমিতে দখলসত্ত্ব থাকা সত্ত্বেও সরকারের তালিকায় ভূমিহীন আর নিজ নামে ভূমি বন্দোবস্তি বা রেকর্ড না থাকায় বাঙ্গালীরা যুগের পর যুগ বসবাস করেও স্থায়ীবাসিন্দার সনদ পেতে ব্যর্থ হচ্ছে, আর স্থায়ী বাসিন্দার সনদ না থাকায় নাগরিকত্ব সহ সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বক্তাদের দাবি- এ সকল লক্ষাধিক বাঙ্গালীদের তালিকা প্রস্তুত করে আগে স্বার্বভৌমত্ব রক্ষাকারী বাঙ্গালীদেরকে পূর্ণবাসন করা হউক। অন্যথায় কোন পূর্ণবাসনই করতে দেয়া হবে না।
বক্তারা আরো বলেন, ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী ২০০১ সালে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন গঠন করা হয়েছিল শুধু ১২,২২২ টি ভারত প্রত্যাগত উপজাতি শরণার্থী পরিবারের সমস্যা সমাধানের জন্য- কিন্তু এ নেতারাই কৌশলে ২২,০০০ উপজাতীয়কে বাংলাদেশে শরণার্থী বানিয়ে পূনর্বাসন করেছে। অন্যদিকে আভ্যন্তরীণ লক্ষাধিক বাঙালি উদ্বাস্তুকে এখন পর্যন্ত পূণর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এ প্রক্রিয়া শিগগিরই বন্ধ করা না হলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এর জবাব দেয়া হবে।