রবিবার ● ২১ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » কৃষি » জয়পুরহাটের চিচিংগা যাচ্ছে এখন দেশের বিভিন্ন জেলায়
জয়পুরহাটের চিচিংগা যাচ্ছে এখন দেশের বিভিন্ন জেলায়
জয়পুরহাট প্রতিনিধি :: (৬ কার্তিক ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬.০৭মি) জয়পুরহাটের চিচিংগা যাচ্ছে এখন দেশের বিভিন্ন জেলায় ধান চাষের উপযোগী এবং বন্যার পানি থেকে মুক্ত উচু জমিতে চিচিংগা চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার উত্তর-ভাবকি গ্রামের কৃষকরা।
এটি গ্রীষ্মকালীন সময়ের একটি উপাদেয় সবজি। এ চিচিংগার মধ্যে মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী ক্যারোটিন ও ক্যালসিয়াম রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। উচ্চফলনশীল জাতের এ চিচিংগা সবজি চাষে খরচও কম পড়ে। স্বল্প সময়ের ফসল চিচিংগার চাষ করে বর্তমানে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কালাই উপজেলার উত্তর-ভাবকি গ্রামের কৃষকরা। চিচিংগা চাষে লাভবান হওয়ায় পরিবারেও ফিরে এসেছে সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্য।
সরেজমিনে জানা গেছে, কালাই উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের উত্তর-ভাবকি গ্রামের কৃষকেরা গত কয়েক বছর ধরে অপ্রচলিত সবজি জাতীয় ফসল চিচিংগা চাষ করে আসছে। জমিতে লতায় লতায় চিচিংগাগুলো দোল খাচ্ছে। কম খরচে স্বল্প সময়ে অধিক লাভ জনক এ সবজি চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ায় সেখানকার অধিকাংশ পরিবারে ফিরে এসেছে সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্য। চিচিংগাগুলো জয়পুরহাট জেলাসহ বাইরের বিভিন্ন এলাকাতেও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। পাইকারেরা এসে জমি থেকেই চিচিংগা কিনে নিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলাতে বিক্রি করে থাকেন। জমি থেকে এ চিচিংগা বিক্রি হওয়ায় পরিবহন খরচ ও সময় দু‘টোয় সাশ্রয় হচ্ছে এলাকার কৃষকদের। ফলে বেশি লাভের আশায় ধান, আলু চাষের পরিবর্তে উচু জমিতে অন্যান্য সবজি জাতীয় ফসলের পাশাপশি অপ্রচলিত চিচিংগা চাষ বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছর এ গ্রামের আশেপাশে প্রায় ৩৮ থেকে ৪০ বিঘা উচু জমিতে চিচিংগার চাষ হয়েছে।
কালাই উপজেলার উত্তর-ভাবকি গ্রামের সফল চিচিংগা চাষি আলম ফকির সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, গত বছর প্রাথমিকভাবে ৩০ শতক জমিতে স্বল্প মেয়াদী এ চিচিংগা চাষ করে লাভবান হন। সেই বছরে খরচ বাদে প্রায়৯০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। চলতি বছর ৫০ শতক জমিতে চিচিংগা চাষ করেছি। এবার চিচিংগা চাষের জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে প্রায় ৭০ হাজার টাকার চিচিংগা বিক্রি হয়েছে। আগামী প্রায় ৬ সপ্তাহ ঐ চিচিংগা বিক্রি হবে। বর্তমান পাইকারী বাজারে চিচিংগার দাম ভালো হওয়ায় এবার সব খরচ বাদে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা লাভ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। আলম ফকিরের সফলতা দেখে এ এলাকর আনোয়ার হোসেন, এনামুল কাজিসহ অনেকে এখন চিচিংগা চাষ করছেন।
কালাই উপজেলার বেগুন গ্রামের চিচিংগার পাইকারী ব্যবসায়ী শেখ ফরিদ সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, এ এলাকর উৎপাদিত চিচিংগাগুলোর গুণগত মান খুব ভাল। সে কারণে এখানকার চিচিংগা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চাহিদা অনেক বেশি। চাষিদের জমি থেকে বর্তমান বাজার দরে প্রতি মণ চিচিংগা প্রায় ৮৪০ থেকে ৮৮০ টাকা পর্যন্ত পাইকারী বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, চিচিংগা চাষের জন্য কৃষকদের উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। বর্তমান বাজারে চিচিংগা চাহিদা ও মূল্য ভালো থাকায় দিন দিন চিচিংগা সবজি চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও জানান তিনি।