রবিবার ● ১৪ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ঘাতক শফিকের ফাঁসি চায় স্কুলছাত্রী রুমির পরিবার
ঘাতক শফিকের ফাঁসি চায় স্কুলছাত্রী রুমির পরিবার
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: (২৯ আশ্বিন ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১০.৪৩মি.) সিলেটের বিশ্বনাথে একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয়ে নির্মমভাবে খুন হওয়া স্কুলছাত্রী রুমি আক্তারের ঘাতক শফিক মিয়ার ফাঁসির দাবি জানিয়েছে তার পরিবার। রুমি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার নগরভাত গ্রামের আতাউর রহমানের একমাত্র মেয়ে ও স্থানীয় মৈশামূড়া বসন্ত কুমারী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। ঘাতক শফিক বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত ওয়াব উল্লাহ’র পুত্র। থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে সে কারান্তরীণ রয়েছে।
শুক্রবার রাতে টাঙ্গাইল থেকে মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদকের সাথে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথা বলেন রুমির বড়ভাই ইয়ার হোসেন। জানান, ‘দুই ভাইয়ের একমাত্র বোন হওয়ায় সে ছিল বড় আদরের। বাবা-মায়ের মমতার চাদরেও সে ছিল সদা পরিবেষ্টিত। তাকে ঘিরেই ছিল আমাদের একটা সুখময় সংসার। কিন্তু কি থেকে যে কি হয়ে গেল। ভয়ংকর ঘাতক শফিক প্রাণ কেড়ে নিল সকলেই প্রিয় রুমির। কি অপরাধ ছিল তার? এতটুকুন একটা মেয়েকে, একটা অস্টম শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্রীকে নির্মমভাবে খুন করতে তার একটুও কি হাত কাঁপলো না? আমাদের সুখের সংসারকে শোকের অন্ধকারে ঠেলে দিল ওই পাষন্ড খুনি। আমরা খুনি শফিকের ফাঁসি চাই। তাকে যেন ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে মারা হয়’।
ইয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘রুমি খুনের পর থেকে এখনো স্বাভাবিক হতে পারেননি পরিবারের কেউ। বাবা-মাসহ কারোই কান্না থামছে না। বিশেষ করে, মা’র অবস্থা খুবই করুণ। কাঁদতে কাঁদতে এখনও মুর্চ্ছা যান তিনি। খোঁজে ফেরেন তার অতি আদরের মেয়ে রুমি আক্তারকে’।
এ প্রতিবেদক মোবাইল ফোনে রুমির বাবা-মা’র সাথে কথা বলতে চাইলে বিনীতভাবে অপারগতা প্রকাশ করেন তার বড়ভাই ইয়ার হোসেন। জানান, ‘কথা বলার মত অবস্থায় নেই তারা। মা’তো কারো সাথে কথাই বলেন না। অবিরত কান্নার কারণে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে বিছানায় শুয়ে ফ্যালফ্যাল করে শুধু তাকিয়ে থাকেন’।
প্রসঙ্গত, গত ৯ সেপ্টেম্বর বিদেশী বরের সাথে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার নগরভাত গ্রামের আতাউর রহমানের একমাত্র মেয়ে ও স্থানীয় মৈশামূড়া বসন্ত কুমারী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রুমি আক্তারকে (১৬) সিলেটের বিশ্বনাথে নিয়ে আসে উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত ওয়াব উল্লাহ’র পুত্র শফিক মিয়া (৩২)। নিজ বসত ঘরে একাধিকবার ধর্ষণ করে রুমিকে নির্মমভাবে খুন করে তার লাশ রামপাশা ইউনিয়নের পাঠাকইন-রামচন্দ্রপুর সড়কের পাশে তবারক আলীর বাড়ির সামনে ফেলে পালিয়ে যায় সে। ১০ সেপ্টেম্বর রাতে ওই লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে ১৬ সেপ্টেম্বর রোববার সন্ধ্যায় রামচন্দ্রপুর গ্রামের ওহাব উল্লাহ’র দুই পুত্রবধূ (শফিকের ভাবী) দিপা বেগম ও লাভলী বেগমকে আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দু’দিন পরে মির্জাপুরের গোড়াই ইউনিয়নের সোহাগপাড়া থেকে শফিককে ও সন্ধ্যায় গাজীপুর থেকে তার স্ত্রী সোনালী আক্তার হ্যাপীকে আটক করে পুলিশ। পরে আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্ধীতে রুমিকে হত্যার কথা স্বীকার করে পূর্বে একটি ধর্ষণ ও একটি হত্যা মামলার পলাতক আসামী শফিক।