মঙ্গলবার ● ৩০ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » দীঘিনালা ইউএনও‘র বদলী ঠেকাতে ফেসবুক থেকে রাজপথে
দীঘিনালা ইউএনও‘র বদলী ঠেকাতে ফেসবুক থেকে রাজপথে
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: (১৫ কার্তিক ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ৮.৩৩মি) খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ শহিদুল ইসলামের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ‘ফেসবুক থেকে রাজপথে’ নেমেছে দীঘিনালা‘র বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষ। গতকাল সোমবার সন্ধ্যার দিকে ইউএনও‘র বদলীর আদেশ দীঘিনালায় এসে পৌছলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। তারই রেশ ধরে আজ মঙ্গলবার ৩০ অক্টোবর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজপথে প্রতিবাদের ঝড় তোলে দীঘিনালাবাসী। দাবী একটাই ‘ বদলী ঠেকাও’।সরকারের সিদ্ধান্ত এই আদেশ বাতিলের দাবীতে দীঘিনালা সরকারি ডিগ্রী কলেজ মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে দীঘিনালাবাসী। বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজনীতিক, শিক্ষক, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষার্থী ও দিনমজুরসহ শতশত মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। ইউএনও’র বদলীর আদেশ বাতিলের দাবীতে বিভিন্ন শ্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড ও ফেস্টুন বহন করে তারা। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বদলীর আদেশ প্রত্যাহার করা না হলে দীঘিনালাকে অচল করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয় বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে। পাহাড়ী-বাঙালির সম্প্রীতি রক্ষায় ইউএনও নিরলসভাবে কাজ করেছেন।
এসময় দীঘিনালার উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। দীঘিনালা সরকারি ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক মো. দুলাল হোসেন, দীঘিনালা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম রাজু ও বাজার চৌধুরী জেসমিন চাকমা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
জানাগেছে, ২০১৭সালের ২০ ফেব্রুয়ারি দীঘিনালা উপজেলা নিবার্হী কমকর্তা হিসেবে যোগদানের পর থেকে একের পর এক জনবান্ধব উদ্যোগে বদলে যায় দুর্গম দীঘিনালা উপজেলার দৃশ্যপট। প্রায় দেড় বছরে তিনি একজন প্রশাসক নয়, নিজেকে ‘দীঘিনালাবাসীর একজন’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। প্রশাসনিক কাজে নিজের কর্মদক্ষতার পরিচয়, উপজেলাবাসীর যে কোন দুর্যোগে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া, জীবনের ঝুকি নিয়ে বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ানো, স্ট্রীট লাইটের আলোয় আলোকিত করেছেন অন্ধকারাচ্ছন্ন দূরিকরণ, জনগণের সাথে একাকার হয়ে রাস্তাঘাট পরিস্কার করা, শিক্ষার মানোন্নয়নে অবিরাম ছুটে চলা, চারটি বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল চালু করণ, উপজেলা প্রশাসনের পরিত্যাক্ত জায়গায় ‘স্বপ্নযাত্রা’ নামে নান্দনিক রেস্তোরাঁ চালুর মাধ্যমে উপজেলা চত্বরকে দৃষ্টিনন্দন করণ, দীঘিনালা সরকারি কলেজ মোড়ে গড়ে তুলেছেন ‘বঙ্গবন্ধু চত্বর’ স্থাপন, মাদকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় যুব সমাজকে নিয়ে বিকালে ফুটবল আর রাঁতে ব্যাডমিন্টন খালার আয়োজন গুণি এই ইউএনও‘র হাত ধরেই এসেছে।
ইউএনও শেখ শহিদুল ইসলামের বদলী হলে দীঘিনালার উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ব্যাঘাত ঘটবে বলে মনে করেন সাংবাদিক সমির মল্লিক। তিনি বলেন ‘একজন দক্ষ ও কর্মঠ এবং সৃজনশীল চিন্তার অধিকারী ছিলেন ইউএনও শেখ শহিদুল ইসলাম। যে কারণে দীঘিনালাবাসী তাঁর বদলী মানতে নারাজ।
দীঘিনালার উন্নয়নে ইউএনও শেখ শহিদুল ইসলামের ব্যাপক পরিকল্পনা ছিল উল্লেখ করে দীঘিনালা সরকারী কলেজের প্রভাষক মোঃ দুলাল হোসেন লিখেছেন, সড়কের দু‘পাশে ফুলের বাগান সৃজন ছাড়াও সমৃদ্ধ গণপাঠাগার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ছিল।
এমন আদেশ মানতে নারাজ স্থানীয় সাংবাদিক জাকির হোসেন বলেন, ‘বন্যা দূর্গতদের বাঁচাতে পাকা সড়ক ঠেলে নৌকা নিয়ে যে ইউএনও বন্যাদুর্গতদের বাচাঁতে ছুটে যান তাঁর বদলির আদেশ দীঘিনালাবাসী মানেনা। এ বদলী প্রতিহত করা হবে।
প্রসঙ্গত, পানছড়ি উপজেলার সাবেক ইএনও মুহাম্মদ আবুল হাসেমও ছিলেন ঠিক এমনই। যিনি পদান্নতি পেয়ে বর্তমানে পানছড়ি ছেড়ে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশসকের কার্যলয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হিসাবে কর্মরত আছেন।