বুধবার ● ২৪ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » রাউজানে বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে এক বৃদ্ধর আত্মহত্যা
রাউজানে বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে এক বৃদ্ধর আত্মহত্যা
অামির হামজা রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :: (৯ কার্তিক ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩.০৭মি) একজন সন্তানের কাছে পিতা মাতার বেশি কিছু চাওয়ার থাকে না। থাকে শেষ বয়সে আদরের সন্তানের পাশে থেকে একটু সুখ-দুঃখ ভাগ করার ইচ্ছা। আর এ ইচ্ছা নিয়েই প্রত্যেক মা-বাবা প্রহর গুণতে থাকেন দিবা-রজনী। কিন্তু অনেক সন্তানের বাবার আশ্রয় না হয়ে আশ্রয় হয় কোনো এক বৃদ্ধাশ্রমে। শেষ বয়সে নাতি-নাতনিদের সঙ্গে চাই বাকি জীবন টুকু কাটিয়ে দিতে। সারা জীবন যে ঘরে ছিলেন বাকি টুকু সময় ঘরের কোনো অল্প স্থানে জনমদুংখী মা-বাবার এতটুকুও জায়গা মিলে না। একজন বাবা মাকে নিজের অাপন সন্তারা ছুঁড়ে দেয়া প্রবীণ নিবাসনামীয় নরকে। তবুও ছেলে মেয়ের প্রতি তাদের ভালোবাসা বৃদ্ধাশ্রমেও।
সারা জীবনের কষ্টকরা ধন সম্পদ বিনিয়োগ করেছেন সন্তানের জন্য, নিজের জন্য রাখেননি কিছুই। কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের কাছ থেকে তাদের শেষ অাশ্রয় হয় বৃদ্ধাশ্রম।
কথা বলছি রাউজানের গতকাল মঙ্গলবার রাতে নোয়াপাড়া আমেনা-বশর বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে এক বৃদ্ধ বাবা আত্মহত্যা কথা। সেই উপজেলা হলদিয়া ইউনিয়নের আত্মহত্যাকারী আবুল হাশেম। খবর নিয়ে জানাগেছে, হাশেমের তার তিন ছেলে অাছেন, একজন মাদ্রাসার পড়ালেখা করেন, অপর দুই জন দুবাই অাছেন, এর পরেও বাবা কেন গত ২০১৪ সালের ১০ই নভেম্বর নিজের পরিবার ছেড়ে বৃদ্ধাশ্রমে অাশ্রয় হয়! গত ৪বছরে কেউ তার খোঁজ খবর নেন নি। অাবুল হাশেম কে অনেক সময় তার বোন দেখতে অাসলেও দীর্ঘ চার বছর ধরে সে এখানে অবস্থান করলেও তার বোন ছাড়া স্ত্রী-সন্তান কেউ তাকে দেখতে আসে নি।
হয়তো নিজের কাছে রাখার প্রয়োজন বোধ করছেন না, বা বোঝা মনে করছেন। হয় নিজেই পাঠিয়ে দিচ্ছেন বৃদ্ধাশ্রমে, নয়ত অবহেলা দুর্ব্যবহার করে এমন অবস্থার সৃষ্টি করছেন যেন তাদের পিতা-মাতা নিজেরাই সরে যান তার সাধের পরিবার থেকে। তবে এমন সন্তানের সংখ্যা অামাদের দেশে অসংখ্য। বৃদ্ধ বয়সে এসে নিজের সন্তানের দ্বারাই অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হয়ে বৃদ্ধাশ্রমের স্থায়ী বাসিন্দা হতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক বাবা মা। অনেক সন্তান বা আত্মীয়-স্বজন আর তাদের কোনো খবরও নেন না।
এদিকে আবুল হাশেম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস, অাই জাবেদ মিয়া বলেন, অাশ্রমের সেবক প্রদীপ দত্ত রাত তার বিছানায় খাবার নিয়ে দেখেন গলায় কাপড় পেছানো অবস্থায় তার জানালার সাথে ঝুলে আছে তার দেহ। এসময় তার কক্ষে থাকা নুরুল আমিন, মোহাম্মদ হোসেন নামাজ পড়েন এবং দুলাল দাশ নামের একজন খাওয়ার খেতে যাওয়ার পর সে আত্মহত্যা করেছে বলে মনে করেন। ধারণা করেন বৃদ্ধ হাসেম শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।