মঙ্গলবার ● ৯ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » মায়ানমার ও ভারতীয় ৮২ হাজার পরিবারকে “পূনর্বাসন ষড়যন্ত্র” বন্ধ করুন : পার্বত্য অধিকার ফোরাম
মায়ানমার ও ভারতীয় ৮২ হাজার পরিবারকে “পূনর্বাসন ষড়যন্ত্র” বন্ধ করুন : পার্বত্য অধিকার ফোরাম
প্রেস বিজ্ঞপ্তি :: ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী ও আভ্যন্তরীন উদ্ভাস্তু বিষয়ক টাস্কফোর্স কর্তৃক মায়ানমার ও ভারতীয় ৮২ হাজার পরিবারকে আভ্যন্তরীন উদ্ভাস্ত সাজিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে “পূনর্বাসন ষড়যন্ত্র” বন্ধের দাবী ও প্রকৃত আভ্যন্তরীন উদ্ভাস্তু ৩৮ হাজার বাঙালি পরিবার কে পূনর্বাসন করার দাবীতে অাজ ৯ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে খাগড়াছড়ি শহরের শাপলাচত্তরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে পার্বত্য অধিকার ফোরাম খাগড়াছড়ি জেলা শাখা। অবস্থান কর্মসূচি শেষে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেন। এর আগে খাগড়াছড়ি শহরের চেঙ্গি স্কোয়ার হতে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাপলা চত্তরের অসস্থান কর্মসূচিতে মিলিত হয়।
অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে পার্বত্য অধিকার ফোরামের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মো: মাঈন উদ্দীন বলেন - ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তি অনুসারে ২০ দফা প্যাকেজের আওতায় ভারত প্রত্যাগত ২২০০০ বাইশ হাজার উপজাতীয় পরিবার কে সম্পূর্ন ভাবে পূনর্বাসন করা হয়। দূভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে, ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত তৎকালীন শন্তুলারমার তথা বর্তমান জেএসএস এর হত্যাকান্ডে পরিবারের গুরুপ্তপূর্ন সদস্যদের হারিয়ে উদ্ভাস্তু হয়েছিলো ৬১০০০ হাজার বাঙালি পরিবার। যারা এখনো গুচ্ছগ্রামে ই বন্দি রয়ে গেল। চুক্তি পরবর্তি দীর্ঘ ২০ বছর অতিবাহিত হলেও তাদের পূনর্বাসনের কোন উদ্দ্যোগ কেউ গ্রহন করেনী। ২০১৪ সালে শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের ৫ম সভায় গুচ্ছগ্রামে বন্দি ৬১ হাজার বাঙালি পরিবার কে পূনর্বাসন করার দাবী উত্থাপিত হলে তখনকার টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান বাবু যতীন্ত্রলাল ত্রিপুরার নেতৃত্বে বলেছিনে পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন উদ্ভাস্তু নাই , তাই বাঙালি উদ্ভাস্তুদের তালিকা কে ও নাখোচ করা হয়েছিলো। সেই অনুসারে তো পার্বত্য চট্টগ্রামে তো পূনর্বাসনের বাকী কোন উপজাতী পরিবার ছিলোনা। তাহলে এই ৯ম সভায় ৮২ উদ্ভাস্তু কে পূনর্বাসনের ঘোষনা কিভাবে দিলেন? তার মধ্যে বলেছেন-২১,৯০০ টি ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী পরিবার। কিন্তু শরনার্থী পরিবার তো ২০ দফা প্যাকেজের আওতায় ২০০৮ সালের পূর্বেই পূনর্বাসন সম্পন্ন করেছেন।। তাহলে চুক্তি বাস্তবায়ন কারী বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের টানা ২ মেয়াদ সহ গত দীর্ঘ ১৬ বছরের মধ্যে এমন আজব ৮২ হাজার উদ্ভাস্তের খরব সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রামের কেউ ই জানতেন না। তাহলে হঠাৎ করে উপজাতীয় নেতৃবৃন্দ কোথা হতে নতুন করে এই এই ৮২ হাজার পরিবার বা ৪০০০০০ চার লক্ষের বেশি উদ্ভাস্ত আবিস্কার করলেন? তারা এত দিন কোথায় ছিলেন? এখন তারা কোথায় আছেন? তালিকায় স্থান পাওয়া ২১ হাজার ৯০০ পরিবার সহ ৮২ হাজার পরিবারের সদস্যরা কারা তার বিস্তারীত প্রকাশ করার আহবান জানান। আমরা মনে করছি পার্বত্য চট্টগ্রাম কে উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের কাঙ্খিত জুম্মল্যান্ড বানাতে গোপনে মায়ানমার ও ভারত থেকে উপজাতিয় পরিবারকে রাতের আধারে সীমানা পার করে আভ্যন্তরীন উদ্ভাস্ত সাজানো হচ্ছে? সরকারের সরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আহবান জানাই যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম কে রক্ষায় সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো সহ তালিকা টি বাতিল করে যাচাই বাচাইয়ের মাধ্যমে ২৬ হাজার বাঙালি পরিবার কে পূনর্বানের উদ্দ্যোগ গ্রহন করা হোক।
এসময় পার্বত্য অধিকার ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম মাসুম রানা, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার আহবায়ক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ,জেলা শাখার যুগ্ন আহবায়ক রবিউল হোসেন,জেলা শাখার সদস্য সচিব মো: ফারভেজ আহম্মেদ,দিঘীনালা উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি মো: সাদ্দাম হোসেন ও সভাপতি মো: আলামিন, মানিকছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি মো: মোক্তাদির হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো: সাহাবুদ্দিন, পার্বত্য নারী অধিকার ফোরামের সভাপতি সালমা আহম্মেদ মৌ, ও পার্বত্য অধিকার ফোরাম মাটিরাঙা উপজেলা শাখার সভাপতি মো: এস এম হেলাল প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে পাঁচ) দফা দাবী পেশ করা হয় ।
দাবী সমুহ : ১. অখন্ড বাংলাদেশের স্বার্থে ৮২ হাজার ভারতীয় ও মায়ানমার নাগরীক কে পার্বত্য চট্টগ্রামে “পূর্নবাসন ষড়যন্ত্র” বন্ধের নির্দেশ প্রদান করার দাবী জানাই।
২. অবিলম্বে গুচ্ছগ্রামে বন্দি ৩৮ হাজার বাঙালি উদ্ভাস্তু পরিবার কে সরকার কর্তৃক বরাদ্ধকৃত ৫.০০ একর জায়গায় পূনর্বাসন করতে হবে।
৩.অবিলম্মে বাঙালি নেতৃবৃন্দ কে সাথে নিয়ে প্রকৃত উদ্ভাস্তু দের তালিকা প্রণয়নের উদ্দ্যোগ গ্রহন করতে হবে।
৪. উপজাতীয় সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ কর্তৃক গত আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর’১৮ ইং তারিখ পর্যন্ত বাঙালি উচ্ছেদ মিশনে মন্দির ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামে জোরপূর্বক দখলকৃত ভূমি ফেরত দিতে হবে।
৫. উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নিমূলে অবৈধ উদ্ধার ও তাদের নির্মূলে চিরুনী অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
কর্মসূচি সমূহ: :
১.আগামী ১২/১০/২০১৮ ইং তারিখের মধ্যে ৮২ হাজার কথিত আভ্যন্তরীন উদ্ভাস্তু দের পূনর্বাসন ষড়যন্ত্র তালিকা বাতিল না করা হয় তাহলে ১৩/১০/১৮ ইং তারিখে খাগড়াছড়ি টাস্কফোর্স কার্যালয়ের সম্মূখে অবস্থান ধর্মঘট পালন করা হবে।
আগামী ১২/১০/২০১৮ ইং তারিখের মধ্যে গোপনে প্রনীত ৮২ হাজার উপজাতীয় পরিবারের তালিকা বাতিল করে প্রকৃত উদ্ভাস্ত ৩৮ হাজার বাঙালি পরিবার কে পূনর্বানের উদ্দ্যোগ গ্রহন করা না হলে পার্বত্য অধিকার ফোরাম হরতাল অবরোধের মত কঠোর কর্মসূচি ঘোষনা করতে বাধ্য হবো।